টঙ্গীতে বস্তির নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ
Advertisements

গাজীপুর টঙ্গীর ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের কেরানির টেক (রেলওয়ে) বস্তির একটি ক্লাব ঘরের নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ-যুবলীগের সাথে বস্তিবাসীর ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছে ১৫ জন।

গতকাল বুধবার(২১ এপ্রিল) রাতে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। ফের সংঘর্ষের আশঙ্কায় এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে গুরুতর তিনজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

জানা গেছে, বহিরাগত ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীরা কেরানির টেক বস্তিতে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য গত কয়েক দিন ধরে বস্তির একটি ক্লাবঘর দখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ৪৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগ ও ছাত্রলীগ কর্মীরা বস্তির ওই ক্লাবঘরে ঢুকে লোকজনকে মারধর করে বের করে দেয় এবং ক্লাবে নতুন তালা লাগিয়ে চলে যায়।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতেই বস্তিবাসীরা সরকারি দলের দায়িত্বশীল নেতাদের কাছে বিচার দেন এবং থানায় আলাদা অভিযোগ করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা বুধবার রাতে দলবল নিয়ে বস্তিতে হামলা চালায়।

বস্তিবাসীরা জানান, ৪৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা সাদ্দাম হোসেন, ওয়ার্ড ছাত্রলীগ সভাপতি আল-আমিন, তুষার, সাদ্দামের ভাগিনা জীবন, সেলিম ও যুবলীগ নেতা আসাদের নেতৃত্বে কয়েকজন গুলি করতে করতে বস্তিতে প্রবেশ করে। এসময় মসজিদের মাইক দিয়ে বস্তিবাসীদের রক্ষার জন্য ঘোষণা দেওয়া হলে বস্তিবাসীরা লাঠিসোটা নিয়ে হামলাকারীদের প্রতিরোধের চেষ্টা চালায়।

এসময় দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হয়। আহতদের উদ্ধার করে টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে গুরুতর আহত সাদ্দাম ও তার সহযোগী বিপ্লব ও আবু সাঈদকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পঠানো হয়। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

যুবলীগ নেতা আক্তার হোসেন বলেন, মরহুম সুমন আহমেদ মজুমদার আমাদের বন্ধু ছিলেন। তার স্মৃতিকে স্মরণ রাখতে আমরা ক্লাবটি প্রতিষ্ঠা করি। দীর্ঘদিন ক্লাবটি বন্ধ থাকার পর আমরা ক্লাবের সংস্কার কাজ শুরু করি। কিন্তু বিগত কয়েকমাস যাবত জোরপূর্বক ক্লাবের নিয়ন্ত্রণ নিতে চেষ্টা করেন সুমন মজুমদারের বাবা মনির মজুমদার, দুই ভাই সাদ্দাম ও বিপ্লব। তাদের উদ্দেশ্য, ক্লাব দখল করে এখানে বসে কেরানিরটেক বস্তির মাদকের নিয়ন্ত্রণ করা।

এ বিষয়ে মনির আহমেদ মজুমদার বলেন, আমার ছেলের নামে ক্লাবটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। আমরা সেটি তত্ত্বাবধান করতে চেয়েছি। কিন্তু আক্তার ও নুর মোহাম্মদ তা চায় না।

এ ব্যাপারে টঙ্গী পশ্চিম থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, বহিরাগত কিছু উশৃঙ্খল যুবক বস্তির একটি ক্লাবঘর দখল করতে গেলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আবারো অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কায় বস্তিতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।

Advertisements