মৃতরাও ফিরলেন প্রাণ নিয়ে
Advertisements

পুলিশ ও পরিবারের চোখে মৃত অথচ ফিরে আসছেন প্রাণ নিয়ে। আশ্চর্যের বিষয় হলো কথিত মৃতদের হত্যার দায় স্বীকারও করানো হচ্ছে আসামিদের কাছ থেকে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী বলছে, ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করে প্রশাসনকে ব্যবহার করছে স্বার্থান্বেষী মহল। যদিও এক্ষেত্রে পুলিশ-প্রশাসনের গাফিলতি দেখছেন আইনজীবীরা।

প্ল্যানচেটে ফিরে আসেন মৃত আত্মা। এ যেন তারচেয়েও বেশি রহস্যময়। হত্যার শিকার ব্যক্তিরা পরিবার ও পুলিশের কাছে মৃত। সম্প্রতি এমন চারজন ফিরেছেন সশরীরে প্রাণ নিয়ে।

কথিত মৃতরা ফিরে আসায় তাদের পরিবারে স্বস্তি ফিরলেও ঘোর অমানিশায় ডুবছেন আসামিদের পরিবার। জীবিত ফেরারা বলছেন, তাদের হত্যার দায় নিয়ে অন্যরা জেল খেটেছেন এটা তারা জানতেন না।

মৃত ঘোষিত হওয়ার পর ফিরে আসা এক নারী বলেন, এখানে আসার পর শুনছি ওদের গ্রেফতার করা হয়েছে এবং ওরা এই স্বীকারোক্তি দিয়েছে।

মৃত ঘোষিত এক যুবক বলেন, আমি এখানে আসার পরে শুনি এই ঘটনা।

মৃত ঘোষিত আরেকজন বলেন, আমি যখন বের হয়ে চলে যাই এরা কি করছে না করছে আমি কিছু জানি না। এরপর নাকি পুলিশে ধরছে তারপর এরা নাকি বলছে যে আমাকে মারছে।’

তাহলে কেন আসামিরা হত্যার দায় স্বীকার করলো? আসামি ও তার পরিবার বলছেন, রিমান্ডে ভয় দেখানোয় কথিত হত্যার দায় স্বীকার করেছেন তারা।

একজন ভুক্তভোগী আসামি বলেন, ‘আমাদের বলেছে, তোরা বলবি লঞ্চে নিচে নিয়ে গিয়ে রুটি কলা খাওয়াইছি, তারপর রাত ১২ টার পর প্রস্রাব করার নাম করে উপরে নিয়ে এসে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছি।’

অন্য একজন ভুক্তভোগী আসামি বলেন, ‘আমাদরে বলেছে, এখানে যা যা বলছি ওখানে গিয়ে তা তা বলবি। যদি বলিস তাহলে জামিন পেয়ে যাবি।’

ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজন বলেন, ‘তারা তো বেঁচে আছে তাহলে এ মামলাটা তো মিথ্যা।’

এক ভুক্তভোগীর মা কেঁদে কেঁদে বলেন, ‘আমার ছেলেকে বিনা অপরাধে থানায় ধরে নিয়ে রাখে।’

ভুক্তভোগী এক নারী বলেন, ‘আমি একজন মেয়ে মানুষ। আমি বাইরে বের হলে লোকজন আমাকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে বলে যে তুমি একটা জেল খাটা মানুষ।’

তদন্তকারী সংস্থা জানায়, ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করতে পুলিশকে ব্যবহার করায় এমন ঘটনা ঘটেছে।

আইনজীবীরা বলছেন, দায় রয়েছে পুলিশ প্রশাসনের।

আইনজীবী আশীষ কুমার বলেন, ‘ভিক্টিম নিজ জিম্মায় হাজির হয়ে বলেছেন আমি মরি নাই। আমি জীবিত আছি। সেখানে অন্ততপক্ষে মূল ঘটনা উদ্ঘাটন সাপেক্ষে আমার আসামিকে জামিন দিতে পারত।’

নারায়নগঞ্জ সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সরকারি একটা সংস্থা হিসেবে আমাদের অবশ্যই ভালোভাবে যাচাই-বাচাই করা উচিত।’

শুধু তদন্তকারী সংস্থা নয়, প্রশ্নের মুখে পড়েছে বিচারকের সামনে দেয়া ১৬৪ ধারার জবানবন্দিও।

সূত্রঃ সময় নিউজ

Advertisements