নর্থ সাইপ্রাসের ৪৭তম শান্তি ও স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তৈয়ব এরদোয়ান গত ১৯ ও ২০ তারিখ দেশটিতে দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফর করেন। দীর্ঘ ৪৭ বছর ধরে চলে আসা উত্তর ও দক্ষিণ সাইপ্রাসের সমঝোতার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু ঘোষণা আসতে পারে বলে এই সফরটি পশ্চিমা বিশ্বের বিশেষ নজরে ছিল।
দক্ষিণ বা সাউথ সাইপ্রাস দাবি করে আসছে দুই দেশের জন্য একটি সংসদ থাকবে যেখানে জনসংখ্যার অনুপাতে সাউথ সাইপ্রাসের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকবে । এদিকে নর্থ বা উত্তর সাইপ্রাস দাবি করে আসছিল দুই দেশের জন্য আলাদা দুটি সংসদ থাকবে তবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীপরিষদ দুই দেশের সমান সংখ্যক এমপিদের মধ্য থেকে নির্বাচিত হবেন যেন ১৯৬৩-১৯৭৪ সালের মতো তুর্কিশ সিপ্রুটরা যেন বৈষম্মের শিকার না হয়।
দুটি দেশই বিগত ৪৭ বছর যাবত তাদের স্ব স্ব অবস্থানে অনড় থাকার কারনে নর্থ সাইপ্রাসের নব নির্বাচিত জনপ্রিয় রাষ্ট্রপতি এরসিন তাতার যিনি তার আগে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। নতুন প্রস্তাবনা নিয়ে এসেছেন। যেখানে তিনি নর্থ সাইপ্রাসকে আলাদা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের কাছে স্বীকৃতি চাচ্ছেন। যে প্রস্তাবটি তিনি ইতিমধ্যে আমেরিকা , যুক্তরাজ্য , তুরস্ক ও সাউথ সাইপ্রাসের উপস্থিতিতে কয়েকটি বৈঠকে জাতিসংঘের কাছে পেশ করেছেন ।
তাই অনেকে ধারণা করছেন এরদোয়ান উত্তর সাইপাসের এই সফরে তুরস্ক হয়তো তাদের সমর্থনের ঘোষণা দিবে। সেজন্য ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট গত সপ্তাহে এরদোয়ানকে টেলিফোনে এই বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন । যার জবাবে এরদোয়ান ২০ তারিখ ঈদের নামাজ শেষে বলেন “তারা আমদের পরামর্শ দিতে চায় কিন্তু আমি তাদের বলে দিতে চাই আমদের কাজের ব্যাপারে কি আমরা তাদের কাছে পরামর্শ চাইবো নাকি !!”
উক্ত দুই দিনের সফরে এরদোয়ান বেশ কিছু উন্নয়নমূলুক প্রকল্প উদ্বোধন করেন। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ৪৭ বছর ধরে বন্ধ থাকা কাপালি মারাশ একটি মসজিদ ও কয়েকটি নতুন সড়ক উদ্বোধন করেন। রাষ্ট্রপতির ভবনও সংসদের জন্য নতুন ভবন তৈরির ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। উল্লেখ্য সবগুলো প্রকল্প তুরস্কের নিজস্ব অর্থায়নে তৈরি করা হবে ।
নর্থ সাইপ্রাসের এরজান বিমানবন্দর এলাকায় গত বছরের মার্চ মাস থেকে যাত্রী ছাড়া সকল ধরনের জনসাধারণর প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। তবে এরদোয়ানের এই সফরটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিধায় সরকারি অনুমতিক্রমে বিশেষ কিছু সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় সংগঠনকে বিমানবন্দর এলাকায় প্রবেশ করার জন্য অনুমতি পায়। তাদের মধ্যে বাংলাদেশি প্রবাসীদের সংগঠন নর্থ সাইপ্রাস বাংলাদেশ কমিউনিটি অনুমতি পেয়েছে যা দেশটিতে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীদের অত্যন্ত সম্মানিত করেছে।
উক্ত অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে নর্থ সাইপ্রাস বাংলাদেশ কমিউনিটি’র সম্মানিত সভাপতি জনাব মোহাম্মদ ইসমাইল ভূঁইয়ার নেতৃত্বে বাংলাদেশিদের বিপুল সংখ্যক উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। এ সময় তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোয়ানকে অভ্যর্থনা জানাতে এরজান এয়ারপোর্টে বাংলাদেশ বাংলাদেশ ধ্বনিতে মুখরিত ছিল প্রেসিডেন্টকে বহনকারী বাসের চারিদিক।
যা দেশটির গণমাধ্যমে উঠে আসে, সমুদয় কার্যক্রম ভবিষ্যতে বাংলাদেশ এবং দেশটিতে বসবাসরত বাংলাদেশিদের প্রতি আরো বন্ধুত্বপূর্ণ ও ভালো ফলাফল বয়ে আনবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কমিউনিটির নেতৃবৃন্দের মধ্যে অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।