Tulip Siddique
Advertisements

যুক্তরাজ্যের ইকোনমিক সেক্রেটারি টু দি ট্রেজারি এবং সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিককে ঘিরে বিতর্ক ক্রমশ জোরালো হচ্ছে। লন্ডনে ফ্ল্যাট উপহার পাওয়া নিয়ে মিথ্যাচারের অভিযোগ উঠায় তার ওপর পদত্যাগের চাপ বাড়ছে। কেলেঙ্কারির ঘটনায় মন্ত্রিত্ব হারানোর ঝুঁকির মুখে রয়েছেন তিনি।

লন্ডনের একটি ফ্ল্যাট নিয়ে অভিযোগ ওঠার পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার তার নৈতিক মানদণ্ড বিষয়ক উপদেষ্টা স্যার লরি ম্যাগনাসকে বিষয়টি তদন্তের অনুরোধ জানিয়েছেন। যদিও ডাউনিং স্ট্রিট জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী এখনো টিউলিপের প্রতি আস্থা রাখছেন।

টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, উত্তর লন্ডনের দুই শয্যাকক্ষের একটি ফ্ল্যাট তার বাবা-মায়ের নামে নিবন্ধিত হলেও সেটি আসলে বাংলাদেশে তার খালার রাজনৈতিক দলের একজন ঘনিষ্ঠ সহযোগীর উপহার। প্রথমে টিউলিপ দাবি করেছিলেন, ফ্ল্যাটটি তার বাবা-মা কিনেছিলেন এবং এমপি হওয়ার আগে তিনি সেখানে বসবাস করতেন। তবে ২০২২ সালে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তোলার পর আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন তিনি।

সম্প্রতি লেবার পার্টি জানিয়েছে, ফ্ল্যাটটি আসলে টিউলিপের বাবা-মাকে তাদের এক ‘পরিচিতজন’ উপহার হিসেবে দিয়েছিলেন। ওই ব্যক্তি বাংলাদেশি ডেভেলপার আবদুল মোতালিফ, যার সঙ্গে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে।

হান্টিংডনের টোরি এমপি বেন ওবিস-জেক বলেছেন, “টিউলিপ সিদ্দিক এবং তার সম্পত্তি নিয়ে বেশ কিছু বিতর্কিত তথ্য সামনে এসেছে। এর চেয়েও গুরুতর হলো, বাংলাদেশে একটি অর্থ আত্মসাতের মামলায় তার নাম এসেছে। এই পরিস্থিতিতে ইনডিপেনডেন্ট অ্যাডভাইজার অন মিনিস্ট্রিয়াল স্ট্যান্ডার্স দ্বারা বিষয়টি তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।”

হ্যারো ইস্টের টোরি এমপি বব ব্ল্যাকম্যান বলেছেন, “টিউলিপ সিদ্দিককে তার সম্পত্তি নিয়ে পরিষ্কার ব্যাখ্যা দিতে হবে। যদি তিনি তা করতে ব্যর্থ হন, তবে মন্ত্রী হিসেবে তার অবস্থান ধরে রাখা উচিত নয়।”

যুক্তরাজ্যের ডেইলি মেইল এবং দ্য মেইল অন সানডের প্রতিবেদন অনুসারে, ফ্ল্যাটটির বর্তমান বাজারমূল্য ৭ লাখ পাউন্ড। এটি একজন বাংলাদেশি ডেভেলপারের কাছ থেকে তার পরিবার উপহার হিসেবে পেয়েছেন বলে অভিযোগ। ওই ডেভেলপারের সঙ্গে বাংলাদেশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক সংযোগ রয়েছে।

এদিকে বাংলাদেশে টিউলিপ এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ৩.৯ বিলিয়ন পাউন্ড আত্মসাতের অভিযোগের তদন্ত চলছে।

৪২ বছর বয়সী টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের আর্থিক খাতের দুর্নীতি বন্ধের দায়িত্বে রয়েছেন। তবে তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো নিয়ে ব্রিটিশ সংসদ এবং টোরি এমপিদের মধ্যে চাপ ক্রমেই বাড়ছে। যদি তিনি অভিযোগের যথাযথ ব্যাখ্যা দিতে না পারেন, তাহলে তার মন্ত্রী পদ হারানো সময়ের ব্যাপার বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো তদন্তসাপেক্ষ। তবে তার মন্ত্রীত্ব নিয়ে তৈরি হওয়া অনিশ্চয়তা ব্রিটিশ রাজনীতিতে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এখন দেখার বিষয়, ব্রিটিশ সরকার ও লেবার পার্টি তার বিরুদ্ধে কী সিদ্ধান্ত নেয়।

Advertisements