র‍্যাব ও ৭ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে
Advertisements

বাংলাদেশের এলিট ফোর্স হিসেবে পরিচিত র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) ও তার সাবেক-বর্তমান মহাপরিচালকসহ সাত শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপকে ‘সম্পূর্ণ অযৌক্তিক’ বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।

এর প্রতিক্রিয়ায় এক ভিডিও বার্তায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বস্তুনিষ্ঠভাবে নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। তারা অতিরঞ্জিত সংবাদের ওপর ভিত্তি করে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। কারণ আমাদের পুলিশ কখনো কাউকে ক্রস ফায়ার বা বিচারবহির্ভূত হত্যা করে না। বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা চ্যালেঞ্জিং। তবে আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সুন্দরভাবেই সেই দায়িত্ব পালন করছে।”

কুমিল্লায় কাউন্সিলর হত্যার উদাহরণ দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “এদেশে অপরাধীদের মৃত্যুর বড় একটা কারণ, যখন সন্ত্রাসীদের ধরতে যাওয়া হয় তখন তারা সারেন্ডার করে না। তখন আত্মরক্ষার্থে আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর গুলি ছুঁড়তেই হয়। তারপরও পুলিশ গুলি ছুড়লে সেটার তদন্তভার একজন ম্যাজিস্ট্রেটকে দেয়া হয়। তদন্তে কোনো গাফিলতি ধরা পড়লে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়।”

উল্লেখ্য, গতকাল (শুক্রবার) আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে র‍্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। পৃথকভাবে এ নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব বিভাগ ও পররাষ্ট্র দপ্তর।

নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা কর্মকর্তাদের মধ্যে র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ রয়েছেন। তিনি এখন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি)। বেনজীর আহমেদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের নিষেধাজ্ঞার আওতায়ও পড়েছেন তিনি।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর পৃথক এক ঘোষণায় বেনজীর আহমেদ এবং র‌্যাব-৭–এর সাবেক অধিনায়ক মিফতাহ উদ্দীন আহমেদের ওপর সে দেশে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ২০১৮ সালের মে মাসে কক্সবাজারের টেকনাফে পৌর কাউন্সিলর একরামুল হককে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনে সম্পৃক্ততার জন্য এ দুজনের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব বিভাগের বৈদেশিক সম্পদ নিয়ন্ত্রণ দপ্তর সরকারের এক নির্বাহী আদেশের (নম্বর ১৩৮১৮) আওতায় এ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এ আদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন বা দুর্নীতিতে সম্পৃক্ত ব্যক্তির সম্পদ বাজেয়াপ্তের কথা বলা হয়েছে।

রাজস্ব বিভাগের বিজ্ঞপ্তিতে র‌্যাবকে একটি বিদেশি সংস্থা হিসেবে মার্কিন সরকারের নির্বাহী আদেশের (নম্বর ১৩৮১৮) অধীনে রাখা হয়েছে। এর ফলে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে র‌্যাবও মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছে।

নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা অন্য কর্মকর্তারা হলেন- র‍্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) খান মোহাম্মদ আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) তোফায়েল মুস্তাফা সারওয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) মো. জাহাঙ্গীর আলম ও সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) মো. আনোয়ার লতিফ খান।

Advertisements