শিক্ষার নামে আমাদের আত্মধ্বংসের প্রতিযোগিতা
Advertisements

“প্রতিযোগিতামূলক শিক্ষায় ভালো করা বলতে বুঝায়, সবগুলা গাঁধা ছেড়ে দিলে একটা ফার্স্ট হয়”

–দার্শনিক নাসিম লস্কর।

‘আইএম জিপিএ ফাইভ’ এর কৌতুককর অভিজ্ঞতার কথা নিশ্চয় আপনাদের মনে আছে? আজকে সেই কৌতুক নয়, আমরা শিক্ষা ও জ্ঞানচর্চার বিষয় নিয়ে কথা বলব। দুঃখজনক হলেও সত্য আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা অন্যান্য যেইসব রোগে আক্রান্ত তার মধ্যে অন্যতম হলো জিপিএ-৫ রোগ। একটা অতি কমন চিত্র আমাদের সমাজে লক্ষ করা যায়, মেট্রিকে বা ইন্টারে জিপিএ-৫ পাওয়ার পরে মিষ্টির নহর বয়ে যায় কিন্তু সেই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যায়লে ভর্তি হতে গিয়ে দেখে মিষ্টি যেমন স্বাদের ছিল জিবন তেমন মিষ্টিময় না। এই ভাল রেজাল্ট কোনভাবেই তাকে হতাশামুক্ত করতে পারে না। অনেক জিপিএ-৫ অলা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় লজ্জাজনক ফল উপহার দেয়। কাজেই ভাল ছাত্র মানেই জিপিএ-৫ এই মিথ ভাঙা দরকার। অন্যদিকে কিছু মিডিয়া গরীবের ছেলে-মেয়ের জিপিএ-৫ পাওয়ার গল্প এতো কাঁদো-কাঁদো ভাবে উপস্থাপন করে, এর ফলে জনমনে শিক্ষা মানেই জিপিএ-৫ এমন একটা ধারণা তৈরি হয়ে গিয়েছে। বলাই বাহুল্য এর সাথে সুশিক্ষিত হওয়ার বা জ্ঞান চর্চার কোন সম্পর্ক নাই।

বাংলাদেশে শিক্ষা একটা প্রতারণার নাম। শিক্ষা নামে যা আমরা চিনি তা বইয়ে থাকে না—এই দেশে এইটা কিনতে হয়। গরিব হইলে কিনতে কষ্ট হয়, ধনী হলে একটু সহজেই কেনা যায়। শিক্ষা হইল জাতে ওঠার লিফ্ট, ভোগের জীবনে প্রবেশের দরজা। এর সাথে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ ও মানুষ তৈরির কোনো সম্পর্ক তো নাই বরং স্কিলড-লেবারও প্রডিউস করতে পারছে না। শিক্ষকদের অশিক্ষা এখন ওপেনসিক্রেট বিষয়। এই অবস্থায় ‘লিটনের ফ্ল্যাটে’ বান্ধবী নিয়ে ডেটিং করা পোলাপাইন হিসেবে যাদের ইমেজটা দাঁড়ায়ে গেছিল, যারা ‘ভাক্কাস’ কোর্সের জন্য বাপের পকেট কাটত, তারা এখন প্রাইভেটে পড়তে পারছে। এবং বাপের টাকা বাঁচাতে সরকারের ভ্যাট ধার্যকরার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে। সরকার প্রথমে হার্ডলাইনে গিয়েছিল। এটা হইছে ভুল। মনে করছে গুলি করলে ফার্মের মুরগি খামারে ফিরে যাবে। কিন্তু তা হয় নাই। পোলাপাইন আন্দোলন জমায়ে ফেলছিল। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পোলাপাইনের আবার আলগা এলিটিজম আছে। কথায় কথায় বলবে ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, ০৭ সালের সেনাবিরোধী এবং সর্বশেষ ১৩ সালে শাহবাগে চেতনার উৎসবের কথা। আন্দোলন ও দেশ গড়ার সূতিকাগার হিসেবে নিজেদের জাস্টিফাই করত। বিশ্ববিদ্যালয়ে পইড়া নিজেরে জাতির অভিভাবক মনে করত। তাদের ফাঁপরের কাছে প্রাইভেটের পোলাপাইন অসহায় হয়ে যাইত। ফলে এখন এইটা একটু হাল্কা ব্যালেন্স হইছে প্রাইভেট ইউনির ছেলেমেয়েরাও আন্দোলন করে। তবে এইসব আন্দোলন বেশির ভাগই নিজেদের স্বার্থের জন্য। দেশ-জাতি নিয়ে তাদের চিন্তা হলো, আগে নিজে একটা পজিশনে যায়া লই। পরে দেখা যাবে।

