বিধবা রোকেয়া কিছুদিন আগেই ব্রেন স্ট্রোক করার ফলে কথা বলতে কিছুটা কষ্ট হয়। তার চারটি গরু ছিল। ধান ক্ষেতে যাওয়ায় দুইটি গরুকে নির্মমভাবে কুপিয়েছে জমির মালিক প্রতিবেশী নবী হোসেন।
শনিবার [১০ এপ্রিল] সকালে ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা উপজেলার দক্ষিণ হবিরবাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী রোকেয়া জানান, আমার গরু নবী হোসেন কুপিয়েছে। তাদের লোকজন আমাকে হুমকি দিচ্ছে। আমার ওই গরুটার দাম আনুমানিক ৫০ হাজার টাকার মতো হতো, কিন্তু মাংস বিক্রি করে পাবো ৩০ হাজার টাকা। এছাড়াও আমার আরেকটি গরুর পেটে কোপ দিয়েছে, বাঁচবে না মরবে বলা যাচ্ছে না। আমি আমার ক্ষতিপূরণ চাই এবং নবী হোসেনের বিচার চাই।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার বদনীভাঙা গ্রামের আব্দুস ছামাদের সন্তান মাজহারুল ইসলাম মিন্টু জানান, এখানে আমার শ্বশুরবাড়ি। সকালে ধান ক্ষেতের পাশে রোকেয়ার একটি গরুকে কুপিয়ে ভুরি বের করে ফেলে নবী হোসেন। আমি দেখে গরুটা মরে যাবে ভেবে দ্রুত জবাই দিই। তখন গরু সোজা হয়ে উঠতে পারছিল না। অনেক বড় বড় পাঁচটা কোপের চিন্হ দেখা গেছে চামড়া থেকে। শুধু তাই নয়, আরেকটি গরু বাড়িতে ধরে নিয়ে যায় নবী হোসেন। ওই গরুর পেটেও কোপের চিন্হ স্পষ্ট।
এ ব্যাপারে আতিকুর রহমান নামের একজন সংবাদকর্মী তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি থেকে ওই গরু জবাইয়ের আগে ছটফট করার সময়ের একটি ভিডিয়ো এবং একটি ছবিসহ স্ট্যাটাসে লিখেন, “দক্ষিণ হবিরবাড়ি সাদসান ফ্যাক্টরি সংলগ্ন ১০ নং হবিরবাড়ি ইউনিয়নে পারিবারিক কলহের জের ধরে গৃহপালিত পশু গরু কুড়াল দিয়ে কুপিয়েছে । স্বামী হারা রোকেয়া বেগম বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন শেষ সম্বল হারিয়ে”। তার ওই স্ট্যাটাসে অনেকেই প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
এছাড়াও আরও কয়েকজন সংবাদকর্মীর ফেসবুক আইডি থেকে স্ট্যাটাস দিলে এ ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান অনেকেই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) অনেকেই নবী হোসেনের শাস্তির দাবি জানান।
অভিযুক্ত নবী হোসেনকে (৪৫) বাড়িতে পাওয়া যায়নি। তবে তার স্ত্রী শিরিনা (৪০) একটি গরু তাদের বাড়িতে নেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, আমাদের ধানক্ষেত খেয়েছিল ওই গরুগুলো। যেটা বাড়িতে আনছিলাম, সেটা সাংবাদিকদের চাপে পড়ে ফেরত দিয়েছি। আমাদের ধানক্ষেত খেয়ে নষ্ট করায় গরুটা বাড়িতে নিয়েছিলাম। তবে তার স্বামী নবী হোসেন গরু কুপিয়েছে কেন, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি অস্বীকার করেন।