দুনিয়ার মানুষ লিঙ্গের
Advertisements

প্রথম প্রকারঃ রজুল (رَجُلٌ) পুরুষঃ সবাই জানে পুরুষ কয় কারে। মাংশপেশিতে প্রকাশ পায়, কণ্ঠনালির বাজনায়, মুখের চিবুকে, নাকের গুম্ফে, বুকের আঙিনায়, যে সব অঙ্গ গুপ্ত করে রাখা হয় সেই গ্রামে, হাত পায়ের রোমশ কাঠিন্যে, চুলের তলদেশে পুরুষ পুরুষই হয়।

দ্বিতীয় প্রকারঃ উনসা (أُنْثَى) মেয়েঃ সবাই জানে মেয়ের সংজ্ঞা। মাথার চাঁদি থেকে পায়ের তলা পর্যন্ত সবটাই মেয়েময়। ভেতরে ওভারি আছে, বাচ্চাদান আছে, রক্তের সাগর আছে, মাসে মাসে সে রক্তের প্রকাশ আছে। মেয়ে মেয়েই হয়।
উপরের দুই শ্রেণীতে কখনো উপাচার হয়। ওদেরকে মনঃরোগে পায়।

فَوَسْوَسَ لَهُمَا الشَّيْطَانُ لِيُبْدِيَ لَهُمَا مَا وُورِيَ عَنْهُمَا مِن سَوْآتِهِمَا

অতঃপর শয়তান আদম ও হাওয়াকে কূপরামর্শ দিলো, যাতে করে ওদের যে লজ্জার অঙ্গগুলো গোপন ছিলো তা যেন প্রকাশ করে দিতে পারে।
একদম ছেলে, কিন্তু মেয়েদের টেম্পটিং ভাষা, মুখের বঙ্কিমতা, চোখের লোচনীয় ধনুকবাঁকা তীরের ফলা ও গ্রীবার থর-থর-থর প্রথম কূমারির কম্পন এমন ভাবে তোলে ছেলেরা তাকে দেখে ফাঁদে পড়ে যায়। দেখা যায় যেন এক আস্ত মেয়ে। কিন্তু তাদের হাতের মাসল বক্র হয়ে ওঠে, পা ফড়িং লম্ফ দেয়, মুখ শক্ত শালুক ফুটায়, আর গায়ে প্রকাশ পায় ছেলের সব কিছু। এরা সবাই শয়তানের আঘাতে অসুস্থ। মিনাল জিন্নাতি ওয়ান্নাস। এদেরকেই

لَعَنَ النبيُّ صَلَّى اللهُ عليه وسلَّمَ المُخَنَّثِينَ مِنَ الرِّجَالِ، والمُتَرَجِّلَاتِ مِنَ النِّسَاءِ، وقَالَ: أخْرِجُوهُمْ مِن بُيُوتِكُمْ قَالَ: فأخْرَجَ النبيُّ صَلَّى اللهُ عليه وسلَّمَ فُلَانًا، وأَخْرَجَ عُمَرُ فُلَانًا.

মহানবী (সা) অভিশাপ দিয়েছেন, তাদেরকে যারা পুরুষ তথাপিও মেয়ে হতে চায়। তিনি অভিশাপ দিয়েছেন, ঐসব মেয়েদের, যারা পুরুষ হতে চায়। তিনি বলেছেনঃ ওদেরকে তোমরা ঘর থেকে বের করে দাও। তিনি নিজেই একজনকে বের করে দিয়েছিলেন, হযরত উমার (রা) ও একজনকে বের করে দিয়েছিলেন।

কারণ তাদের স্পষ্ট জেন্ডার থাকার পরেও তার উতকট কিছু চেয়েছে। এরাই ট্রান্স জেন্ডার নামে নিজদের পরিচিত করছে। এরা তাদের জেন্ডার পরিবর্তন করতে চায়। এদের মানসিকতাকে আল্লাহর নবী (সা) পছন্দ করেননি।

তৃতীয় প্রকারঃ খুন্সা রাজুল (خُنْثَى رَجُل) পুরুষ খুন্সাঃ এদের গুপ্তাঙ্গে সমস্যার কারণে পুরুষ বা নারী পরিচয় নিতে গন্ডগোল বাঁধে। গুপ্তাঙ্গটা ঢেকে রাখলে এর শরীরে সবটাই পুরুষালি বুঝা যাবে।