আমাদের শিক্ষিতরা সাহেব হইয়া কালোচামড়ার ইংরেজ হয়। কৃষক ও কামলার জীবনকে ঘৃণা করে। মানুষকে অবহেলা করে। শ্রমশোষক হয়। কোনো রিক্সাওয়ালা বা পাটচাষী দুর্নীতিবাজ হইতে পারে না। বাট, আপনি কয়টা সার্টিফিকেটের জোরে তারে আন্ডার মাইন করেন। অথচ তার মধ্যে হাজার বছরের কৌমের জ্ঞান ধারাবাহিকভাবে জারি আছে। সে জানে কাইটা গেলে কোন গাছের পাতার রস দিলে সেটা ঠিক হয়ে যাবে। কখন বৃষ্টি হবে সে আকাশের দিকে তাকিয়ে আন্দাজ করতে পারে। আপনার নিকৃষ্ট বিদ্যার অহং তারে শোষণ করে দিনে দিনে প্রান্তে ঠেলে দেয়। পরে এরাও ধান চাইল বিক্রি করে পোলারে সাহেব বানাতে চায়। এভাবে দিন দিন মধ্যবিত্ত শ্রেণীর পরিসর বড় হচ্ছে। আর অপরাধের ক্রিয়েটিভ সব ধরনও জারি হচ্ছে

শিক্ষা জিনিসটা কী—এইটা নিয়ে আমাদের এখানে কোনো কথা নাই। আমাদের এখানে এডুকেশনটা হইল ভোগাস। তারুণ্যের জন্য অভিশাপ। এরা শিক্ষিত হয় আর জনবিচ্ছিন্ন হয়। শিক্ষা হইছে ভাগ্যপরির্বতন এর কুত্তা দৌড়ের দমের নাম। ভালোভাবে পড়া-লেখা করা, ভালো চাকরি করা, সুন্দরী মেয়ে বিয়ে করা, চিকন চাইলের ভাত খাওয়া, ২টা বাচ্চা নেওয়া, ডায়বেটিক কন্ট্রোল করতে হাঁটা, বড় বড় ডাক্তার সব সময় লাইনে লাগাইয়া রাখা—এমনই একটা ভোগসর্বস্ব মধ্যবিত্তময় জীবনের জন্যই তো এরা এত কষ্ট করে। শিক্ষার এন্টার প্রসেসটা জীবনের প্রতি একটা নিষ্ঠুরতা ছাড়া আর কিছু না। যাই হোক ভাবের কথা কইলে তো আর চলবে না এখন। কাজের কথাও কইতে হবে। আমাদের এখানে শিক্ষার প্রধান চরিত্র হচ্ছে দুর্নীতি প্রবণতা।

