আর চোখের পানি ফেলব না
Advertisements

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, কর্মীরা নেতার সঙ্গে কথা বলতে পারেন, নেতারা কর্মীর সঙ্গে কথা বলেন। আমি যদি একজন আওয়ামী লীগের কর্মী হই- সব ষড়যন্ত্রের মধ্যে থেকেও আমি চেয়েছিলাম সত্যটা প্রতিষ্ঠিত হোক। সেই পথ তৈরি করে রাখা হয়নি। শুধু আমার বিরুদ্ধে নালিশই গিয়েছে। দীর্ঘ ১৮ মাস আমি চোখের পানি ফেলেছি। আজকে আর চোখের পানি ফেলব না।

সোমবার আওয়ামী লীগ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার হওয়ার পর মঙ্গলবার (১৬ মে) দুপুরে গাজীপুর মহানগরের ছয়দানা এলাকায় নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় তার সঙ্গে তার মা জায়েদা খাতুন উপস্থিত ছিলেন।

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আজকে গাজীপুরে এসে দেখেন, লাখ লাখ মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি একসঙ্গে হয়ে গাজীপুরে ভোট করতে আসছেন। এসবের কোনো দরকারই ছিল না। আমি, আমার মা এবং আওয়ামী লীগ যদি একসঙ্গে হয়ে কাজ করতাম তাহলে আওয়ামী লীগের নেতাদের গাজীপুরে আসতে হতো না; বাসায় বাসায় যেতে হতো না। প্রশাসনের লোক যারা টেবিল ঘড়ির নির্বাচন করছেন তাদের বাসায় যাচ্ছেন। হুমকি দিচ্ছেন, এতে কি আপনারা আপনাদের সন্তানের মুখে বিষ ঢেলে দিচ্ছেন না? আমি কেন্দ্রীয় নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করব। আপনারা নেত্রীকে সত্যটা জানান, উনি সত্যটা জানুক, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর ওপর হয়রানি করা হচ্ছে, অবিচার করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমার মা এসব অন্যায়ের প্রতিবাদ স্বরূপ এখানে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন। সন্তান হিসেবে আমি আমার মায়ের পাশে দাঁড়িয়েছি। আমার মা বলেছেন, তুমি যদি অন্যায় কিছু করো এর বিচার এই শহরের মানুষ আগামী ২৫ তারিখ ভোটের মাধ্যমে করবে।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ হচ্ছে আমার ভালোবাসার জায়গা, নৌকা হচ্ছে আমার একটা শ্রদ্ধার জায়গা। প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন আমার একটা শ্রদ্ধার জায়গা; কিন্তু এখানে আজমত উল্লা খানকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এই আজমত উল্লাই আমার সব ক্ষতি করার মূল পরিকল্পনায় জড়িত ছিলেন। আজমত উল্লা আমার বাসায় এসে খেয়েছেন। এই বাসায় বসে আমার ক্ষতিগুলো করেছেন। তাই আমার মা বলেছেন- তুমি আজমত উল্লার ভোটে যাইবা না, তুমি আমার ভোটে থাক। এখন আপনারাই বলেন, আমি কি আজমত উল্লার সঙ্গে থাকব? নাকি আমার মায়ের পাশে থাকব?

কেন্দ্রীয় নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সাবেক এই মেয়র বলেন, আপনারা গাজীপুরে আসেন দাওয়াত খেয়ে যান, কর্মীদের হুমকি দিয়েন না, হয়রানি করবেন না। নির্বাচন কমিশন চাচ্ছে এখানে একটি সুষ্ঠু সুন্দর ভোট করতে, সরকারও চাচ্ছে সুন্দর ভোট হোক। কিন্তু ভোট দিতে গিয়ে যদি এক ভাইয়ের সঙ্গে আরেক ভাইয়ের মারামারি করান, পেশিশক্তি ব্যবহার করেন, তাহলে নির্বাচন না করে সরাসরি ডিক্লিয়ার করে নিয়ে যান।

জাহাঙ্গীর আরও বলেন, আমার আওয়ামী লীগে কোনো পদ নেই। আমার সদস্য পদও আওয়ামী লীগে নাই। আমি আওয়ামী লীগের একজন সাধারণ সমর্থক। একজন সাধারণ সমর্থককে বহিষ্কার করতে আপনাদের কেন কেন্দ্রীয় কমিটি লাগবে। তিনি পার্টির কাছে আবেদন করেন, আমাকে পার্টির সমর্থক হিসেবে থাকতে দেন। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক দলের (নৌকার) বিরুদ্ধে গিয়ে গত উপজেলা নির্বাচনে মিছিলসহ গণসংযোগের বিষয়ে কথা বলেছেন; কিন্তু দল তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয় নাই বলেও উল্লেখ করেন।

Advertisements