
আগামী ২৮ মে চারদিনের সফরে জাপান যাওয়ার কথা রয়েছে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের। এই সফরকে সামনে রেখে ১৫ মে টোকিওতে নির্ধারিত ছিল বাংলাদেশ ও জাপানের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক—ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি)। এই বৈঠকে নেতৃত্ব দেওয়ার কথা ছিল পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিনের।
তবে হঠাৎ করেই সোমবার (১২ মে) দুপুরে এফওসি স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জাপান দূতাবাসকে জানিয়ে ‘নোট ভার্বাল’ পাঠানো হয়। এ সিদ্ধান্ত প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পৌঁছালে সেখানে তাৎক্ষণিক অসন্তোষ ও বিস্ময় দেখা দেয়। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ সিদ্ধান্তে অবাক হয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নোট ভার্বাল প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন এবং বৈঠকের কর্মসূচি পূর্বনির্ধারিত রেখেই নতুন ‘নোট ভার্বাল’ পাঠাতে বলেন।
পরিবর্তিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বৈঠকটি এখন আর পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে নয়, বরং প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক বিশেষ সহকারী লুৎফে সিদ্দিকীর নেতৃত্বে একটি প্রস্তুতিমূলক সভা হিসেবে অনুষ্ঠিত হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, জাপানের মতো গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদারের সঙ্গে এমন অনিশ্চয়তা ও সমন্বয়হীনতা কূটনৈতিকভাবে অত্যন্ত বিব্রতকর এবং অনাকাঙ্ক্ষিত। তারা বলছেন, এমন পরিস্থিতি বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
এফওসি আয়োজনের সিদ্ধান্ত গত মাসেই চূড়ান্ত হয়েছিল। এমনকি, বিষয়টি নিয়ে গত সপ্তাহে জাপানের রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে এক নৈশভোজে পররাষ্ট্র সচিবসহ দুই দেশের কর্মকর্তারা বৈঠকও করেন।
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ২৯ মে টোকিওতে অনুষ্ঠিতব্য ‘নিকেই ফোরাম’-এ বক্তব্য দেবেন। পরদিন ৩০ মে তার জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে, যেখানে অর্থনৈতিক সহযোগিতা সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে সোমবার পররাষ্ট্র সচিবের দপ্তরে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাক্ষাৎ দিতে রাজি হননি। তার অফিস জানায়, এ বিষয়ে আজ (মঙ্গলবার) তিনি মন্তব্য করবেন এবং এর মধ্যে নতুন অগ্রগতি ঘটতে পারে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রধান উপদেষ্টার সফরকে কেন্দ্র করে সব প্রস্তুতি চলছে এবং জাপানের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের অবস্থান চূড়ান্ত করা হবে।