প্রভাবশালী শিয়া নেতাদের সাথে তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাত
Advertisements

আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মোত্তাকি সেদেশের প্রভাবশালী বেশ ক’জন শিয়া ধর্মীয় নেতার সাথে সাক্ষাত করে দেশের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে মতবিনিময় করেছেন। রাজধানী কাবুলে খাতামুল নাবিয়্যিন স্কুলে এ সাক্ষাত অনুষ্ঠিত হয়।

এ সাক্ষাতে আফগানিস্তানের শিয়া ওলামা পরিষদের প্রধান আয়াতুল্লাহ সালেহি এবং উপপ্রধান ওস্তাদ মোহাম্মদ আকবারি, সাবেক যোগাযোগ ও পরিবহন মন্ত্রী সাইয়্যেদ মোহাম্মদ আলী জাভেদ এবং দেশটির প্রখ্যাত শিয়া আলেম সাইয়্যেদ হাদিসহ আরো অন্যান্য শিয়া ধর্মীয় নেতা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে উপস্থিত ব্যক্তিরা সবাইকে নিয়ে আফগানিস্তানে অংশগ্রহণমূলক সরকার প্রতিষ্ঠাসহ আরো অন্যান্য বিষয় নিয়ে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছেন।

এর আগেও আফগানিস্তানের শিয়া ওলামা পরিষদ তালেবান সরকারের কর্মকর্তাদের সাথে সাক্ষাতে অংশগ্রহণমূলক সরকার প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছিল। গত বছর ১৫ আগস্ট তালেবান সেদেশের ক্ষমতা দখল করার পর সবাইকে নিয়ে অংশগ্রহণমূলক সরকার প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিলেও এখন পর্যন্ত তারা তা বাস্তবায়ন করেনি। আফগানিস্তানকে বর্তমান সংকট থেকে বের করে আনার জন্য তালেবান সরকারের সঙ্গে যারা শলাপরামর্শ করছে তাদের মধ্যে দেশটির শিয়া ওলামা পরিষদ অন্যতম এবং এ ক্ষেত্রে তারা আন্তরিক ও জোরালো ভূমিকা পালন করছে।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে তালেবান কর্মকর্তাদের সাথে শিয়া ধর্মীয় নেতাদের একাধিক বৈঠক হয়েছে। এসব বৈঠকে অংশগ্রহণমূলক সরকার গঠন ছাড়াও দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়েও কথাবার্তা হয়েছে। বিশেষ করে সবাইকে নিয়ে সরকার গঠনের প্রতিশ্রুতি তালেবান এখনো বাস্তবায়ন না করায় দেশের ভেতরে ও বাইরে তালেবান সরকারের প্রতি অনাস্থা তৈরি হয়েছে। আফগানিস্তানের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সংগঠন এজন্য চিন্তিত যে তালেবান অংশগ্রহণমূলক সরকার গঠন না কোরে ইসলামি আমিরাত সরকার ব্যবস্থা গঠনের পদক্ষেপ নিতে পারে। সম্ভাব্য এ পদক্ষেপ হবে গণতন্ত্রের নীতিমালার পরিপন্থী। বিশেষ করে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে তালেবান কর্তৃপক্ষ নারীদের কাজ ও শিক্ষা গ্রহণ নিষিদ্ধ করায়, মাহরাম ছাড়া অন্য কোনো পুরুষের সাথে নারীদের কোথাও সফরে যাওয়া নিষিদ্ধ করায় এবং বোরকা দিয়ে আপাদমস্তক শরীর ঢেকে নারীদের বাইরে যাওয়ার বিষয়ে কঠোর আইন করায় আফগানিস্তানের সর্বত্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

অন্যদিকে তালেবান কর্তৃপক্ষ অংশগ্রহণমূলক সরকার গঠন না করায় এবং ব্যক্তি ও সামাজিক বহু অধিকার কেড়ে নেয়ায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে এবং এ জন্য তালেবানকে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। এ কারণে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য তালেবান আন্তর্জাতিক সমাজের প্রতি যে আহ্বান জানিয়েছে সে বিষয়ে অত্যন্ত সতর্কতার সাথে পদক্ষেপ নিচ্ছে বিশ্বসমাজ। দেশের ভেতরে তালেবানের বিতর্কিত নানা কর্মকাণ্ডের কারণে আন্তর্জাতিক সমাজ ত্রাণ সহায়তা দেয়ার ক্ষেত্রেও দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে গেছে। এ কারণে আফগানিস্তানে বাইরের ত্রাণ সহায়তার পরিমাণ গত কয়েক মাসে কমে গেছে।

এ অবস্থায় পর্যবেক্ষকরা বলছেন, তালেবান যদি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেতে চায় তাহলে তাদেরকে অবশ্যই গণতান্ত্রিক নীতিমালা মেনে চলতে হবে।

Advertisements