![মমেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ, ছাত্রলীগ নেতাসহ বহিষ্কার ১০ ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ](https://i0.wp.com/bhawalbarta.com/wp-content/uploads/2022/03/ছাত্ররাজনীতি-নিষিদ্ধ.jpg?fit=900%2C489&ssl=1)
অনির্দিষ্টকালের জন্য ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে (মমেক) কর্তৃপক্ষ। গতকাল সন্ধ্যায় কলেজের জরুরি একাডেমিক কাউন্সিলের সভা শেষে এ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়।
সভায় কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল হাসানকে তিন বছর এবং আরও দুই শিক্ষার্থীকে দুই বছর ও সাতজনকে এক বছরের জন্য কলেজের সকল একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এ প্রেক্ষিতে ক্যম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পরার আশঙ্কায় এমন সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ।
কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. চিত্তরঞ্জন দেবনাথের সভাপতিত্বে গতকাল সন্ধ্যায় এক জরুরি সভা শেষে জানানো হয়, পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত কলেজ ক্যাম্পাসে মিছিল, মিটিং, সভা-সমাবেশসহ সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকবে। একই সঙ্গে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কলেজের ছাত্রাবাস ও কলেজ ক্যাম্পাসের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পুলিশসহ সকল আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষের কাছে ন্যস্ত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যেকোনো পরিস্থিতিতে তারা কলেজ কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি ছাড়াই যেকোনো শিক্ষার্থীকে আটক এবং তার কক্ষে তল্লাশিসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন।
কলেজের সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ডা. আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে এদিন জরুরি একাডেমিক সভা বসে। তদন্তে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে করা সকল অভিযোগ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে প্রমাণিত হয়।
একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় শিক্ষককে অপবাদ দিয়ে তার সম্মানহানি করায় কলেজের ৫৩ ব্যাচের ছাত্র ও কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল হাসানকে তিন বছর এবং ওই অভিযোগ তুলে মানববন্ধন করায় আরও দুই শিক্ষার্থীকে দুই বছর ও সাতজনকে এক বছরের জন্য কলেজের সকল একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।।
নিরাপত্তা চেয়ে ত্রিশাল থানায় ১৫ সাংবাদিকের সাধারণ ডায়েরি
এদিকে, ময়মনসিংহের ত্রিশালে অবস্থিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত ১৫ সাংবাদিক জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ত্রিশাল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
শনিবার সন্ধ্যায় খবরটি নিশ্চিত করে ত্রিশাল থানার ডিউটি অফিসার এফ এম তানভীর আলম জানান, শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকরা একটি জিডি করেছেন। একই ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর বরাবরও একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন সাংবাদিকসহ অভিযোগকারী ওই ১৫ শিক্ষার্থী।
জানা যায়, ময়মনসিংহের ত্রিশালে অবস্থিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন ও সরকার পরিচালনাবিদ্যা বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী ওয়ালিদ নিহাদকে ছাত্রলীগ না করার কারণে মারাত্মকভাবে নির্যাতন করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ঘটনা দিন রাত দেড়টার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হলের ৩২৪ নাম্বার কক্ষে ডেকে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। এ ঘটনার আলোকে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকরা সংবাদ প্রকাশ করলে গত শুক্রবার এক শিক্ষার্থীকে ডেকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে জোর করে লিখিত বক্তব্য আদায় করা হয়, যার মধ্যে সংবাদকর্মীর নাম উল্লেখ করে বিভিন্ন ব্যক্তির বিরুদ্ধে আপত্তিকর বক্তব্য উল্লেখ করা হয়।
এ ঘটনার পর থেকে অভিযোগকারী ১৫ জন অনিরাপদ রয়েছে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।
সংবাদকর্মীরা বলেছেন, আমরা ওয়ালিদ নিহাদের উপর নির্যাতনের ঘটনার সংবাদ করায় বিভিন্নভাবে তারা সাংবাদিকদের উপর চাপ সৃষ্টি করছে। যা গত শুক্রবার সীমা ছাড়িয়ে গেছে। ওইদিন রাতে এক শিক্ষার্থীকে দিয়ে জোর করে লিখিয়ে নেয় যে, এই আন্দোলনে বিশৃঙ্খলা করার পরিকল্পনার নেতৃত্বে রয়েছেন সাংবাদিকরা।
ছাত্রলীগের এমন ন্যক্কারজনক ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।
বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রক্টর ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।