কয়েক দশক আগেই দেশের বেশিরভাগ রেললাইনের মেয়াদ পেরিয়ে গেছে । এ অবস্থায় ঝুকিঁপূর্ণ লাইন দিয়েই চলছে ট্রেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জরাজীর্ণ রেললাইন সংস্কারের অভাবে বাড়ছে দুর্ঘটনা, কমছে রেলের গতি। অবশ্য দ্রুত সংস্কারে উদ্যোগ নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন রেলমন্ত্রী।
ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা জয়দেবপুর থেকে ময়মনসিংহ রুটের ৯০ কিলোমিটার রেলপথের। ৬০-৭০ বছরের পুরানো মরচে পড়া লোহার স্লিপার, তার উপর দিয়েই চলছে ট্রেন। কোথাও ভেঙ্গে গেছে সেই স্লিপার। আবার পচে নষ্ট হয়ে গেছে কাঠের স্লিপারও।
এখানেই শেষ নয় বেশীরভাগ জায়গায়ই নেই জয়েন্ট ক্লিপ। খুলে গেছে প্রয়োজনীয় নাট বল্টু। স্লিপারের সাথে লোহার পাতকে আটকের রাখার সংযোগ পয়েন্টও বিচ্ছিন্ন কোথাও কোথাও। নাট না থাকায় কাঠের টুকরা ব্যবহার করা হয়েছে কোথাও কোথাও। জরাজীর্ণ লাইনের পুরোটাই বেঁকে গেছে অনেক আগেই।
এলাকাবাসী বলেন, ‘এগুলো ইস্পাতসহ নড়ছে। সবগুলো স্লিপার ভাঙ্গা, যে হুকগুলো দিয়ে স্লিপারগুলো আটকানো সেগুলোও ভাঙ্গা। রেল আসলে এগুলো ১/২ ফুট বের হয়ে যায়।’
সিকি ভাগ পাথরও নেই মাইলের পর মাইল জুড়ে,মাটির নিচে দেবে গেছে লাইন। কয়েক বছর আগেও এই লাইনে ট্রেন চলতো ৫০-৬০ কিলোমিটার বেগে। ঝুঁকি বিবেচনায় ৩০-৩৫ কিলোমিটার করা হয়েছে সম্প্রতি।
এলাকাবাসী আরও বলেন, ‘পাথর নাই, পানি থাকে। স্লিপারগুলো আপ-ডাউন করে। নিচে পানি জমে থাকে। নিচ থেকে কাদা উঠে। ‘
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জরাজীর্ণ রেল লাইনের কারণে বাড়ছে দুর্ঘটনা। সংস্কারের উদ্যোগ না নিলে ভয়াবহ ঝুঁকিতে পড়ছে রেল ব্যবস্থা।
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. শামসুল হক বলেন, ‘রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যেমন রেলের দুর্ঘটনা হয় সাথে সাথে কিন্তু হতাহতের সংখ্যাও বাড়ে। এক্ষেত্রে দুর্ঘটনার কারণটা বেড়ে যায়।’
তবে মন্ত্রী বলছেন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, পর্যায়ক্রমের দেশের সব রেল লাইন সংস্কার করা হবে।
রেলমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আমরা কাজ করছি একসঙ্গে। এই জন্য আমরা দুটা প্রকল্প আলাদা নিচ্ছি। আশা করছি আমরা এই বছরের মধ্যে এই প্রকল্পগুলো পেলে এই সমস্যাগুলো আর থাকবে না।’
বেশিরভাগ রেলসেতুও ঝুঁকিপূর্ণ বলে সম্প্রতি জানিয়েছে রেলের প্রকৌশল বিভাগ।