তালেবান চাইলে মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যে গোটা আফগানিস্তান দখল করতে পারে বলে এই গোষ্ঠীর নেতারা যে দাবি করেছেন তার জবাব দিয়েছে কাবুল। আফগান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ‘বিদেশিদের তাবেদারি’ বাদ দিয়ে দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠার যে সুযোগ তৈরি হয়েছে তা কাজে লাগানোর জন্য তালেবানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
আফগান সরকার তালেবানকে ‘পাকিস্তানের তাবেদার’ এবং আফগান সরকারকে তালেবান ‘আমেরিকার তাবেদার’ বলে অভিযোগ করে থাকে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাম্প্রতিক এক বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তালেবান শুক্রবার গোটা আফগানিস্তান দখলে নেয়ার সক্ষমতার কথা ঘোষণা করে। বাইডেন বৃহস্পতিবার পরোক্ষভাবে আফগান যুদ্ধে আমেরিকার পরাজয় স্বীকার করে নিয়ে বলেছিলেন, তালেবানের পক্ষে গোটা আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয়া সম্ভব নয়। তিনি হোয়াইট হাউজে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মাত্র ৭৫ হাজার তালেবান আফগানিস্তানের তিন লাখ সরকারি সৈন্যর সঙ্গে কখনোই পেরে উঠবে না।
বাইডেনের এ বক্তব্য সম্পর্কে শুক্রবার মস্কোয় সাংবাদিকরা রাশিয়া সফরকারী তালেবান প্রতিনিধিদলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এ সময় তালেবান প্রতিনিধিদলে প্রধান শেখ শাহাবুদ্দিন দেলোয়ার বলেন, “এটি বাইডেনের ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি। তবে যে তালেবান মাত্র একদিনে ১৪ জেলার পতন ঘটিয়েছে তারা মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যে গোটা আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করার সক্ষমতা রাখে।” তিনি বলেন, তালেবান বিদেশি সেনাদেরকে নিরাপত্তার সঙ্গে আফগানিস্তান ত্যাগ করার সুযোগ করে দিয়েছে।
এদিকে শাহাবুদ্দিন দেলোয়ারের বক্তব্যকে ‘মনগড়া’ আখ্যায়িত করে আফগান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তারিক অ্যারিয়ান বলেছেন, “তার বক্তব্য আফগানিস্তানের বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।” তিনি বিবিসি ফার্সিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “তালেবানের দাবি যদি শতকরা একভাগও সত্যি হতো তাহলে তাদের নেতারা আফগানিস্তানের বাইরে জীবনযাপন করতেন না।” আফগান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, আফগানিস্তানের সেনাবাহিনী স্থল ও আকাশপথে তালেবানের যেকোনো হুমকির জবাব দিতে প্রস্তুত রয়েছে।
তারিক অ্যারিয়ান বলেন, “তালেবান গোষ্ঠী তাদের জঙ্গিদের লাশ [পাকিস্তানের] পাঞ্জাবের গণকবরগুলোতে দাফন করছে।পাঞ্জাবে এখন আর কবর খোঁড়ার মতো স্থান বাকি নেই বলে গণকবরে এসব লাশ চাপা দিতে হচ্ছে।”
শাহাবুদ্দিন দেলোয়ারের নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার তালেবানের চার সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল মস্কো সফরে যান।রুশ সরকারের রাষ্ট্রীয় আমন্ত্রণে এ সফর অনুষ্ঠিত হয় বলে তালেবান জানিয়েছে।
এর আগে বুধবার ইরানের রাষ্ট্রীয় আমন্ত্রণে তালেবানের একটি প্রতিনিধিদল তেহরান সফর করে। তেহরানে অনুষ্ঠিত এক আন্তঃআফগান সংলাপে তালেবান প্রতিনিধিদের পাশাপাশি আফগান সরকারের একটি প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করে। ওই সংলাপে তালেবান ও আফগান সরকার রাজনৈতিক উপায়ে আফগানিস্তানের চলমান সংকট নিরসন করতে সম্মত হয়।#
পার্সটুডে