![গোপালগঞ্জে ক্লাসে ঢুকে ছাত্রীদের হিজাব খুলে নিলেন চেয়ারম্যান ছাত্রীদের হিজাব](https://i0.wp.com/bhawalbarta.com/wp-content/uploads/2022/03/গোপালগঞ্জে-ক্লাসে-ঢুকে-ছাত্রীদের-হিজাব-খুলে-নিলেন-চেয়ারম্যান.jpg?fit=900%2C489&ssl=1)
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ক্লাসে প্রবেশ করে ছাত্রীদের হিজাব খুলে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ওই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নিন্দার ঝড় ওঠে।
গত রোববার বেলা ১১টার দিকে বান্ধাবাড়ী ইউনিয়নের বান্ধাবাড়ী গ্রামে অবস্থিত জেবিপি উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ক্লাসে এ ঘটনা ঘটে। সরজমিন বান্ধাবাড়ী গ্রামে গিয়ে শিক্ষার্থী শিক্ষক ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঘটনার দিন বেলা সাড়ে ১০টার দিকে জেবিপি উচ্চ বিদ্যালয়ে ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বাংলা ক্লাস চলছিল। হঠাৎ ওই ইউপির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মানিক ক্লাসে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীদের পাঠদান থামিয়ে দেয়। চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন- বিদ্যালয়ে বোরকা ও হিজাব পরে আসা চলবে না। হিজাব পরে নয়, খোলা চুলে ক্লাসে এলে তোমাদের আরও ভালো লাগবে। তার এসব কথা শুনে ছাত্র-ছাত্রীরা হতভম্ব হয়ে পড়ে।
এ সময় তিনি নিজের হাতে একাধিক ছাত্রীর শরীর থেকে হিজাব ও চুলের স্কার্ফ খুলে টেবিলের ওপর রাখেন এবং বড় চুল থাকার অপরাধে ছাত্রদের চুল ধরে শারীরিক নির্যাতন চালান।
বান্ধাবাড়ী জেবিপি উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ছাত্রী ফাজিহা রহমান রিয়া, তানিয়া আক্তার, খাদিজা হাওলাদার ও রহিমা সরদার জানান, চেয়ারম্যান ক্লাস রুমে প্রবেশ করে আমাদের উদ্দেশ্য করে বলেন- স্কুলে হিজাব ও বোরকা পরে আসা যাবে না। তিনি নিজেই আমাদের মাথায় হাত দিয়ে ক্লিপ খুলে হিজাব টেবিলের ওপর রাখেন। ১০ম শ্রেণির ছাত্র অর্ণব দাস ও সলিমুল্লাহ জানায়, চেয়ারম্যান বিনা কারণে তাদের চুল ধরে শারীরিক নির্যাতন করেন।
বান্ধাবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা হান্নান মোল্লা জানান, ঘটনাটি খুবই স্পর্শকাতর। একজন চেয়ারম্যান এমন ঘটনা ঘটাতে পারে এটা ভাবতেও অবাক লাগে। আমরা এলাকাবাসী এর বিচার চাই।
বান্ধাবাড়ী জেবিপি বিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক শামীম আহমেদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিচ্ছিলাম। এ সময় চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মানিক ক্লাসে প্রবেশ করে ছাত্রীদের বোরকা পরে ক্লাসে আসতে নিষেধ করেন। এমনকি তিনি নিজ হাতে অনেকের হিজাব খুলে টেবিলের ওপর রাখেন।
বিষয়টি নিয়ে বান্ধাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মানিকের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করে তাড়িয়ে দেন।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. মাহাবুবুর রহমান বলেন, ঘটনাটি আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জেনেছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘটনাটি জেনেছি, তদন্ত করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সূত্রঃ মানবজমিন