Highway blockade
Advertisements

গাজীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো টিঅ্যান্ডজেড গ্রুপের পাঁচটি কারখানার শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন। শনিবার সকাল থেকে ব্যস্ততম এ সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন তারা।

মহাসড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। সড়কের উভয় পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ওই মহাসড়কে চলাচলকারীরা। হেঁটে গন্তব্যে যাচ্ছেন অনেকে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আশপাশের মোট ১২টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আজকেও ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কে প্রায় ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে ময়মনসিংহ থেকে আসা যাত্রীবাসগুলোকে সালনা থেকে আঞ্চলিক সড়কে বিকল্প পথ ব্যবহার করতে বলা হচ্ছে। এতে গাজীপুরের শিববাড়ি থেকে কালিগঞ্জ হয়ে হয়ে ঢাকা যেতে পাড়ছে বাসগুলো।’

‘চন্দ্রা দিয়ে ঢাকা যাওয়ার জন্য কিছু যানবাহন চান্দনা চৌরাস্তা থেকে টাঙ্গাইল রুটে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে’, যোগ করেন তিনি।

পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও জানান, কিশোরগঞ্জ থেকে আসা বাসগুলো কাপাসিয়া থেকে কালীগঞ্জ হয়ে টঙ্গী দিয়ে ঢাকা পাঠানো হচ্ছে।

গতকাল রোববার বিকেল ৩টায় গাজীপুর শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মোশাররফ হোসেন বলেছিলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে মালিকপক্ষ ও শ্রমিকদের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করেছি। একাধিকবার তারিখ দিয়েও মালিক শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করেননি।’

শিল্প পুলিশ জানায়, গত ২৩ অক্টোবর বেতন পরিশোধের দিন নির্ধারণ করা থাকলেও মালিকপক্ষ বেতন পরিশোধ করেননি। পরে গত ২৪ অক্টোবর সেনাবাহিনী, মালিকপক্ষ ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা হয়। তখন সেপ্টেম্বর মাসের বেতন ৩ নভেম্বর ও অক্টোবর মাসের বেতন ২০ নভেম্বর পরিশোধের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু নির্ধারিত তারিখে বেতন পরিশোধ করেননি মালিকপক্ষ। এরপর গত বৃহস্পতিবার এক জরুরি নোটিশে সেপ্টেম্বরের বেতন ৭ নভেম্বর বিকাশ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে পরিশোধ করা হবে বলে জানানো হয়। এছাড়া অক্টোবর মাসের বেতন ২৮ নভেম্বর পরিশোধ করা হবে বলে জানানো হয়। কিন্তু ৭ নভেম্বরও বেতন পাননি শ্রমিকরা।

গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের গাজীপুর জেলার সভাপতি অ্যাডভোকেট জিয়াউল কবির খোকন বলেন, ‘টিঅ্যান্ডজেড শ্রমিকদের অবিলম্বে বকেয়া বেতন পরিশোধ করার দাবী জানাচ্ছি। আজকেও বেতন পরিশোধ করা হচ্ছে না। শুনেছি কোম্পানির মালিক পালিয়ে গেছে। বকেয়া বেতন পরিশোধ না করলে আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে আমরা শিগগির একাত্মতা ঘোষণা করব।’

গাজীপুর ট্রাফিক পুলিশের এডিসি অশোক কুমার পাল জানান, ‘জনদুর্ভোগ চরমে। মহাসড়কে গতকালকের মতো আজও যানজট রয়েছে।’

ময়মনসিংহ থেকে আসা ইয়াছ উদ্দিন মিয়া জানান, ‘সকালে ভোগড়া বাইপাস মোড়ে বাস থেকে নেমে ঢাকায় যাওয়ার কোনো যানবাহন না পেয়ে দুই সন্তান, স্ত্রী ও দুইটি ব্যাগ নিয়ে অনেক কষ্ট করে এক কিলোমিটারের মতো পথ হেঁটে এসেছি। এখন আর পারছি না। জানতে পারলাম আরও এক কিলোমিটার পথ হেঁটে পার হলে কিছু একটা পাওয়া যেতে পারে।’

ময়মনসিংহগামী এক বাসের চালক লিয়াকত আলী বলেন, ‘জয়দেবপুর থেকে ময়মনসিংহ অভিমুখে তেমন যানজট নেই।’

শিল্প পুলিশ জানায়, ‘টিঅ্যান্ডজেড অ্যাপারেলস লিমিটেড, বেসিক ক্লোথিং লিমিটেড, অ্যাপারেলস প্লাস, বেসিক নীটওয়্যার লিমিটেড ও অ্যাপারেল আর্ট লিমিটেডের প্রায় দুই হাজার শ্রমিক সড়কে বিক্ষোভ করছে।

গাজীপুর শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘বিক্ষোভ এখনো চলছে।’

Advertisements