মার্কিন কৃষ্ণাঙ্গরা
Advertisements

কৃষ্ণাঙ্গদের প্রতি বৈষম্য ও সহিংসতা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি পুরনো বড় সংকট। গতকাল (বুধবার) মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও কৃষ্ণাঙ্গদের প্রতি বৈষম্যের বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

মার্কিন বিচার-বিভাগ শাস্তি দেয়ার ক্ষেত্রে কৃষ্ণাঙ্গদের প্রতি যে বৈষম্য করছে তা তুলে ধরে বাইডেন বলেছেন, যে অপরাধ করে একজন শ্বেতাঙ্গ মার্কিন নাগরিক যেখানে পাচ্ছেন মাত্র দুই বছরের কারাদণ্ড সেখানে একজন কৃষ্ণাঙ্গকে ওই একই অপরাধের জন্য দেয়া হয় সাত বছরের কারাদণ্ড!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আফ্রিকানদের জোর করে জাহাজে উঠিয়ে দেশটিতে নিয়ে দাস হিসেবে ব্যবহার করার মাধ্যমে কৃষ্ণাঙ্গদের প্রতি শ্বেতাঙ্গদের সহিংস আচরণ শুরু হয় খ্রিষ্টীয় সপ্তদশ শতকে। আর এখনও তাদের ওপর নানা ধরনের নৃশংস নির্যাতন ও বৈষম্য অব্যাহত রয়েছে। অথচ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আফ্রিকান বংশোদ্ভূত কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিকরা দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৪ শতাংশ।

বারাক ওবামা কৃষ্ণাঙ্গ বংশোদ্ভূত প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর কৃষ্ণাঙ্গদের অধিকারের পরিস্থিতি ভালো হবে বলে আশা করা হচ্ছিল। কিন্তু বাস্তবে তাদের অবস্থা অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে দিনকে দিন আরও শোচনীয় হতে থাকে।

গত প্রায় ৭০ বছরের নানা সময়ে আফ্রিকান আমেরিকানদের অধিকার বিষয়ক নানা আন্দোলন জোরদার হওয়া সত্ত্বেও বিচার ও সাজার ক্ষেত্রে কৃষ্ণাঙ্গরা ব্যাপক বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। মার্কিন কারাবন্দিদের ৬৭ শতাংশই হচ্ছে কৃষ্ণাঙ্গ। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও চাকুরির সুবিধাসহ অন্য অনেকে ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হচ্ছে কৃষ্ণাঙ্গসহ সংখ্যালঘু নানা মার্কিন সম্প্রদায়। মার্কিন স্বাস্থ্য-বিভাগের অবহেলা ও উদাসীনতার কারণে করোনা ভাইরাসেরও বেশি শিকার হয়েছে কৃষ্ণাঙ্গ ও ল্যাটিনভাষী মার্কিন নাগরিকরা।

মার্কিন পুলিশি বর্বরতারও প্রধান শিকার কৃষ্ণাঙ্গরা। জর্জ ফ্লয়েডের মত মার্কিন কৃষ্ণাঙ্গরা শ্বেতাঙ্গ মার্কিন পুলিশের হাতে নৃশংস ও পৈশাচিক কায়দায় প্রায়ই নিহত হচ্ছে! এ নিয়ে ব্যাপক প্রতিবাদ আন্দোলন সত্ত্বেও মার্কিন রাষ্ট্র-ব্যবস্থায় বিরাজমান সুপরিকল্পিত বর্ণবাদী কাঠামোর কারণে একই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে পারছে না মার্কিন কর্তৃপক্ষ। এইসব পুলিশের বিরুদ্ধেও কার্যকর কোনো শাস্তির ব্যবস্থা নেয়নি মার্কিন প্রশাসন ও বিচার বিভাগ। আসলে তারা এ বিষয়কে যথাযোগ্য গুরুত্বই দিচ্ছে না!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বর্ণবাদের শেকড় যে কত গভীরে প্রোথিত ও সুপরিকল্পিত সে বিষয়ে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, বর্ণবাদ কোনো কোনো মার্কিনিদের ডিএনএ’র অংশ হয়ে পড়েছে!

পার্সটুডে

Advertisements