ডেপুটি স্পিকারের সিদ্ধান্ত অসাংবিধানিক
Advertisements

পাকিস্তানের পার্লামেন্টে বিরোধীদের আনা আস্থা ভোটের প্রস্তাব নাকচ করে দেশটির ডেপুটি স্পিকার যে সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন, সুপ্রিম কোর্ট তাকে ‘অসাংবিধানিক’ ঘোষণা করেছে। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের আহ্বানে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার যে ঘোষণা দিয়েছিলেন, তাও অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।

প্রধান বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়ালের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের একটি বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) এ রায় ঘোষণা দেন। সেই সঙ্গে জাতীয় পরিষদ পুনরুজ্জীবিত করে শনিবার অধিবেশন শুরুর পাশাপাশি আস্থা ভোটের ফয়সালা করার নির্দেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।

প্রধান বিচারপতি আদেশে বলেন, প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানসহ তার মন্ত্রিসভাকে পুনর্বহাল করতে হবে। শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় ডাকতে হবে জাতীয় পরিষদের অধিবেশন। প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের বিষয়টির নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত অধিবেশন মুলতবি করা যাবে না।

আদালত বলেছে, পার্লামেন্টের অধিবেশনে কোনো এমএনএ’র অংশগ্রহণে সরকার হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। এবং সংবিধানের ৬৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, আদালতের আদেশ পার্লামেন্টের প্রক্রিয়ায় কোনো প্রভাব ফেলবে না।

রায়ে আদালত আরও বলেছে, ‘প্রেসিডেন্টকে আইনসভা ভেঙে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়ার অধিকার প্রধানমন্ত্রীর নেই। আজ পর্যন্ত নেওয়া সব সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়েছে।’

বিচারপতি বান্দিয়ালের নেতৃত্বে এবং বিচারপতি মুনীব আখতার, বিচারপতি আইজাজুল আহসান, বিচারপতি মাজহার আলম ও বিচারপতি জামাল খান মন্দোখেলের সমন্বয়ে গঠিত সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের বৃহত্তর বেঞ্চ মামলাটির শুনানি করছেন।

শুনানির দ্বিতীয় দিন গত সোমবার প্রধান বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়াল বলেছিলেন, ‘সংবিধানের ৫ অনুচ্ছেদ উদ্ধৃত করেও স্পিকার অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করে দিতে পারেন না।’ আর আজ সকালে শুনানি শুরুর পরপরই তিনি বলেন, বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরির খারিজ করে দেওয়া সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন। এ সিদ্ধান্ত ‘ত্রুটিপূর্ণ’।

৩৪২ আসনের পাকিস্তান জাতীয় পরিষদে সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে অন্তত ১৭৩ জন সদস্যের সমর্থন পেতে হবে। কিন্তু তার বিরোধীরা অনাস্থা প্রস্তাব তোলার আগেই ১৭৭ জন সদস্যের সমর্থন সংগ্রহ করে রেখেছে। সেই লজ্জা এড়াতে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা বিরোধী দলগুলোর অনাস্থা প্রস্তাব ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে ৩ এপ্রিল খারিজ করে দেন পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি। এর পরপরই প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে পার্লামেন্ট ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। এই পুরো প্রক্রিয়াকে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন বিরোধীরা। অন্যদিকে সুপ্রিম কোর্ট অনাস্থা প্রস্তাব খারিজের দিনই স্বতঃপ্রণোদিত (সুয়োমোটো) হয়ে নোটিশ দেন। পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়া এবং অনাস্থা প্রস্তাব বাতিলের পদক্ষেপ সাংবিধানিক কিনা সেই প্রশ্নে তিন দিনের শুনানির পর আজ সর্বোচ্চ আদালতের রায় এল।

Advertisements