চতূর্থ প্রকারঃ খুন্সা উনসা (خُنْثَى أُنْثَى) মেয়ে খুন্সাঃ এদেরও গুপ্তাঙ্গের সমস্যা। বুঝা যায়না কি। তবে এটা ঢেকে রাখলে আর সবে নারীত্ব উদ্ভাসিত।

এই দুই শ্রেনীর মানুষের পাশে ডাক্তারদের দাঁড়াতেই হবে। এদের চিকিতসা দিয়ে লিঙ্গ “পরিবর্তন” (SRS) করা যাবেনা, তবে লিঙ্গের “সংস্কার” করা যাবে। যার জঠর আছে, অভারি আছে, নারীত্বের উদ্ভাস আছে, তাদের অপারেশান করে নারী বানাতে হবে। শরীরের সবগুলোর সাথে এই অঙ্গটাকেও সামঞ্জস করে দিতে হবে। তারা মেয়ে। তাদের গোপনীয়তা রক্ষা করে সমাজ সংসারে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। বিয়ে তার না হোক নারীত্ব নিয়ে সে যেন কখনোই মনুষ্য সমাজ থেকে মনে আঘাত না পায়, তার জন্য রাস্ট্রযন্ত্র, পরিবার পরিজন এবং সমাজ সব ধরণের আইনগত ও কাঠামোগত সুযোগ তৈরি করবে।

যার পেশী সবল, দাড়ি গোঁফের চাঞ্চল্য, দেহের সবটাই পুরুষের উন্মত্ততা, তার গুপ্তঅঙ্গকে ডাক্তাররা সংস্কার করে দেবে, যাতে পুরুষ হয়ে সমাজের সকল কাজে অংশ নিতে পারে। দেশ পরিচালনায় হাত দিতে পারে। শিক্ষায় দীক্ষায় আর সবার মত যায়গা পেতে পারে।চিকিৎসা যখন উন্নত হয়নি, বিজ্ঞান যখন চাঁদে উঁকি দেয়নি, মনোবিজ্ঞান যখন মানবতার উন্নয়নে ভূমিকা রাখা শুরু করেনি তখনকার সমাজে এদেরকে নিয়ে কষ্ট হয়নি, এরা মিছিল করেনি, এক বেলা খাওয়ার যোগাড় করতে গুপ্তাঙ্গ কাওকে দেখাবার প্রয়োজন বোধ করেনি। তারা মন্ত্রীও হয়েছিলো মুসলিম খেলাফতে, সেনাপতিও ছিলো যুদ্ধের ময়দানে, শিক্ষকও হয়েছিলো স্কুলে দরগাহে। তারা মানুষ ছিলো, মানুষের মাঝেই ছিলো। তাদের অর্থ হতো, বিত্ত হতো, তার কবি হতো তাদের লেখা গীত ও হতো। বিজ্ঞান উন্নত হয়নি বলে বিশাল ইসলামি সম্রাজ্যের খলিফা আলী

ইবন আবি তালিব তাদের জেন্ডার নিরূপনের পদ্ধতি বলে দিয়েছিলেনঃ
إن بال من مجرى الذكر فهو غلام وإن من مجرى الفرج فهو جارية.

রাস্ট্রের কোন দ্বায়িত্বশীল ব্যক্তি তাদের পরীক্ষা করবে। “যদি পুরুষের নালি দিয়ে পেশাব করে সে ছেলে, আর নারীর যোনিপথে যদি সে পেশাব করে তাহলে মেয়ে।” আজকের বিজ্ঞান এত উন্নত যে পেশাব করে চেনার দরকার হবেনা ইনশাআল্লাহ। হরমুনের পরীক্ষায় তারা উদ্ধার করতে পারবে এই মানব সন্তানের জেন্ডার কোন দিকে বেশি ধাবমান। অথচ আজকের এই উন্নত যুগে বাংলাদেশে এদের হিজড়া বলে তৃতীয় লিঙ্গ বানায়ে মানুষ জাতির থেকে ভিন্ন হিসেবে দেখিয়েছে। আমি মনে করি এতে রাস্ট্র যেমন তাদের উপর জুলুম করেছে, সমাজ যেমন তাদের সাথে অমানবিক কাজ করেছে, পরিবারও তাদেরকে সব কিছু থেকে বঞ্চিত করে আল্লাহর গযব কিনেছে।

