অনুমোদিত রুটের বাইরে আসলেই ভিআইপি’র বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
Advertisements

ভিআইপি পরিবহন গাজীপুরে অবৈধ ভাবে কিভাবে চলছে এমন প্রশ্নের জবাবে গাজীপুরের রিজিওনাল ট্রান্সপোর্ট কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক এস.এম. তরিকুল ইসলাম জানান, ‘ভিআইপি পরিবহনের যে রুট পারমিট চেরাগালী পর্যন্ত বা তারা জয়দেবপুর পর্যন্ত যে অবৈধ ভাবে চলে এমন তথ্য আজ পর্যন্ত আমাকে কেউ দেয়নি,দিবে কিভাবে হয়ত সবাই ম্যানেজড; যাই হোক আপনারা জানিয়েছেন আমরা ব্যবস্থা নিব।’

রিজিওনাল ট্রান্সপোর্ট কমিটি, ঢাকা মেট্রো’র সুত্রে জানা যায়, ভিআইপি পরিবহনের অনুমোদিত রুট নং এ-২০৭ যার শুরু টঙ্গীর চেরাগালী হতে আজমপুর, মহাখালী, ফার্মগেট, মানিক মিয়া, সিটি কলেজ, নীলক্ষেত হয়ে ঢাকেশ্বরী এতিমখানা পর্যন্ত।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, গাজীপুরে ভিআইপি পরিবহনের শেষ/শুরু সীমানা টঙ্গীর চেরাগালী পর্যন্ত থাকলেও অবৈধভাবে প্রায় ষোল কিলোমিটার সড়ক দাবড়িয়ে বোর্ডবাজার, বাইপাস, চান্দনা চৌরাস্তা, শিববাড়ী হয়ে চলে আসে গাজীপুর সদরের জয়দেবপুরস্থ মাঝিরখোলা আস্তানায়। প্রতি দশ মিনিট অন্তর অন্তর যাত্রী বোঝাই করে ছেড়ে যায় মাঝিরখোলা স্ট্যান্ড থেকে। হিস্যা মতে, প্রতিমাসে ভিআইপির শতাধিক বাস বেআইনি ভাবে টঙ্গি থেকে মাঝিরখোলা পর্যন্ত চলাচল করে যাত্রীদের কাছ থেকে প্রায় চব্বিশ লক্ষ টাকা ভাড়া আদায় করে। নাম প্রকাশ না করার ইচ্ছায় ভিআইপির একজন পুরনো গাড়ি চালক বলেন, ভিআইপি পরিবহনের ব্যানারে একশর উপরে গাড়ি চললেও রুট পার্মিটে অনুমোদন রয়েছে অনেক কম সংখক গাড়ির।

চাউড় রয়েছে মাঝিরখোলায় ভাড়াকৃত ভূমিতে গড়ে ওঠা ভিআইপি পরিবহনের স্ট্যান্ডের ভৃমি মালিক আওয়ামীলীগ নেতা এবিএম নাসিরের সেল্টারে ভিআইপি পরিবহন অবৈধ ভাবে দাপুটে স্টাইলে গাজীপুরের সড়ক দাবড়ে বেড়ায়; এসব বিষয়ে এবিএম নাসিরের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, তিনি ভিআইপি পরিবহনের কোন অনৈতিক কাজের সাথে জড়িত নয়, তিনি শুধু স্ট্যান্ডের ভূমির মালিক মাত্র, বরং তিনি জানান, পুলিশ-প্রশাসন, শ্রমিক নেতা সহ আওয়ামীলগের অনেক নেতাকেই ম্যানেজ করে ভিআইপি পরিবহন চলে।

অনিয়মের বিষয়ে জানতে ভিআইপি পরিবহনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুর রাজ্জাককে খোঁজতে ভিআইপ’র মাঝিরখোলাস্থ অফিসে গেলে তাকে না পেয়ে তার মোবাইল নং চাইলে সেখানকার স্টাফরা রাজনৈতিক পরিচয়ে এই প্রতিবেদককে মোবাইল নং না দিয়েই চলে যেতে বলেন; পরবর্তীতে ভিআইপ ‘র পরিচালক রিপন দেওয়ানের কাছে অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘এটাই কৌশল পরিবহন ব্যবসা এভাবেই চালাতে হয়।’

আঞ্চলিক পরিবহন কমিটি, ঢাকা মেট্রো’র সদস্য সচিব ও বিআরটিএ’র ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক শফিকুজ্জামান ভূইয়ার পক্ষে সহকারী পরিচালক মো: শফিকুল আলম সরকার ভিআইপি পরিবহনের ব্যাপারে বলেন, গাজীপুরের সড়কে বিআরটি প্রজেক্টের কাজ চলার কারণে স্বাভাবিক ভাবেই রাস্তা সংকুচিত হয়ে আসছে তাই আমরা ভিআইপি পরিবহনকে অনুমোদিত রুটের সীমানার পরে চলাচলে কঠোরভাবে নিষেধ করেছি যাতে করে সড়কে যানজট বৃদ্ধি না হয়। তারপরেও কিভাবে চলছে এমন প্রশ্নের যবাবে তিনি বলেন, যেহেতু এই পরিবহনগুলি গাজীপুরে অনিয়ম করছে সেহেতু চাইলেই গাজীপুরের বিআরটিএ অফিস ও জেলা প্রশাসন ভিআইপির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে।

জেলা প্রশাসক তরিকুল ইসলামের সাথে ভিআইপি পরিবহনের অনিয়মের বিষয়ে আলাপকালে উপস্থিত অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবুল কালাম জানান, ‘আমরা প্রয়োজনে ভিআইপি পরিবহনের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট করব।’ এই প্রসঙ্গের রেশে জেলা প্রশাসক তরিকুল ইসলাম আরও জানান, ‘শুধুই মোবাইল কোর্ট নয়, অনুমোদিত রুটের বাইরে আসলেই ভিআইপির সকল পরিবহনকে জব্দ করা হবে।’

প্রতিনিধি/ ইয়ামিন হোসেন পাটোয়ারী

Advertisements