আমেরিকার একটি পর্যবেক্ষণ সংস্থা আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা পুরোপুরি প্রত্যাহারের আগেই এই বলে হুঁশিয়ার করে দিয়েছিল যে, পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণ বন্ধ করে দেয়া হলে আফগান বিমান বাহিনীর সক্ষমতা ধসে পড়বে। মার্কিন বার্তা সংস্থা এসোশিয়েটেড প্রেস বা এপি মঙ্গলবার এ খবর জানিয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, আমেরিকার আফগানিস্তান বিষয়ক বিশেষ ইনস্পেক্টর জেনারেল জন সুপকো ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পেন্টাগনকে এক চিঠি দিয়ে সতর্ক করেছিলেন যে, আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা পুরোপুরি প্রত্যাহার করা হলে আফগান বিমান বাহিনীর পক্ষে নিজের পায়ে দাঁড়ানো সম্ভব হবে না।
এপির খবরে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, আফগান বিমান বাহিনীকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ না দেয়ার কারণে এই বাহিনী শেষ দিন পর্যন্ত তাদের যুদ্ধবিমানগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য মার্কিন ঠিকাদারদের ওপর নির্ভরশীল ছিল।
তালেবানের বিরুদ্ধে গত ২০ বছরের যুদ্ধে মার্কিন বিমান বাহিনীর সহযোগিতা কাবুল সরকারকে যথেষ্ট শক্তি যুগিয়েছে। কিন্তু ওই সহযোগিতা বন্ধ করার পাশাপাশি আফগানি বিমান বাহিনীকে সক্ষম করে গড়ে না তোলার কারণে ২০২১ সালের আগস্ট মাসে ক্ষিপ্রগতিতে তালেবান গোটা আফগানিস্তানের দখল নেয়।
এপি এমন সময় এ খবর দিল যখন ওয়াশিংটন দাবি করেছে, ২০০১ সালে সহযোগী দেশগুলোকে নিয়ে আফগানিস্তান দখল করার পর থেকে গত ২০ বছরে দেশটিতে সামরিক তৎপরতা চালানোর কাজে আমেরিকা প্রায় এক ট্রিলিয়ন ডলার অর্থ খরচ করেছে। এছাড়া, ২০০১ সালে তালেবান সরকারের পতনের পর দেশটির পুনর্গঠন কাজে খরচ হয়েছে ১৪৫ বিলিয়ন ডলার এবং আফগানিস্তানের সামরিক বাহিনীর পুনর্গঠন ও শক্তিশালী করার কাজে আরো সাড়ে আট বিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে।
মার্কিন সমর্থিত প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলে ২০২১ সালের ১৫ আগস্ট আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে তালেবান।ফলে ২০০১ সালের শেষদিকে মার্কিন সেনা অনুপ্রবেশের পরপরই যে তালেবান সরকারের পতন হয়েছিল, ২০২১ সালে সেই মার্কিন সেনারা আফগানিস্তানের মাটিতে থাকতেই আবার সেই তালেবান দেশটির ক্ষমতা পুনর্দখল করে।
পার্সটুডে