পঞ্চম প্রকারঃ খুন্সা মুশকিল (خُنْثَى مُشْكِل) কনফিউজিং খুন্সাঃ এদের গুপ্তাঙ্গের স্থলে কোনকিছুই প্রকাশ পায়না, কোন কিছুই বুঝা যায় না। না শরীরে, না অন্য কোথাও। এদের সংখ্যা দুনিয়াতে হাতে গোনা। এদের ব্যাপারেও শরীয়াত পরীক্ষা করতে পরামর্শ দেবে। তাও দ্বায়িত্বশীল পর্যায়ে। থাকবে ফিজিশিয়ান, মনোবিজ্ঞানী, কোর্টের প্রতিনিধি, আলিম ও স্কলার। বিভিন্ন ক্ষেত্র পর্যালোচনা করে এবং এই মানব সন্তানের মানসিক অবস্থার বিবেচনা করে রাস্ট্র ফয়সলা করবে। এবং সেই অনুযায়ি তাকে বড় হয়ে উঠতে সাহায্য করবে। শেষের এই তিনটা শ্রেনীকে আমাদের দেশে হিজড়া শ্রেনীতে ফেলে দিয়েছি, অথচ ওরা মানব সম্প্রদায়, ওদের সকল অধিকার প্রাপ্তির সুবন্দোবস্ত সরকারের সকল বিভাগ করে দেবে, এটাই ছিলো বিগত দেড় হাজার বছরের মুসলিম সংস্কৃতি। ইংল্যান্ডের অনেক হিজড়া আছে, কিন্তু আজ পর্যন্ত কেও তাদের আলাদা পায়নি, আলাদা ভাবেনি। স্ব স্ব বাড়িতে তাদের যায়গা অন্য সকলের মতই, বরং তাদের প্রতি যত্ন আত্মি একটু বেশিই।

বুঝিনা আমাদের দেশের কিছু জ্ঞান পাপী এই হিজড়াদের সাথে আরেকটা মানসিক রোগীদের এক করে মানুষকে ভুল বুঝাচ্ছে কেন? এবং এমনকি স্কুলের ছাত্রদেরকেও ভুল বুঝানোর পায়তারা করছে কেন?! ট্রান্সজেন্ডার হলো মানব লিঙ্গের প্রথম দুই শ্রেনীর মধ্য হতে। কোন পুরুষ মনে করছে সে মেয়ে, বা কোন মেয়ে মনে করছে সে ছেলে। অমনি ডাক্তার, সরকার, উকিল মোক্তার সবাই তার পক্ষে যেয়ে পুরুষ হতে চাওয়া নারীকে পুরুষ বানাচ্ছে, বা নারী হতে চাওয়া পুরুষকে নারী বানাচ্ছে। এটা শুধু অন্যায় নয়, কেবল মাত্র কবীরাহ গুনাহ নয়, এই ধরণের কাজ নবীর (সা) অভিশাপে শুধু পড়ে তা নয়, বরং এরা শয়তানের কূপরামর্শে “সৃষ্টি পরিবর্তনের” অংশিদার। শয়তান বলেছেঃ
وَلَآمُرَنَّهُمْ فَلَيُغَيِّرُنَّ خَلْقَ اللَّهِ [النساء:119
“আমি মানুষদের বলবো, যেন তারা আল্লাহর সৃষ্টি পরিবর্তন করে ফেলে।”
অথচ আল্লাহ বলছেনঃ

فَأَقِمْ وَجْهَكَ لِلدِّينِ حَنِيفًا فِطْرَتَ اللَّهِ الَّتِي فَطَرَ النَّاسَ عَلَيْهَا لَا تَبْدِيلَ لِخَلْقِ اللَّهِ [الروم:30]
তোমার রোখ একনিষ্ঠভাবে দীনের জন্য দাঁড় করাও, আল্লাহর দেয়া ফিতরাত তথা স্বাভাবিক সৃষ্টির যে নিরীখে মানুষকে তিনি সৃষ্টি করেছেন তাতেই তুমি স্থায়ী থাক, সন্তুষ্ট থাক। কারণ আল্লাহর সৃষ্টিতে কোন বিকৃতি আনা যাবেনা।

বর্তমানে মানব সমাজের রোগগুলোকে সবাই যেন স্বাভাবিক করে দেখাতে ব্যস্ত হচ্ছে। মনোবিজ্ঞানের এত উন্নতি হওয়া সত্বেও এই ধরণের মনোবিকৃতির চিকিৎসা কেও করতে পারছেনা। বরং যে রোগগুলো ধর্মের কোলে এসে মানুষ নিরাময় করতে পারতো, তারা ধর্মকে বলা যায় ত্যাগ করে অমানুষ হওয়ার প্রতিযোগিতায় লেগেছে।

Advertisements