সাবাহ্ গার্ডেনে
Advertisements

গাজীপুরের সদর উপজেলার বাঘের বাজার এলাকায় সাবাহ্ গার্ডেনের অবস্থান। রিসোর্টটি ৩৬ বিঘা জমির উপর ২০০৪ সালে গড়ে তোলেন সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি নেতা হাসান উদ্দিন সরকার। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে রিসোর্টটিতে টাকার বিনিময়ে কৌশলে অসামাজিক কার্যকলাপ অব্যাহত রেখেছে কর্তৃপক্ষ।

গত তিনদিনের অনুসন্ধানে (২৬, ২৭ ও ২৮ ফেব্রুয়ারি) জানা যায়, স্কুল-কলেজের উঠতি বয়সের শিক্ষার্থী প্রতিষ্ঠান ফাঁকি দিয়ে রিসোর্টটিতে এসে দীর্ঘ সময় কাটায়। এদের মধ্যে প্রেমিক প্রেমিকাদের সংখ্যা-ই বেশি। ঘন্টা প্রতি এক হাজার টাকা খরচ করলেই পাওয়া যাচ্ছে প্রাইভেট বিশ্রামের সুবিধা। রিসোর্টটির ভেতরে ৬ টি দৃষ্টি নন্দন পুকুর রয়েছে। পুকুরগুলোর উপরে নান্দনিক ডিজাইনে ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। যেগুলোতে প্রেমিক প্রেমিকারা প্রতি ঘন্টায় এক হাজার টাকা দিলে-ই একসঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ পান। এছাড়াও একটু ভেতরে ঢুকে বা’পাশের পুকুরের দিকে গেলেই দেখা মিলে প্রেমিকযুগলদের চুম্বনদৃশ্য।

পার্কটিতে এসে রুমবুকিং নিয়ে যৌন চাহিদা মিটিয়েছেন এমন কয়েকটি কপোত-কপোতীদের সঙ্গে কথা হয়। তারা নাম পরিচয় গোপন রেখে বলেন, ভেতরে প্রবেশ মূল্য ১০০ টাকা প্রতি জন। রুমভাড়া নিয়েছি ২ ঘন্টার জন্য, ২০০০ টাকায়। এখানে প্রশাসনের দায়িত্বশীলদের চোখে ধুলো দিয়ে তারা এসব অসামাজিক কার্যকলাপ অব্যাহত রেখেছে বলে অনুসন্ধানে উঠে এসেছে। পার্কটির অভ্যন্তরে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বেশ কয়েকজনকে ওয়াকিটকি ব্যবহার করতে দেখা গেছে। পার্কটির দায়িত্বে থাকা সালাউদ্দিন মনির বলেন, এখানে প্রেমিক প্রেমিকারা ঘুরতে আসেন অনেকেই। তবে রুমভাড়া দেওয়া হয় না। প্রমাণ রয়েছে, এমন তথ্য জানালে কিছু সময় পর অন্য আরেকজনকে দিয়ে ফোন করে দেখা করার অনুরোধ জানান তিনি। পার্কটির প্রতিষ্ঠাতা বিএনপি নেতা হাসান উদ্দিন সরকারের সন্তান সাইফুল ইসলাম বিপ্লব সরকার বর্তমানে পার্কটি দেখাশুনা করছেন। তিনি দেশের বাইরে থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

পার্কের দায়িত্বে থাকা সালাউদ্দিন মনির অসামাজিক কর্মকাণ্ডের বিষয়টি অস্বীকার করলেও স্বীকার করেছেন মূল ফটকের দায়িত্বে থাকা একজন নিরাপত্তাকর্মী। তিনি বলেন, ১৩০০ টাকা থেকে শুরু করে ২৫০০ টাকা পর্যন্ত রুমভাড়া দেয়া হয়। এখানে প্রেমিক প্রেমিকারা রুমভাড়া নিয়ে মনের ইচ্ছেমতো সময় কাটাতে পারে।

এসব বিষয়ে গাজীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফয়সাল হক বলেন, অসামাজিক কর্মকাণ্ডের বিষয়টি প্রথম শুনলাম। এটি মোবাইল কোর্টে বিচার্য না। আমি এ বিষয়ে ওসি’র সঙ্গে কথা বলবো। পুলিশের অভিযানের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বলবো।

এ বিষয়ে জয়দেবপুর থানা অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) ইব্রাহিম খলিল বলেন, বিষয়টি জানা ছিলনা। শীঘ্রই অভিযান পরিচালনা করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হবে।

Advertisements