প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বাংলাদেশের জনগণসহ বিশ্ববাসীকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ।
ঈদের আগের দিন বৃহস্পতিবার (১৩ মে) দেওয়া এ ভাষণে সবাইকে যার যার অবস্থানে থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদ উদযাপন করতে বলেছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বছর ঘুরে আবার এসেছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। ‘ও মন রমজানের ওই রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ/তুই আপনাকে আজ বিলিয়ে দে, শোন আসমানী তাগিদ’- জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কালজয়ী এই গান গেয়ে আমরা স্বাগত জানাই পবিত্র ঈদুল ফিতরকে। আমি বাংলাদেশের জনগণসহ বিশ্ববাসীকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। ঈদ মোবারক।”
ভাষণে প্রধানমন্ত্রী ঈদ উপলক্ষে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। জাতীয় চার নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানান তিনি। স্মরণ করেন মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ ও দুই লাখ নির্যাতিত মা-বোনকে। সকল বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রতিও শ্রদ্ধা জানান শেখ হাসিনা।
১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট ঘাতকদের হাতে নিহত মা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, তিন ভাই- মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল ও দশ বছরের ছোট্ট শেখ রাসেল, কামাল ও জামালের নবপরিণীতা স্ত্রী সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, চাচা মুক্তিযোদ্ধা শেখ আবু নাসেরসহ ওই দিনের সকল শহীদের কথাও স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
সরকার প্রধান বলেন, ‘বিগত এক বছরের বেশি সময় ধরে বিশ্ব এক গভীর সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে। কোভিড-১৯ নামক এক মরণঘাতী ব্যাধি মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতাসম্পন্ন এই ভাইরাস একদিকে যেমন অগণিত মানুষের জীবন কেড়ে নিচ্ছে, অন্যদিকে ক্ষতিসাধন করছে মানুষের জীবন-জীবিকার। আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও অর্থনীতির ওপর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে এই ভাইরাস।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই ভাইরাসের বিস্তার প্রতিরোধে গত বছরের মত এ বছরও ঈদগাহ ময়দানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। মসজিদে মসজিদে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদের নামাজ আদায় করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আসুন, আমরা সবাই যে যেখানে আছি সেখান থেকেই ঈদের আনন্দ উপভোগ করি। বিত্তবান যারা আছেন বা যাদের সামর্থ্য আছে, তাদের প্রতি অনুরোধ, এই দুঃসময়ে আপনার দরিদ্র প্রতিবেশী, গ্রামবাসী বা এলাকাবাসীর পাশে দাঁড়ান। তাদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন। আপনার সাহায্য হয়তো একটি পরিবারের সদস্যদের মুখে হাসি ফোটাবে। দেখবেন, তাদের হাসিমুখ আপনার হৃদয়মনকেও পরিপূর্ণ করে তুলবে ঈদের আনন্দে।’