রোহিঙ্গাদের যুক্তরাষ্ট্রে নেয়ার ঘোষণা
Advertisements

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দমন–পীড়নের মুখে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের যুক্তরাষ্ট্রে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। রোহিঙ্গাদের ওপর দমন অভিযানের পাঁচ বছর পূর্তিতে দেয়া এক বিবৃতিতে তিনি এ ঘোষণা দেন।

ব্লিঙ্কেন বলেন, আন্তর্জাতিক সমন্বিত মানবিক প্রতিক্রিয়ার অপরিহার্য অংশ হিসেবে আমরা বাংলাদেশসহ এ অঞ্চল থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পুনর্বাসন উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াতে কাজ করছি, যেন তারা যুক্তরাষ্ট্রে নিজেদের জীবন পুনর্গঠিত করতে পারে।

বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পাঁচ বছর আগে বার্মার (মিয়ানমার) সামরিক বাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর এক নৃশংস অভিযান শুরু করেছিলো। তারা গ্রামগুলো ধ্বংস করে, ধর্ষণ, নির্যাতনসহ বৃহৎ আকারে সহিংসতা ঘটিয়েছিলো এবং হাজার হাজার রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশুকে হত্যা করেছিলো। এর ফলে ৭ লাখ ৪০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা তাদের বাড়িঘর ছেড়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়।

ব্লিঙ্কেন বলেন, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে একই বাহিনীর অনেকে মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ অন্ধকারাচ্ছন্ন করার চেষ্টায় জনগণের ওপর দমন, নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে। গণতন্ত্রপন্থি ও বিরোধী নেতাদের সাম্প্রতিক মৃত্যুদণ্ড মিয়ানমারের জনগণের জীবনের প্রতি সেনাবাহিনীর চরম অবহেলার সবশেষ উদাহরণ মাত্র। সহিংসতার বৃদ্ধি এর মানবিক সংকটকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে, বিশেষ করে রোহিঙ্গাসহ জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গাসহ মিয়ানমারের সব জনগণের ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতার অগ্রগতির জন্য যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা মিয়ানমারের স্বাধীন তদন্ত প্রক্রিয়া, আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গাম্বিয়ার মামলা ও মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর অপরাধ সংক্রান্ত মামলার বিচারে বিশ্বজুড়ে বিশ্বাসযোগ্য আদালতগুলোর যে এখতিয়ার রয়েছে, তাতে সমর্থন করছি।

তিনি বলেন, গত মার্চ মাসে আমি ইউনাইটেড স্টেটস হলোকাস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়ামে বক্তৃতায় বলেছিলাম, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নৃশংসতা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ ও গণহত্যার সামিল।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে আগস্টে রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে সাত লাখের অধিক রোহিঙ্গা পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এই রোহিঙ্গাদের স্বভূমিতে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি হলেও এখনো তা কার্যকর হয়নি। আগে থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে আছে চার লাখের বেশি রোহিঙ্গা। সব মিলিয়ে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গার ভার বহন করছে বাংলাদেশ।

Advertisements