বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ চেয়ে অনুরোধ করতে বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ওয়াশিংটনে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, আমীর খসরুর সেই মিশন ফেল হয়েছে। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে গতকাল রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভার সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিরোধীদের নিষেধাজ্ঞার মিশন ব্যর্থ হয়েছে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এসব গুমের কাহিনী শুনিয়ে লাভ নেই। নিষেধাজ্ঞা আরোপ করাবেন বাংলাদেশের ওপর। আমীর খসরুর ওয়াশিংটন মিশন ফেল। নিষেধাজ্ঞা দিতে চেয়েছিল, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ২০ দেশের ৭০ জনের বিরুদ্ধে। সেখানে বাংলাদেশ নেই। তবুও তারা লবিস্ট নিয়োগ করে।’
মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস গতকাল সকালে বিএনপি নেতা সাজ্জাদুল সুমনের বাড়িতে যাওয়ার প্রসঙ্গ টেনে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সুমন ২০১৩ সালে গুম হয়েছিল। তার বাড়িতে উনি (পিটার হাস) গেলেন, আমি সবিনয়ে তাকে জিজ্ঞেস করি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি মাসে কতজন গুম হয়, কতজন নারী ধর্ষিত হয়, কতজন খুন হয় সেই চিত্রটা কিন্তু সিএনএনে আমরা দেখেছি।’
পিটার হাসের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘পিটার হাস সাহেব আজ ১৪ ডিসেম্বর… যদি দেখতাম আপনি বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে গেছেন, সেই চিত্রটা বেশি ভালো লাগত।’
ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, ‘বিএনপির অসংখ্য কর্মী আছেন, যারা মামলা থেকে রক্ষা পেতে নিখোঁজ। চকরিয়ার সালাউদ্দিন, কত অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। সালাউদ্দিন গুম হয়ে গেলে নিজে নিজেই চলে গেল ভারতে। এসব গুমের কাহিনী আপনাদের জানা উচিত।’
মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে উদ্দেশ করে তিনি আরো বলেন, ‘আমীর খসরু একা যাননি। লবিস্ট নিয়োগ করেছে তারা। তার নাম কি জানেন, টোবি ক্যাডম্যান। তিনি ব্রিটিশ আইনজীবী। টোবি ক্যাডম্যান সাক্ষাত্কারে আল জাজিরাকে বলেছেন, ‘আমি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার জন্য, পুলিশ এবং র্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যকে অনুরোধ করেছিলাম। যুক্তরাষ্ট্র কথা রেখেছে, যুক্তরাজ্য আমার অনুরোধ রাখেনি।’
বিএনপি নেতাদের অর্থের উৎস কোথা থেকে আসে সে খবর জানেন বলেও দাবি করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘টাকা-পয়সা দিয়ে এসব করছেন, কোথা থেকে আসে টাকা? কারা দেয় টাকা, ব্যবসায়ী-শিল্পপতি সব খবর আসে। একটা মিটিং করেন, সাতদিন আগে থেকে পিকনিক। টাকা আসে কোথা থেকে?’
এছাড়া সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ড. আবদুর রাজ্জাক ও আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির ও ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি বক্তব্য রাখেন। আলোচনা সভা যৌথভাবে সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ এবং উপ-প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন।
সূত্রঃ বণিক বার্তা