বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ আর নেই। শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুর ৩টায় রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর।
ধানমন্ডি ৭ নম্বর জামে মসজিদে এ এফ হাসান আরিফের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস অংশ নেন।
জানা গেছে, আগামীকাল শনিবার (২১ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে তার দ্বিতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর মিরপুরের বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে বাদ জোহর তাকে দাফন করা হবে।
১৯৪১ সালে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করা এ এফ হাসান আরিফ কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। পরে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন। কর্মজীবনের সূচনা করেন ১৯৬৭ সালে কলকাতা হাইকোর্টে। ১৯৭০ সালে ঢাকায় এসে সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবী হিসেবে কাজ শুরু করেন।
তিনি ২০০১ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, ভূমি এবং ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ছিলেন।
হাসান আরিফ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আইন উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ ব্যাংক, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ, এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। তিনি ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির কমপ্লেক্সের উপদেষ্টার দায়িত্বেও ছিলেন।
তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তার মেয়ে কানাডায় থাকায় প্রথমে তার জন্য অপেক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তবে, পারিবারিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শনিবার বাদ জোহর তার দাফন সম্পন্ন হবে।
বাংলাদেশের আইন অঙ্গনে এ এফ হাসান আরিফের অবদান স্মরণীয়। তার কর্মজীবন, সততা এবং নিষ্ঠার জন্য তিনি সবার কাছে প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবেন। জাতি একজন বিশিষ্ট আইনজীবী এবং অভিজ্ঞ উপদেষ্টাকে হারালো।