বাংলাদেশের তৈরী পোষাক শিল্পের শ্রমমান ও অধিকার সংক্রান্ত বিষয়ে নতুন নীতিমালা দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যা শ্রম অধিকারের প্রশ্নে তৈরী পোশাকসহ দেশের শিল্প খাতে এক ধরনের উদ্বেগ তৈরি করেছে।
গত ১৬ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট এ সংক্রান্ত নতুন স্মারক স্বাক্ষর করেন। এটি সারা বিশ্বের জন্য প্রযোজ্য। কিন্তু স্মারকের বিষয়বস্তু তুলে ধরতে গিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী শ্রমিক নির্যাতনের উদাহরণ হিসেবে শ্রমিক অধিকার নিয়ে সক্রিয় এক বাংলাদেশী নারীকে উদ্ধৃত করেছেন। এ থেকেই উদ্বেগ ছড়িয়েছে বাংলাদেশী উদ্যোক্তাদের মধ্যে। তারা মনে করছেন, মার্কিন নীতি বাংলাদেশের ওপর কার্যকর করা হলে আমাদের রফতানি খাতে গুরুতর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
কারণ বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের শীর্ষ গন্তব্য দেশ যুক্তরাষ্ট্র। উচ্চ শুল্ক দিয়ে দেশটিতে রফতানি হয় নীট ও ওভেন পোশাক। বিশেষ রফতানি সুবিধা বা জিএসপি বাতিল করার পরও প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শক্ত অবস্থান তৈরি করেছে বাংলাদেশ। তবে শ্রমমান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নীতিমালায় বাংলাদেশের নাম স্থান পাওয়ায় উদ্যোক্তাদের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ। যদিও এ নিয়ে দেশের পোষাক শিল্প মালিকরা কোন মন্তব্য করছেন না।
এ বিষয়ে গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সহ-সভাপতি জলি তালুকদার মনে করেন, দেশে মজুরি, শ্রমমান ও কারখানার নিরাপত্তার প্রশ্ন এখন পর্যন্ত অপর্যাপ্ত। এমনকি আইএলও কনভেনশন অনুসরণ করছে না অনেকেই। তাই শ্রমিকদেরকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে দর কষাকষি করে যে ব্যবহার করা হচ্ছে তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য না।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন,রফতানিমূখী কোনো খাত যদি বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞায় পড়ে, তাহলে তা বহন করার মতো শক্তি আমাদের কম। তাই সার্বিক বিষয় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করা প্রয়োজন। এতে সমস্যাগুলো নিদিষ্ট করা সম্ভব হবে বলে আশা তার। এদিকে,বাংলাদেশের শ্রম ও মানবাধিকার বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় কমিশনও। অর্থনীতিবিদরা এই প্রতিবেদনকে ‘সতর্কবার্তা’ হিসেবে উল্লেখ করে বলছেন, ইউরোপীয় কমিশনের উদ্বেগের বিষয়গুলো বাংলাদেশের গুরুত্ব সহকারে দেখা উচিত।