আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে পারস্য উপসাগর থেকে গ্রিসের দু’টি তেল ট্যাংকার আটক করেছে ইরান। গ্রিস তার পানিসীমা থেকে একটি ইরানি তেল ট্যাংকার আটক করার কয়েক দিনের মাথায় দেশটির দু’টি তেল ট্যাংকার আটক করল ইরান।
ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসি শনিবার (২৮ মে) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই বাহিনীর নৌশাখা গতকাল (শুক্রবার) আইন লঙ্ঘনের অপরাধে পারস্য উপসাগর থেকে গ্রিসের দু’টি তেল ট্যাংকার আটক করেছে।
এর আগে শুক্রবার ইরানের বার্তা সংস্থা নূর নিউজ জানিয়েছিল, গ্রিসের হাতে ইরানি তেল ট্যাংকার আটকের বিরুদ্ধে ‘শাস্তিমূলক ব্যবস্থা’ নেবে তেহরান। অবশ্য কী ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে সে সম্পর্কে ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বার্তা সংস্থাটি কোনো ইঙ্গিত দেয়নি।
গ্রিক সরকার ইরানি তেল ট্যাংকার আটক করার পর তেহরানে নিযুক্ত গ্রিসের রাষ্ট্রদূতকে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানানো হয়। ইরানের পক্ষ থেকে ট্যাংকারটিকে নির্বিঘ্নে ছেড়ে দেয়ারও আহ্বান জানানো হয়। কিন্তু বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, গ্রিস সরকার ইরানি তেল ট্যাংকারটির তেল অন্য একটি ট্যাংকারে স্থানান্তর করে তা আমেরিকার কাছে হস্তান্তর করেছে।
শুক্রবার তেহরানে নিযুক্ত সুইস রাষ্ট্রদূতকেও ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়। এ সময় গ্রিক উপকূল থেকে ইরানি তেল চুরি করে আমেরিকায় নিয়ে যাওয়ার প্রতিবাদ জানানো হয়। তেহরানে মার্কিন দূতাবাস না থাকায় সুইজারল্যান্ড ইরানে মার্কিন স্বার্থ দেখাশোনা করে।
এর আগে গত বুধবার ইরানের পোর্টস এন্ড মেরিটাইম অর্গানাইজেশন এক বিবৃতিতে বলেছিল, গ্রিসের পানিসীমায় ইরানি তেল আটক করে তা আমেরিকার কাছে হস্তান্তরের ঘটনাটি ছিল ‘সম্পূর্ণ জলদস্যুতা’ এবং এতে আন্তর্জাতিক আইন ও রীতিনীতি লঙ্ঘিত হয়েছে।
ওদিকে পারস্য উপসাগর থেকে গ্রিসের দু’টি তেল ট্যাংকার আটকের সত্যতা নিশ্চিত করেছে এথেন্স। গ্রিস বলেছে, শুক্রবার ইরানের নৌবাহিনীর হেলিকপ্টার থেকে ট্যাংকার দু’টিতে সৈন্য নামানো হয় এবং তারা ট্যাংকারগুলোকে ইরান উপকূলে নিয়ে যায়। গ্রিসের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, তাদের প্রথম জাহাজটিকে আন্তর্জাতিক পানিসীমা থেকে এবং দ্বিতীয় ট্যাংকারটিকে ইরান উপকূলের কাছ থেকে আটক করা হয়েছে। ওই মন্ত্রণালয় বলেছে, দু’টি জাহাজের ক্রুদের মধ্যে নয়জন গ্রিক নাগরিক। তবে দু’টি জাহাজে মোট কতজন ক্রু রয়েছে তা গ্রিস জানাতে পারেনি। ইরানের পক্ষ থেকেও এখন পর্যন্ত আটক দুই জাহাজের ক্রুদের সংখ্যা ঘোষণা করা হয়নি।