সবুজ ভবিষ্যত গড়ার জন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
Advertisements

নদীর পানি প্রবাহের ক্ষেত্রে খাল সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কিন্তু এ খালগুলো অনিয়ন্ত্রিতভাবে ভরাট করে বন্ধ করা হচ্ছে। আবার স্লুইস গেট নিয়েও অত্যধিক বিড়ম্বনা রয়েছে। এমন পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে খাল রক্ষায় কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নদীর সঙ্গে সংযোগ খাল যেন কোনোভাবেই বন্ধ না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।

গতকাল রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এসব নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। গতকালের বৈঠকে নারায়ণগঞ্জে বাংলাদেশের বর্ডার গার্ড (বিজিবি) নতুন ব্যাটালিয়নসহ নয় প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ হাজার ২৩৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা। বৈঠকে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত থেকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কাছে তথ্য উপস্থাপন করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান।

কুষ্টিয়া-মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ আঞ্চলিক মহাসড়কটির কুষ্টিয়া থেকে মেহেরপুর পর্যন্ত যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্পটিতে ব্যয় হবে ৬৪৩ কোটি টাকা। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের নবসৃজিত নারায়ণগঞ্জ ব্যাটালিয়নের অবকাঠামোগত বিভিন্ন স্থাপনা প্রকল্পে ব্যয় হবে ২৩৭ কোটি ২১ লাখ টাকা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাকাশ অবলোকন কেন্দ্র প্রকল্পে ব্যয় হবে ২১৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা, বাংলাদেশ ইকোনমিক জোনস ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টে ব্যয় ধরা হয়েছে ৮১ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সক্ষমতা বৃৃদ্ধিকরণ প্রকল্পে ব্যয় হবে ৮৮ কোটি টাকা। দরিদ্র মহিলাদের জন্য সমন্বিত পল্লী কর্মসংস্থান সহায়তা প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৪৬ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।

লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি ও কমলনগর উপজেলাধীন বড়খেরী ও লুধুয়াবাজার এবং কাদের পণ্ডিতের হাট এলাকা ভাঙন থেকে রক্ষাকল্পে মেঘনা নদীর তীর সংরক্ষণ প্রকল্পে ব্যয় হবে ৩ হাজার ৮৯ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। মাতারবাড়ী আল্ট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ারড পাওয়ার প্রকল্পে ব্যয় ২৩২ কোটি ২৩ লাখ টাকা। এছাড়া উপজেলা পর্যায়ে মহিলাদের জন্য আয়বর্ধক প্রশিক্ষণ প্রকল্পের ব্যয় হবে ৩০৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, কোনো প্রকল্পের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র চেয়ে আবেদনের পর একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অধিদপ্তর জবাব না দিলে সেটিকে তাদের মৌন সম্মতি হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। যদি একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তর জবাব না দেয়, তাহলে দেরি করা যাবে না। সেটিকে মৌন সম্মতি ধরে কাজ করতে হবে। কোনো প্রকল্পের আওতায় গাছ কাটা হলে সেখানে প্রচুর নতুন গাছ লাগানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘ইজ অব ডুয়িং বিজনেস’-এর ক্ষেত্রে পরিবেশ উন্নয়নে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হবে। কেননা আমাদের পরিবেশ যেমন বাঁচাতে হবে, তেমনি উন্নয়ন কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখতে হবে। শিল্পকারখানাও করতে হবে। এসব বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দিয়েছেন।

গতকালের একনেক বৈঠকে প্রাইমারি স্কুল মিল প্রকল্পে প্রায় ১৭ হাজার ২৯০ কোটি ২৩ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প উপস্থাপন করা হয়। প্রকল্পটি কোনো ধরনের ফিজিবিলিটি স্টাডি ছাড়াই প্রস্তাবে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু সেটি ফেরত পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পের কার্যক্রমের মডালিটি ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া ক্রটিপূর্ণ হওয়ার কারণে ফেরত দিয়েছে একনেক কমিটি। সেখানেও প্রধানমন্ত্রী বেশকিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। এর মধ্যে স্কুল ফিডিংয়ের বিষয়ে কমিউনিটিকে আরো শক্তিশালীভাবে সংযুক্ত করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা সচিব মোহাম্মদ জয়নুল বারী, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম, আইএমইডি সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মোহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য মামুন-আল-রশিদ, মোছাম্মৎ নাছিমা বেগম প্রমুখ।

সূত্রঃ বণিক বার্তা

Advertisements