প্রশ্নপত্র ফাঁস ডিজিটাল সময়ে এসে ব্যাপকহারে হইছে। এই ফাঁসের সুবিধা নিতে পারছে অনেক লোক একই সাথে ফেসবুকের কারণে। শুধু শিক্ষামন্ত্রীর কথাতেই দেশের শিক্ষার উন্নতি আকাশে উঠতে চলেছে। শিক্ষা আকাশে না উঠলেও শিক্ষার্থীরা শিক্ষার নামে মাটি থেকে চিরবিচ্ছিন্ন হয়ে বাতাসে উড়তে শুরু করার স্বপ্ন দেখতে থাকে। এর কারণটা হলো, আমাদের শিক্ষার পুরা কাঠামোটাই কলোনিয়াল রয়ে গেছে। ইংরেজরা যেমন কেরানী তৈরির জন্য এইখানে এক ধরণের শিক্ষাকে প্রমোট করেছিল –সেই ধারাই চলছে। এখন বরং স্বাধীনতার সুবিধা নিয়ে চোরামি করে ভাল কেরানীও আর তৈরি হচ্ছে না। মামা-খালু আর রাজনৈতিক দলের টিকেট থাকলে কেরানী হতে এখন আর ভাল শিক্ষার দরকার নাই। সেই দিক থেকে অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে। এখন তৈরি হচ্ছে এক হাওয়াই-ফাঁকা জেনারেশন। অন্যদিকে কোন শিক্ষার আলাপেই জ্ঞান চর্চার প্রশ্নটি আর হাজির নাই। পুরাটাই ধানাইপানাই। এই অবস্থা তৈরির পেছনে তথাকথিত এডুকেশনের একটা বড় ভূমিকা আছে। এগুলা জটিল জিনিস বিস্তারিত লেখলে ভালো হইত। আজ আর তা লিখছি না।

করপোরেট ক্যাপিটালের যুগে যোগ্য লেবার তৈরি করার দায়িত্ব নিছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আমাদের এখানে যোগ্য ক্যাডার তৈরি হচ্ছে। ধর্ষণে ১০০ করা, ভিক্ষুকের কাছ থেকেও চাঁদা নেওয়া এমন সব যোগ্যতা এরা অর্জন করতে পারছে পুলাপান। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে রাজনীতির নামে পুলাপান যেধরনের পশুর শাসন জারি রাখে তাতে একটা ছেলে পড়া-লেখা শেষ করে চিরদিনের জন্য নৈতিক ভাবে পঙ্গু হয়ে যায়। সেও তাঁর নিজের লোকদের দৌড়ের উপর রাখাটাকেই টিকে থাকা মনে করে।

পাঠ্যপুস্তকে হাইপার সেকুলার প্রবণতা নীতিহীন আধুনিক জেনারেশন তৈরিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। আধা কমিউনিস্ট ও সরকারী বামদের অশিক্ষা এবং ইউরোপমনস্কতা বর্তমান কারিকুলামকে এক জগাখিচুড়িতে পরিণত করেছে

টেম্পোরাল স্বার্থবাদী চৈতন্য থেকে ঝাঁপাইয়া পড়া ও কোন কিছু হাসিল করা আর একটি জনগোষ্ঠীর ঐতিহাসিক পরিগঠন ও মুক্তির জন্য নিজেকে তৈরি করা, লড়াইয়ের ময়দান প্রস্তুত করা, এর জন্য নিজেকে নিয়োজিত করা, নিজেকে ‘রাজনৈতিক’ করে গড়ে তোলা—এর মধ্যে আকাশ-পাতাল ব্যবধান আছে। আমি ভালো থাকব, ভালো খাবো, সুশীল হয়ে চলব। সবাই আমারে খুব শিক্ষিত ও রুচিবান মনে করবে —এমন কুচিন্তাই শিক্ষিতদের আত্মরতিমগ্ন পশুতে পরিণত করছে।

এই সরকারের আমলে শিক্ষা ব্যবস্থার চেতনাগত রুপান্তর ঘটেছে। পাঠ্যপুস্তকে হাইপার সেকুলার প্রবণতা নীতিহীন আধুনিক জেনারেশন তৈরিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। আধা কমিউনিস্ট ও সরকারী বামদের অশিক্ষা এবং ইউরোপমনস্কতা বর্তমান কারিকুলামকে এক জগাখিচুড়িতে পরিণত করেছে। পাঠ্যপুস্তকে ইতিহাসের দলীয় বয়ানকে সংযুক্ত করার মধ্য দিয়ে বৈধ উপায়ে জারি হওয়া অবৈধ শাসনকাঠামোকে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত হিসাবে বাংলাদেশের জনগনের উপর চাপিয়ে দেওয়ার আয়োজন জারি করা হয়েছ।

