Chhatra League-Police attack killed 6 people
Advertisements

কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলা হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রংপুরে ছয়জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া আরো অনেকে গুলিবিদ্ধসহ আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সাথে যুবলীগ-ছাত্রলীগের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। আজ বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আহত কয়েকজনকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হলে তাদের মৃত ঘোষণা করা হয়।

এর আগে বেলা ৩টার দিকে নগরের মুরাদপুরে শিক্ষার্থীদের ওপর অস্ত্রধারীরা গুলি ছুড়লে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়।

নিহতদের মধ্যে দুজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন মো: ফারুক (৩২) ও মো: ওয়াসিম (২২)। ফারুক ফার্নিচার দোকানের কর্মচারী এবং ওয়াসিম চট্টগ্রাম কলেজের ছাত্র ও কলেজ শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক বলে জানা গেছে। এ ছাড়া অপরজনের পরিচয় জানা যায়নি। তার বয়স ২৪। তার পিঠে গুলির চিহ্ন রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। অন্যদিকে ফারুকের বুকে গুলি লাগে। আহত অন্তত ২০ জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

ঢাকা

রাজধানীতে কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর হামলায় দুইজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

ঢাকা কলেজের বিপরীত পাশে কোটা আন্দোলনকারীদের সাথে ছাত্রলীগের সংঘর্ষে অজ্ঞাতনামা এক যুবক (২৫) নিহত হয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে গুরুতর আহত অবস্থায় ওই যুবককে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন এক পথচারী। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

চিকিৎসকের বরাত দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া।

এছাড়া, রাজধানীর সায়েন্সল্যাব মোড়ে শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের মধ্যে সংঘর্ষে মনির নামে একজন যুবক নিহত হয়েছেন। তিনি শিক্ষার্থী নাকি পথচারী এ বিষয়টি এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

মঙ্গলবার বিকেলে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের একপর্যায়ে মনিরকে স্থানীয়রা মাটিতে পড়ে থাকতে দেখেন। পরে পপুলার মেডিক্যাল হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, সন্ধ্যা ৭টা ৫ মিনিটে একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে পপুলার হাসপাতাল থেকে ঢামেকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে।

রংপুর
রংপুরে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে আবু সাঈদ নামের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ২টার দিকে তিনি গুলিবিদ্ধ হন।

নিহত শিক্ষার্থীর বাড়ি জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার জাফরপাড়ায়। তিনি ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের ছাত্র।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের পুলিশ কমিশনার মো: মনিরুজ্জামান।

জবি
কোটা সংস্কারের দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ক্যাম্পাস থেকে বের হওয়া বিক্ষোভ মিছিলে গুলি বর্ষণ করা হয়েছে। এতে চার শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৩টায় মিছিল বের করে কোর্ট পার হয়ে রায়সাহেব বাজারের দিকে এগিয়ে গেলে গুলি বর্ষণ হয়।

গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থীদের ঢাকা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, পুরান ঢাকার আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনকারীদের ওপর গুলিবর্ষণ করেছে।

রাজধানীর কোতয়ালী জোনের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) নজরুল ইসলাম বলেন, ‘গুলির খবর শুনেছি। তবে আমরা এক গ্রুপকেই মিছিল করতে দেখেছি। অন্য কোনো গ্রুপ দেখিনি।’

কুবি
কোটা আন্দোলনকারী কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়সহ আশপাশের অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মিছিলে বাধা দিতে রাবার বুলেট ছুড়েছে পুলিশ। এতে দুইজন শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এ সময় উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা পুলিশের একটি গাড়ি ভাঙচুর করে।

গুলিবিদ্ধরা হলেন, জেলা স্কুলের কামরুল হাসান সাকিব, গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাসিম।

এ সময় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে কুমিল্লা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ, কুমিল্লা সরকারি কলেজ, কুমিল্লা গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাই স্কুল ও কুমিল্লা জিলা স্কুলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কয়েকহাজার শিক্ষার্থী যোগ দেন।

এছাড়াও রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা হয়েছে। এতে অনেকে আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

Advertisements