নোনা জলের কাব্য একটি সৎ সিনেমা
Advertisements

রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত পরিচালিত প্রথম সিনেমা ‘নোনা জলের কাব্য’। এক বছর ধরে নানা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উত্সব মাতিয়ে এবার সিনেমাটি দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেতে যাচ্ছে। আগামী ২৬ নভেম্বর থেকে হলে দেখা যাবে ছবিটি। এর পরিবেশনার দায়িত্বে রয়েছে স্টার সিনেপ্লেক্স।

সম্প্রতি ঢাকা ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দিলেন সিনেমাসংশ্লিষ্টরা। ওই অনুষ্ঠানে জনপ্রিয় চলচ্চিত্র নির্মাতা অমিতাভ রেজা চৌধুরী নোনা জলের কাব্যকে একটি সত্ সিনেমা হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, ‘সুমিত একটা সাহসী গল্প বলতে চেয়েছে। যেটা এ সময়ে প্রচণ্ড প্রাসঙ্গিক। যে গল্পটা বলা দরকার ছিল। খুব পরিশ্রম করে সিনেমাটি বানিয়েছে। দেশ-বিদেশে প্রশংসিতও হয়েছে। এ সিনেমায় কোনো ধান্দা নেই। আমি বলব, নোনা জলের কাব্য একটি সত্ সিনেমা।’

পরিচালক সুমিত জানান, দেশের সমুদ্র উপকূলবর্তী প্রান্তিক জেলেদের দৈনন্দিন জীবনযাপন, প্রতিকূলতার মুখে টিকে থাকার লড়াই উঠে আসবে চলচ্চিত্রটিতে। জেলেদের সামাজিক রীতিনীতি ও সংস্কারও এ সিনেমার উপজীব্য।

তিনি বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় সিডরের কয়েক মাস পরে আমি কুয়াকাটা গিয়ে গ্রামের জেলেদের সঙ্গে মিশেছিলাম। তখন দেখেছি সিডরের প্রভাব কাটিয়ে তারা কীভাবে নিজেদের গুছিয়ে নিয়েছে। জীবনযাপনের এ সংগ্রামটা আমাকে খুব নাড়িয়ে দেয়। পরে নিউইয়র্কে সিনেমা নির্মাণের ওপর পড়াশোনা করতে গিয়ে টিচাররা আমাকে অ্যাসাইনমেন্ট দিয়েছিলেন একটি ফিচার ফিল্মের স্ক্রিপ্ট লিখতে। আমি তখন এ গল্পটা নিয়ে লিখতে বসি এবং কোনো প্রকার কষ্ট-যন্ত্রণা ছাড়াই গল্পটা লিখতে পারি আমি। সংগ্রামটা খুব কাছ থেকে দেখেছিলাম বলেই এটা সম্ভব হয়েছে।’

সিনেমার শুটিং খুবই চ্যালেঞ্জিং ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা ঝড়ের মধ্যে সাগরে শুটিং করেছি। এমনও হয়েছে আমরা শুটিং করছি, ঝড়ের ঝাপটায় সাগরতীরের বালি আমাদের চোখেমুখে চলে যাচ্ছে। তবু আমার শিল্পীরা চরিত্রের ভেতর থেকে শুটিং করে যাচ্ছে।’

নোনা জলের কাব্য সিনেমায় অভিনয় করেছেন ফজলুর রহমান বাবু, শতাব্দী ওয়াদুদ, তিতাস জিয়া ও তাসনোভা তামান্না। সিনেমাটির আবহসংগীত পরিচালনা করেছেন অর্ণব।

সিনেমাটি প্রসঙ্গে জনপ্রিয় অভিনেতা ফজলুর রহমান বাবু বলেন, ‘আমি এখানে চেয়ারম্যানের চরিত্রে অভিনয় করেছি। বেশ ক্যারিশমাটিক একটি চরিত্র। সিনেমাপ্রেমীদের অনুরোধ করব হলে গিয়ে সিনেমা দেখুন।’

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, লন্ডন, বুসান, গুটেনবার্গ, সাও পাওলো, তুরিন, সিয়াটল, সিঙ্গাপুরসহ বেশকিছু আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উত্সবে দর্শক ও সমালোচকদের প্রশংসা কুড়িয়েছে ‘নোনা জলের কাব্য’। এবার যাচ্ছে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন COP26-এ। স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো শহরে অনুষ্ঠেয় গুরুত্বপূর্ণ এ আসরে আগামী ৮ নভেম্বর আইম্যাক্স থিয়েটারে দেখানো হবে বাংলাদেশের এ চলচ্চিত্র। এ সম্মেলনে পৃথিবীর প্রায় সব দেশের রাষ্ট্রপ্রধান অংশ নেবেন। যাচ্ছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। এছাড়া একই শহরে জাতিসংঘের COY16 সম্মেলনে ২৯ অক্টোবর দেখানো হবে ‘নোনা জলের কাব্য।’

ছবিটি প্রযোজনা করেছেন রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত ও ফরাসি প্রযোজক ঈলান জিরাদ। জিরাদ ‘মার্চ অব দ্য পেঙ্গুইন’, ‘গুডবাই বাফানা’, ‘ফাইনাল পোর্ট্রেট’-এর মতো বিখ্যাত কিছু চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেছেন। সিনেমাটির সিনেমাটোগ্রাফি করেছেন লস অ্যাঞ্জেলেসে বসবাসরত থাই শিল্পী চানানুন চতরুংগ্রোজ। এছাড়া বাংলাদেশ থেকে ছবিটির নির্মাণ সহযোগী প্রতিষ্ঠান নির্মাতা অমিতাভ রেজা চৌধুরীর হাফ স্টপ ডাউন। সম্পাদনা করেছেন আমেরিকার ক্রিস্টেন স্প্রাগ, রোমানিয়ার লুইজা পারভ্যু ও ভারতের শঙ্খ। শব্দ ও রঙ সম্পাদনার কাজটি হয়েছিল প্যারিসের দুটি বিখ্যাত স্টুডিওতে।

Advertisements