ইহুদিবাদী প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার মন্ত্রিসভার কার্যক্রমের ব্যাপারে ইসরাইলের শতকরা ৭৫ ভাগ জনগণ অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।। কান নেটওয়ার্ক পরিচালিত সর্বশেষ জরিপের ফলাফল অনুসারে ওই পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের শতকরা ৫৫ ভাগ বলেছেন তারা নেতানিয়াহুর মন্ত্রিপরিষদের কোনো মন্ত্রীর প্রতি সন্তুষ্ট নন। ‘বিবি অভ্যুত্থান’ নামে পরিচিত বিচারিক আইন সংস্কারের বিতর্কিত পরিকল্পনার পর নেতানিয়াহুর বিরোধিতা অনেক বেড়েছে।
বিচার বিভাগীয় সংস্কার বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারীরা অধিকৃত ভূখণ্ডের বিভিন্ন শহরে শনিবার রাতে রাস্তায় নেমে এসে বিক্ষোভ করে এবং স্লোগান দেয়। নেতানিয়াহু এবং তার মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে বিগত ৩৬ সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ অব্যাহত রয়েছে। বিক্ষোভকারীরা নেতানিয়াহু এবং তার মন্ত্রিসভাকে “বিপজ্জনক ও অবৈধ” বলে বিরোধিতা করে আসছে।
বিক্ষোভকারীরা তাদের প্রতিবাদকে ইহুদিবাদী পার্লামেন্ট নেসেটের স্পিকার ওমায়ের ওহানা’র সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কড়া জবাব হিসাবে দেখছে। ওহানা বলেছিলেন নেসেট সুপ্রিম কোর্টের রায়ের তোয়াক্কা করবে না। বিক্ষোভকারীরা এক বিবৃতিতে ঘোষণা করেছে মন্ত্রিসভার হুমকি ও উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড মোকাবেলা করার জন্য তারা দলবদ্ধভাবে রাস্তায় নামবে। তারা এই মর্মে আশ্বস্ত করবে যে স্বৈরাচারী আইন নয় ন্যায়সঙ্গত আইনের সমর্থনে তারা বিচারকদের পাশে থাকবে। ইসরাইলি সংসদে নতুন করে একটি বিতর্কিত আইন পাশ হয়েছে। ওই আইনে ‘অযৌক্তিক’ মনে করে সরকারি কোনো পদক্ষেপকে বাতিল করার যে ক্ষমতা সুপ্রিম কোর্টের ছিল ওই ক্ষমতাটি কেড়ে নেয়া হয়েছে। সরকার যুক্তি দিচ্ছে, ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষার স্বার্থেই এই সংশোধনী প্রয়োজন, কারণ সাম্প্রতিক দশকগুলিতে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ওপর আদালত ক্রমবর্ধমান হারে হস্তক্ষেপ করছে। আগামিকাল (১২ সেপ্টেম্বর) এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের ১৫ জন বিচারকের পূর্ণ অংশগ্রহণে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান মিসেস এসথার হায়োতের সভাপতিত্বে বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। অপরদিকে নেতানিয়াহুর কট্টর মন্ত্রিসভার সমর্থকরা সংস্কার বিলের বিরোধীদের হুমকি দিয়েছে- রাজপথে বিক্ষোভ করা হলে হত্যা করা হবে। বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সমর্থকরা বৃহস্পতিবার রাতে সুপ্রিম কোর্টের সামনে জড়ো হয় এবং ইসরাইলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী আইজ্যাক রবিনের হত্যাকারীর সমর্থনে ব্যানার বহন করে সুপ্রিম কোর্টের প্রধানকে হুশিয়ার করে দেয়।
বিচারিক সংস্কার বিল নিয়ে ইহুদিবাদীদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ বিরোধ সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে তীব্রতর হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট এবং পার্লামেন্ট এখন মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। ক্ষমতাসীনরা যদি বিচার বিভাগের সিদ্ধান্ত না মানে তাহলে সমগ্র ইসরাইলজুড়ে গৃহযুদ্ধ দেখা দিতে পারে বলে বিশেষজ্ঞমহল উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে।