গাজীপুরের বাসন থানার মালেকের বাড়ি এলাকায় বেতন বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিকদের চলমান বিক্ষোভ কর্মসূচিতে পুলিশ গুলি ছুড়লে রাসেল হাওলাদার (২৬) নামে এক গার্মেন্ট শ্রমিক নিহত হয়েছেন।
সোমবার (৩০ অক্টোবর) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
রাসেল ঝালকাঠি সদর উপজেলার আব্দুল হান্নানের ছেলে। তিনি গাজীপুর মহানগরের মালেকের বাড়ি এলাকায় ভাড়া থেকে ওই এলাকার ডিজাইন এক্সপ্রেস গার্মেন্টসে কাজ করতেন।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।
রাসেলের সহকর্মী রন্জু মিয়া বলেন, আমরা ডিজাইন এক্সপ্রেস লিমিটেডের শ্রমিক। ওই কারখানায় রাসেল ইলেকট্রিশিয়ানের কাজ করতেন। সোমবার শ্রমিকরা বেতন বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলন করছিলেন। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষ বাধে। এ সময় অফিস ছুটির পর বাসায় যাওয়ার পথে পুলিশের একটি গুলি এসে রাসেলের শরীরে লাগে।
অপরদিকে সপ্তম দিনে গড়িয়েছে শ্রমিক আন্দোলন। শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। উত্তেজিত শ্রমিকরা মহাসড়কে চলাচলকারী স্কয়ারের একটি সিকিউরিটি ভ্যানে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং বেশ কিছু গাড়ি ভাঙচুর করে। পরে সাউন্ড গ্রেনেড আর টিয়ারশেলের শব্দে আশপাশের এলাকা প্রকম্পিত হয়ে উঠে।
জানা গেছে, বেতন বাড়ানোর দাবিতে টানা এক সপ্তাহ ধরে গাজীপুর মহানগরের টঙ্গী, গাছা, বাসন ও কোনাবাড়ি থানা এবং জেলার কালিয়াকৈরের সফিপুরে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনে নামেন শ্রমিকরা। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার সকাল ৯টা থেকে শ্রমিকরা বাসন থানাধীন ভোগড়া বাইপাস ও এর আশপাশের এলাকার বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা আন্দোলনে নামেন। এ সময় কয়েকটি কারখানায় তারা ভাঙচুর চালিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে মিছিল বের করেন। পরে পুলিশ লাঠিচার্জ ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করলে শ্রমিকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন। এ সময় উত্তেজিত শ্রমিকরা একটি পিকআপে আগুন ধরিয়ে দেন। দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটনের বাসন থানার ওসি আবু সিদ্দিক জানান, কিছুক্ষণের জন্য ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এ সময় উত্তেজিত শ্রমিকরা স্কয়ারের একটি সিকিউরিটি ভ্যানে আগুন ও বেশকিছু বাড়ি ভাঙচুরের কথাও জানান।
