কলা
Advertisements

আপনি কি কলা (banana) খেতে পছন্দ করেন? যদি করে থাকেন তবে এই প্রতিবেদন পড়ার পর আপনার ভালোবাসা বাড়বে বই কমবে না। তবে পছন্দ না করলে কলার প্রতি আপনার দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে বাধ্য। কলার (banana) দাম বেশি নয়, পাওয়া যায়ও সহজে। অন্য ফলের মত জলেও ধুতে হয় না, পুষ্টি প্রচুর। মুহূর্তে এনার্জি দেয়, একটা কলা খেলেই প্রায় ভরে যায় পেট। ফলে সহজে খিদে পায় না। ত্বকের জন্যও উপকারী ফল এটি। তাড়াতাড়ি বুড়িয়ে যেতে দেয় না কলা। রোজ কলা খেলে ত্বকের রিঙ্কেল হওয়ার গতি ঢিমে হয়। এর কারণ, কলায় প্রচুর ভিটামিন সি ও ম্যাঙ্গানিজ আছে, যা ত্বকের পক্ষেঅত্যন্ত জরুরি। ভিটামিন সি অ্যান্টি অক্সিডেন্টের কাজও করে, যা ত্বকের কোষ ও টিস্যুকে বুড়িয়ে যাওয়ার হাত থেকে বাঁচায়।

১) সাধারণত ওজন বাড়াতে কলা খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু ওজন কমানোর (weight loss) জন্যও কলা উপকারী। ফুল ফ্যাট দুধের সঙ্গে কলা খেয়ে দেখুন, আপনার ওজন বাড়বে। কিন্তু দুধ ছাড়া শুধু কলা খান, ওজন কমবে। এর কারণ, কলায় প্রায় ১০০ ক্যালরি থাকে। যদি মাঝারি সাইজের ২-৩টে কলা পরপর খেয়ে নেন, তাহলে পেট পুরোপুরি ভরে যায়। ক্ষিদে কম পায়, দ্রুত এনার্জি আসে। তবে ওজন কমাতে চাইলে (weight loss) একেবারে পাকা কলা খাবেন না, একটু কম পাকা কলা বেছে নিন। এতে রেসিস্ট্যান্স স্টার্চ পাওয়া যায় বেশি।

২) ন্যাচারাল সুগার বা এনার্জিতে ভরপুর হল কলা। তাই এনার্জি ড্রিঙ্ক নয়, কলা (banana) খান। এতে ফ্যাট নেই, রয়েছে ৩ রকম ন্যাচারাল সুগার-সুক্রোজ, ফ্রুক্টোজ আর গ্লুকোজ। তাই যাঁরা নিয়মিত ব্যায়াম করেন বা দৌড়ন, তাঁদের পক্ষে কলা দারুণ উপকারী। অবসাদে ভোগা কিছু মানুষের ওপর সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গিয়েছে কলা খেলে ভালো বোধ করেন তারা। কলার মধ্যে থাকা ট্রিপটোফ্যান প্রোটিন মানুষের শরীরে পরিণত করে সিরোটোনিন হরমোনে। সিরোটোনিন হরমোন অফ হ্যাপিনেস নামে পরিচিত। শরীরে এই হরমোনের মাত্রা বাড়লে মুড ভাল হয়ে রিল্যাক্স বোধ করে মানুষ। মুড অফ একটি অতি পরিচিত প্রি-মেন্সট্রয়াল সিনড্রোম। কলার মধ্যে থাকা ভিটামিন বি৬ শরীরে গ্লুকোজের সামঞ্জস্য বজায় রেখে মুড ঠিক রাখতে সাহায্য করে।

৩) ব্লাড প্রেসার কমাতে কলা অত্যন্ত উপকারী। এতে প্রচুর পটাসিয়াম রয়েছে, সোডিয়াম খুব কম। একটা বড় কলা খেলে দৈনিক প্রয়োজনের ১০% পটাসিয়াম পেয়ে যাবেন আপনি। ফলে ব্লাড প্রেসার তো কমবেই, হৃদযন্ত্র আর কিডনিও ভাল থাকবে।

৪) মুহূর্তের মধ্যে এনার্জি পেতে কলার জুরি মেলা ভার। কলার মধ্যে পটাশিয়ামের মাত্রা বেশি অথচ নুনের মাত্রা কম থাকায় উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যা রুখতে পারে কলা। ইউ ফুড ও ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কলার এই গুণের কথা মাথায় রেখে স্ট্রোক, উচ্চ রক্তচাপের ওষুধে কলার ব্যবহার সুপারিশ করেছে। কলার মধ্যে থাকা প্রচুর পরিমান আয়রন রক্তে হিমোগ্লোবিন উত্‍পাদনে সাহায্য করে। ফলে অ্যামিনিয়ার সম্ভবনা কমে। এমনকী, অ্যামিনিয়া সারাতেও সাহায্য করে কলা। টানা ১ বছর ধরে পরীক্ষা চালানো হয়েছিল ইংল্যান্ডের টুইকেনহ্যাম স্কুলের ২০০ জন পড়ুয়ার ওপর। পরীক্ষার আগে টানা ব্রেকফাস্ট, ব্রাঞ্চ ও লাঞ্চে কলা খাওয়ানো হয় তাদের। দেখা গিয়েছিল কলার মধ্যে থাকা পটাশিয়াম তাদের মনসংযোগ বাড়ানোর ফলে অন্যদের থেকে পরীক্ষায় ভালোই ফল করেছিলেন ওই ২০০ জন পড়ুয়া।

৫) কলার মধ্যে প্রচুর পরিমান ফাইবার থাকায় পেট পরিষ্কার রাখতে কলা অপরিহার্য্য। আগের রাতের অতিরিক্ত মদ্যপানের হ্যাংওভার কাটাতে বানান মিল্কশেকের কোনও তুলনা নেই। সঙ্গে যদি থাকে ১ চামচ মধু। কলা শরীরের অস্বস্তি কমায়, দুধ পেট ঠান্ডা করে ও মধু বজায় রাখে রক্তে শর্করার মাত্রা। ফলে অম্বলের হাত থেকেও রেহাই পায় শরীর।

৬) কাজের চাপ, মানসিক চাপে অনেক সময়ই সকালে ঘুম থেকে উঠে অসুস্থ বোধ করি আমরা। রক্তে শর্করার মাত্রা কম থাকায় কম থাকে এনার্জির মাত্রাও। এই সময় কলা বজায় রাখতে রক্তে শর্করার সঠিক মাত্রা। মশার কামড়ে ফুলে, লাল হয়ে ওঠা ত্বকের যত্ন নিতে ক্রিম বা অ্যান্টিসেপটিক ব্যবহার করার আগে কলার খোসা ঘষে দেখুন ত্বকের ফুলে ওঠা অংশে।

৭) কলায় থাকে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন বি যা স্নায়ুকে শান্ত করে। মানসিক চাপ কাটাতে ফ্যাটি ফুডের থেকে বেশি প্রয়োজনীয় কলা। কার্বোহাইড্রেটে পরিপূর্ণ হওয়ায় কলা রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক রেখে স্নায়বিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। অনেক দেশে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে কলা ব্যবহার করা হয়। অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের জ্বর হলে ওষুধের বদলে খাওয়ানো হয় কলা। তাইল্যান্ডে গর্ভস্থ সন্তানের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে গর্ভবতী মায়েদের মধ্যে কলা খাওয়ার প্রচলন রয়েছে।

সূত্রঃ এইসময়ে

Advertisements