এইসব পুলাপান শিক্ষার মধ্যদিয়ে কিছু মূলধারার রুচি রপ্ত করে থাকে। জনবিরোধী শিক্ষক-বুদ্ধিজিবিরা তাদের রোল মডেল হয়। ফলে তাদের মধ্যেও তৈরি হয় প্রবল কলোনিয়াল হীনমন্যতা –এই হীনমন্যতা ঢাকার জন্য সার্টিফিকেটের উপর আরও গুরুত্ব বেড়ে যায়। নিজের জিবনের স্বাধীন কোন প্রকল্প সে নিতে পারে না। সুশীল ও মধ্যবিত্ত একটা খোপে নিজেকে মানিয়ে নেয়াই তার কাছে আদর্শ জিবন। সে যদি কামলা বা মেথরপট্টি থেকেও এসে থাকে শিক্ষার নামে এই কলোনিয়াল জোয়াল কাঁধে তুলে নিয়ে সে হয়ে যায় মধ্যবিত্ত। জনবিচ্ছিন্ন। এটাই তার বড় হওয়া, সফল হওয়া। সেই ভাবে শিক্ষা ব্যবস্থার দৌড়ের মধ্য দিয় সমাজের শ্রেণী ও  বিভেদ জারি থাকছে। অভিভাবকদের মধ্যে যাদের পয়সা আছে এরা সন্তান ছোট থাকতেই তার পিছনে ব্যাপক ইনভেস্ট শুরু করে দেয়। অতি দামি স্কুলে পড়ানো, বাসায় মাস্টার রাখা ও বিদেশে পাঠিয়ে দেয়ার মধ্য দিয়ে সন্তানের শিক্ষিত হওয়ার পথ পাকা করা হয়। এর মধ্যে খোদ শিক্ষা বা জ্ঞান চর্চার প্রশ্নটির কোন খবর নাই।

শুধু শিক্ষা কেন আমাদের দেশে গোটা প্রক্রিয়াটাই একটা ফাঁপরবাজি ও ভাওতাবাজিতে পরিণত হয়েছে। সরকারী ভাবে শিক্ষার উন্নতি জাহিরের জন্য বছর বছর জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের সংখ্যা বাড়ানোর সুফল রাজনৈতিক নেতাদের কথা-বার্তাতে ফলতে থাকে।

বাংলাদেশে একটা নৈতিক সংকট চলছে। চেতনার নামে সন্ত্রাস। আর এর ক্ষেত্র তৈরি করেছে শিক্ষিত-সুশীল-ধান্দাবাজ এনজিওবাজরা। গণতন্ত্রের নামে গণধর্ষণ সংস্কৃতি চালু হয়েছে। এমন একটি অনৈতিক পারভার্সিভ শাসন কাঠামোর বিরুদ্ধে যে কথা বলতে পারবে না, যেকোনো প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারবে না, তারে শিক্ষিত তো দূরের কথা; একটা গাধার সাথেও তুলনা করা যাবে না। কারণ, গাধা অনেক পরিশ্রম করে।

শিক্ষার জন্য যে ধরণের মানবিক কান্ডজ্ঞান বিকশিত করা দরকার তা না করে প্রতিযোগিতার মধ্যে দিয়ে বৈষম্য বাড়ে। ভাইয়ে ভাইয়ে খুনাখুশির পরিবেশ তৈরি হয়। আমার কথা শুনে যেন কেউ মনে করবেন না জিপিএ–৫ যারা পাইছে এরা মনে হয় খুব বড় অপরাধ করে ফেলছে। আমি বলছি টোটাল এডুকেশনের প্রবণতাটার কথা। এটা জঘন্য। এটা মনবিনাশী। রিদয়ে শান্তি নষ্ট করে। আধুনিক হওয়ার ও চকচকা জিবনের এমন প্রতিযোগিতার মধ্যে প্রজ্ঞাময় জিবনের আরাম আমাদের হাত ছাড়া হয়ে যায়

