পিরোজপুরে মাওলানা সাঈদীর মরদেহ
Advertisements

মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মরদেহ পিরোজপুরে পৌঁছেছে। আজ সকাল ১০টার দিকে শহরের আল্লামা সাঈদী ফাউন্ডেশন প্রাঙ্গণে তার মরদেহবাহী এম্বুলেন্স পৌঁছায়। মরদেহ পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে কান্নায় ভেঙে পড়েন ভক্ত ও সমর্থকরা। মাওলানা সাঈদীকে শেষবারের মতো একনজর দেখার জন্য মানুষের ঢল নামে। এসময় অনেককে আহাজারি করতে দেখা যায়।

এদিকে মাওলানা সাঈদীর নামাজে জানাজা পিরোজপুরে অনুষ্ঠিত হবে। আজ সকালে সাঈদী ফাউন্ডেশন মাঠে (পিরোজপুর নতুন বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন) জানাজা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে। সকাল ৯টায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে জানানো হয়, মাওলানা সাঈদীর লাশবাহী গাড়ি পিরোজপুরের খুব কাছাকাছি। সবাইকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে জানাজার স্থানে চলে আসার অনুরোধ করা যাচ্ছে। হয়তো নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই জানাজা অনুষ্ঠিত হয়ে যেতে পারে । স্থান ঐতিহাসিক সাঈদী ফাউন্ডেশন মাঠ (পিরোজপুর নতুন বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন)।

এদিকে জানাজা শেষে মাওলানা সাঈদীর মরদেহ সমাহিত করা হবে বড় ছেলে মাওলানা রাফীক সাঈদীর কবরের পাশে।এ তথ্য জানিয়েছেন তার ছোট ছেলে মাসুদ সাঈদী।

উল্লেখ্য, রোববার বিকালে কাশিমপুর কারাগারের ভেতরে বুকের ব্যথায় অসুস্থ হয়ে পড়েন মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। কারা কর্তৃপক্ষ তাকে কারাগারের অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে পাঠানো হয়। সোমবার রাত ৮টা ৪০ মিনিটে বিএসএমএমইউতে হার্ট অ্যাটাকে মারা যান মাওলানা সাঈদী। তার মৃত্যুর খবর পেয়ে শাহবাগ এলাকায় জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা জড়ো হন। সোমবার (১৪ আগস্ট) রাতে জামায়াতের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেয়া হয়, মঙ্গলবার বাদ জোহর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে মাওলানা সাঈদীর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে বিএসএমএমইউ হাসপাতাল চত্বরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা। তারা ঢাকায় মাওলানা সাঈদীর জানাজা অনুষ্ঠানের দাবিতে নানা স্লোগান দেন।

ভোর রাত তিনটার দিকে মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মরদেহ এম্বুলেন্সে করে পুলিশ বের করতে চাইলে জামায়াত-শিবির কর্মীরা গাড়ির সামনে শুয়ে পড়েন এবং দাঁড়িয়ে যান। এক পর্যায়ে পুলিশ সদস্যরা জামায়াত শিবির কর্মীদের প্রতিরোধের মুখে গাড়ির পাশ থেকে চলে যান। ফজরের নামাজের পর অ্যাকশনে যায় পুলিশ। ভোর ৫টার কিছু পর হাসপাতালে বাইরে থেকে টিয়ার গ্যাস এবং রাবার বুলেট ছোড়ে পুলিশ। এতে জামায়াতের নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে এদিক-ওদিক ছুটোছুটি করতে থাকে। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে জামায়াত কর্মীরা। একপর্যায়ে পুলিশের অ্যাকশনের মুখে পিছু হটে জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা। এসময় মাওলানা সাঈদীর মরদেহ বের করতে গেলে এম্বুলেন্সের চাকা পাংচার হয়ে যায়। ভোর সাড়ে ৫টার দিকে পুলিশ সদস্যরা পাংচার হওয়া অ্যাম্বুলেন্সটি নিজেরা ঠেলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের ভেতর থেকে বাইরে নিয়ে আসেন। শাহবাগ মোড় পেরিয়ে বারডেম হাসপাতালের সামনে ঠেলে আনার পর অন্য একটি অ্যাম্বুলেন্সে মাওলানা সাঈদীর মরদেহ তুলে দেন। পরবর্তীতে সেই অ্যাম্বুলেন্সটি পুলিশি নিরাপত্তায় পিরোজপুরের উদ্দেশে রওনা দেয়।

Advertisements