নিরবিচ্ছিন্ন গ্যাস-বিদ্যুৎ পেতে উৎপাদন খরচ পরিশোধ করুন
Advertisements

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ পেতে চাইলে অন্তত বিদ্যুৎ ও গ্যাস উৎপাদন ও সংগ্রহের খরচ দিতে বলেছেন।

তিনি বলেন, ‘আপনি যদি নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও গ্যাস চান, তাহলে আপনাকে অন্তত উৎপাদন খরচ বা সংগ্রহের খরচ দিতে হবে। আমরা কতদিন ভর্তুকি দেব?’

প্রধানমন্ত্রী ‘ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ফেয়ার (ডিআইটিএফ)-২০২৩’-এর ২৭তম আসরের উদ্বোধন করেন। যেখানে বাংলাদেশের তৈরি পণ্য আন্তর্জাতিক বাজারে প্রচারের জন্য প্রদর্শিত হবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) রাজধানীর উপকণ্ঠে পূর্বাচলে ‘বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ- অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, সরকার দীর্ঘসময়ের জন্য বিদ্যুৎ ও গ্যাসে বিশাল ভর্তুকি দিতে পারে না।

তিনি বলেন, আমরা এত বিপুল পরিমাণ সরকারি অর্থ ভর্তুকি হিসেবে দিতে পারি না, তাই ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের এ বিষয়ে মনোযোগ দিতে হবে।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী পাট ও পাটজাত পণ্যকে ২০২৩ সালের পণ্য হিসেবে ঘোষণা করেন।

তিনি বলেন, এক সময় পাটকে দেশের সোনালি আঁশ বলা হতো।

তিনি উল্লেখ করেন যে পাটের চাহিদা কখনই শেষ হবে না এবং পাটজাত পণ্য পরিবেশবান্ধব।

তিনি বলেন, ‘আমরা পাটের জিনোম উদ্ভাবন করতে পেরেছি, তাই আমরা অনেক পণ্য তৈরি করতে পারি।’

হাসিনা আরো উল্লেখ করেন যে পাট এমন একটি ফসল যার পাতা থেকে লাঠি পর্যন্ত প্রতিটি অংশ ব্যবহার করা যায়।

তিনি বলেন, ‘তাই পাটের প্রতি আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে। আমরা আমাদের পাবলিক জুট মিল খুলে দিয়েছি এবং যে কেউ এই মিলগুলোর একটি ইজারা নিতে পারে।’

এ বিষয়ে তিনি বলেন, ইজারাদাররা এই মিলগুলো সরাসরি পরিচালনা করতে পারে বা বৈচিত্র্যময় আইটেম উৎপাদন করতে আধুনিক প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্ত করতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘পরিবেশ-বান্ধব পণ্যের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে, তাই বিশ্বজুড়ে আপনারা বিপণন করতে পারেন। আপনাদের সেই সুযোগটি নিতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে সরকার সারাদেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য ফাইভজি চালু করবে।

তিনি বলেন, ‘আমরা ফোরজি পরিষেবা অন্তর্ভুক্ত করেছি এবং অবশ্যই ফাইভজি পরিষেবা চালু করব। তবে এটি ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য করা হবে, কারণ এই পরিষেবাটি (ফাইভজি) সব এলাকার জন্য প্রয়োজনীয় নয়। এটি অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর জন্য প্রযোজ্য।’

তিনি বলেন, সরকার সে লক্ষ্যে পদক্ষেপ নিচ্ছে।

তিনি সংশ্লিষ্ট সকলকে তথ্যপ্রযুক্তি ও আইটি সক্ষম সেবার ওপর জোর দিতে বলেন।

দেশের রফতানি বাস্কেটকে বৈচিত্র্যময় করার জন্য প্রধানমন্ত্রী আবারো নতুন বাজার ও পণ্য খোঁজার ওপর গুরুত্ব দেন।

তিনি বলেন, ‘আমাদের রফতানি আইটেম সীমিত, আমরা খুব কম রফতানি আইটেমের ওপর নির্ভরশীল, এটিকে বহুমুখী করতে হবে। আমি বারবার বলছি যে আমরা যত বেশি আমাদের পণ্য বৈচিত্র্য আনতে সক্ষম হব, তত বেশি আমরা নতুন বাজার খুঁজে পাব, তত বেশি আমরা আমাদের ব্যবসা এবং আয় বাড়াতে সক্ষম হব।’

শেখ হাসিনা সারাবিশ্বে এই পণ্যগুলোর অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দেন।

তিনি বলেন, খাদ্যদ্রব্যের চাহিদা কমবে না, সবসময় বাড়বে। পরে তিনি মেলার বিভিন্ন প্যাভিলিয়ন ও স্টল পরিদর্শন করেন।

অনুষ্ঠানে দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের ওপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো: জসিম উদ্দিন ও ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান আ খ ম আহসান।

সূত্র : ইউএনবি

Advertisements