জ্ঞান ও ব্যবহারবাদী বা কনজিউমার এলিটিস্ট এডুকেশনপ্রাপ্তরা বাংলাদেশের ৩৯ ভাগ নিরক্ষর মানুষের সাথে সদা-সর্বদা নিমকহারামি করছে। এডুকেশন অর্জন একটা কুত্তার কামড়া-কামড়ি। প্রি-স্কুল থেকে এই কুত্তাদৌড় শুরু হয়। শিক্ষা আত্মধ্বংসী হয়ে উঠেছে, হিউম্যান ডিগনিটিকে কিল কইরা ফেলে, এটা একটা নষ্ট প্রতিযোগিতার বিষয়। কিন্তু শিক্ষা তো জ্ঞানগত বিষয় হওয়ার কথা ছিল।

শিক্ষা নিয়ে কথা উঠলে আমার বন্ধুরা আমার একটা পুরানা কমেন্ট খুব কোট করেন। আমিও এটা পছন্দ করা শুরু করছি। সেটা এখানেও দিচ্ছি,

আমার পজিশন হলো, আই হেইট দিস এডুকেশন। শিক্ষিতরা সাহেব হইয়া কালোচামড়ার ইংরেজ হয়। কৃষক কামলা জীবনকে ঘৃণা করে। মানুষকে অবহেলা করে। শ্রমশোষক হয়। কোনো রিক্সাওয়ালা বা পাটচাষী দুর্নীতিবাজ হইতে পারে না। বাট, আপনি কয়টা সার্টিফিকেটের জোরে তারে আন্ডার মাইন করেন। অথচ তার মধ্যে হাজার বছরের কৌমের জ্ঞান ধারাবাহিকভাবে জারি আছে। সে জানে কাইটা গেলে কোন গাছের পাতার রস দিলে সেটা ঠিক হয়ে যাবে। কখন বৃষ্টি হবে সে আকাশের দিকে তাকিয়ে আন্দাজ করতে পারে। আপনার নিকৃষ্ট বিদ্যার অহং তারে শোষণ করে দিনে দিনে প্রান্তে ঠেলে দেয়। পরে এরাও ধান চাইল বিক্রি করে পোলারে সাহেব বানাতে চায়। এভাবে দিন দিন মধ্যবিত্ত শ্রেণীর পরিসর বড় হচ্ছে। আর অপরাধের ক্রিয়েটিভ সব ধরনও জারি হচ্ছে।

শুরুতে আমার ওস্তাদ নাসিম লস্করের যে কথাটা কোট করেছি তার দিকে একটু নজর ফিরাতে বলে শেষ করব। নাসিম লস্কর কোন তথাকথিত শিক্ষিত লোক ছিলেন না। আমি দুনিয়ার অনেক বিখ্যাত চিন্তকের সাথে মিশেছি অল্প বয়স থেকে। কিন্তু উনার মতো থিংকার কমই পাইছি। শিক্ষার জন্য যে ধরণের মানবিক কান্ডজ্ঞান বিকশিত করা দরকার তা না করে প্রতিযোগিতার মধ্যে দিয়ে বৈষম্য বাড়ে। ভাইয়ে ভাইয়ে খুনাখুশির পরিবেশ তৈরি হয়। আমার কথা শুনে যেন কেউ মনে করবেন না জিপিএ-৫ যারা পাইছে এরা মনে হয় খুব বড় অপরাধ করে ফেলছে। আমি বলছি টোটাল এডুকেশনের প্রবণতাটার কথা। এটা জঘন্য। এটা মনবিনাশী। রিদয়ে শান্তি নষ্ট করে। আধুনিক হওয়ার ও চকচকা জিবনের এমন প্রতিযোগিতার মধ্যে প্রজ্ঞাময় জিবনের আরাম আমাদের হাত ছাড়া হয়ে যায়। শেষ করি নন্দির কথা দিয়ে।

বিখ্যাত চিন্তক, আমার অতি প্রিয়জন, শ্রদ্ধেয় আশীষ নন্দির মতো আমিও মনে করি, কলোনিয়াল ভারতবর্ষে এডুকেশন তারুণ্যের জন্য অভিশাপ হয়ে হাজির হইছে। এডুকেশন ইজ ভোগাস। যেমন ভোগাস জিপিএ ফাইভ।

 

Advertisements