গাজীপুরের শ্রীপুরে যুবদল নেতার রামদা বাহিনীর মহড়া
Advertisements

গাজীপুরের শ্রীপুরে একটি বাজারের দখল নিতে প্রকাশ্যে রামদা বাহিনী নিয়ে মহড়া দিয়েছেন যুবদল নেতা জাহাঙ্গীর আলম পিন্টু। শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেল পৌনে ৫টার দিকে মাওনা ইউনিয়নের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের এমসি বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে পালাতে বাধ্য হন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, যুবদল নেতা জাহাঙ্গীর আলম পিন্টুর নেতৃত্বে প্রায় ৩০-৪০ জন সন্ত্রাসী মাথায় লাল গামছা পেঁচিয়ে রামদা, লোহার রড, হকিস্টিক ও বাঁশের লাঠি হাতে মহড়া দেয়। এ সময় তারা বিভিন্ন ভীতিকর স্লোগান দেয় এবং কয়েক দফা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়।

এলাকাবাসীর দাবি, অস্ত্র মহড়া শেষে স্বপ্নপুরী হোটেলের সামনে এসে হ্যান্ড মাইকে দোকানিদের উদ্দেশ্যে জাহাঙ্গীর আলম পিন্টু ঘোষণা দেন, “এই মুহূর্তে আমি বাজারে চাঁদা উঠানো শুরু করবো! এখন থেকে এমসি বাজার আমার নিয়ন্ত্রণে চলবে।” এরপরই তার অনুসারীরা ভাসমান দোকানগুলোতে চাঁদা আদায় শুরু করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন দোকানদার জানান, সন্ত্রাসীরা দোকানিদের হুমকি দিয়ে বলে, নিয়মিত চাঁদা না দিলে ব্যবসা করতে দেওয়া হবে না। আতঙ্কে অনেক ব্যবসায়ী ইতোমধ্যে চাঁদা দিয়েছেন।

ঘটনার পরপরই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি কেন্দ্রীয় যুবদলের নজরে এলে রাতে সহ-দপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূঁইয়ার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে জাহাঙ্গীর আলম পিন্টুকে দলীয় সব কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার করা হয়।

অন্যদিকে, অভিযুক্ত যুবদল নেতা জাহাঙ্গীর আলম পিন্টু দাবি করেন, গাজীপুর জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম সরকার আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে মিলে নিয়মিত চাঁদা তোলেন। এ নিয়েই তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। তিনি অভিযোগ করেন, তার মিছিলের সময় আরিফ সরকারের অনুসারীরা অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিয়েছে এবং তাকে দোষী করার চেষ্টা করছে। তবে চাঁদা দাবি সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে তিনি পরে কথা বলবেন বলে ফোন রেখে দেন।

এ বিষয়ে গাজীপুর জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম সরকার বলেন, “জাহাঙ্গীর আলম চিহ্নিত সন্ত্রাসী। সে তার অনুসারীদের নিয়ে বাজার দখলের উদ্দেশ্যে প্রকাশ্যে মহড়া দিয়েছে এবং চাঁদা দাবি করেছে। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।”

শ্রীপুর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) শামীম আহম্মেদ জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল এবং বিএনপির দুই গ্রুপের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে একদল সন্ত্রাসী মহড়া দেয়। দেশীয় অস্ত্রের মহড়া ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা সত্য হলেও এখনো কোনো পক্ষ অভিযোগ দায়ের করেনি। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেবে।

Advertisements