ইরানের সামরিক শক্তি আমেরিকা ও তার মিত্রদের জন্য বড় হুমকি
Advertisements

মার্কিন সেনাবাহিনীর সম্ভাব্য প্রধান জেনারেল মাইকেল কুরিলা সিনেটে সশস্ত্র বাহিনী সংক্রান্ত কমিটিতে নিজের যোগ্যতা যাচাই সংক্রান্ত বৈঠকে বলেছেন, ইরান নিজের সামরিক সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য মধ্যপ্রাচ্যে বিভিন্ন প্রক্সি গ্রুপ বা সামরিক সংগঠন গড়ে তুলেছে এবং তারা ওই অঞ্চলে আমেরিকা ও তার মিত্রদের জন্য অনেক বড় হুমকিতে পরিণত হয়েছে।

তিনি দাবি করেছেন, ইরানের সামরিক শক্তির বড় মাধ্যম হচ্ছে, উন্নতমানের ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, অত্যাধুনিক ড্রোন ও শক্তিশালী নৌবাহিনী এবং এসব ক্ষেত্রে ইরানের শক্তিমত্বা বেড়েই চলেছে। তিনি বলেন, ইরানের স্বল্প, মধ্যম ও দূরপাল্লার বিভিন্ন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে যা কিনা তার ভাষায় সমগ্র এ অঞ্চলের জন্য বিপদজনক হতে পারে।

মার্কিন সেনাবাহিনীর সম্ভাব্য প্রধান জেনারেল মাইকেল কুরিলা আরো বলেছেন, ইরানের হাতে ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য যেসব ক্ষেপণাস্ত্র ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি রয়েছে তা মহাকাশে আমেরিকার যেসব গোয়েন্দা ও অনুসন্ধান কার্যক্রম রয়েছে তার জন্য বিরাট হুমকি। এ ছাড়া, ইরানের নৌবাহিনীর ক্রুজ প্রযুক্তি ইরানের অবস্থানকে আরো শক্তিশালী করেছে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইরানের সামরিক শক্তির ব্যাপারে মার্কিন সেনা কমান্ডারের স্বীকারোক্তি থেকে বোঝা যায় দশকের পর দশক ধরে কঠোর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা সত্বেও ইরান সামরিক প্রযুক্তি ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে যা কিনা যুক্তরাষ্ট্রকে চিন্তিত করে তুলেছে। একতরফা কিংবা বহুপক্ষীয় নিষেধাজ্ঞা সত্বেও ইরান আঞ্চলিক পরাশক্তিতে পরিণত হয়েছে এবং আঞ্চলিক কিংবা আন্তর্জাতিক যে কোনো হুমকি বা আগ্রাসন মোকাবেলায় সক্ষম।

ওয়াশিংটন সবসময়ই এ অঞ্চলে ইরানভীতি ছড়ানোর চেষ্টা করে আসছে যাতে ইরানের সামরিক শক্তিকে এ অঞ্চলের আরব দেশগুলোর জন্য হুমকি হিসেবে তুলে ধরা যায়। এ ভাবে আমেরিকা আরব দেশগুলোকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ওয়াশিংটনের কাছ থেকে কোটি কোটি ডলার মূল্যের অস্ত্র কিনতে উদ্বুদ্ধ করছে। মার্কিন সরকার আরব নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার কথা বলে মধ্যপ্রাচ্যে কয়েক দশক ধরে সামরিক উপস্থিতি বজায় রেখেছে। কিন্তু তারপরও এ অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা, নিরাপত্তাহীনতা ও সন্ত্রাসবাদের বিস্তার ঘটেছে।

সামরিক ক্ষেত্রে ইরানের নীতি হচ্ছে আত্মরক্ষামূলক এবং এ ক্ষেত্রে সব রকম প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। ইরানের সমর শক্তির অন্যতম ভিত্তি হচ্ছে ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র যা কিনা শত্রু বিশেষ করে আমেরিকা ও ইসরাইলের জন্য বড় দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মার্কিন বিশ্লেষক রবিন রাইট বলেছেন, সুনির্র্দিষ্ট লক্ষ্যে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর ক্ষমতা ইরানের রয়েছে। মার্কিন গোয়েন্দা বিভাগও জানিয়েছে বর্তমানে ইরান মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে বড় ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন ও মজুদকারী দেশে পরিণত হয়েছে।

Advertisements