শরীর কিংবা মন- বিশ্রামের যেন ফুরসত নেই একেবারেই। একদিকে একের পর এক সিরিজ আর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, সেই সাথে একের পর এক হার তো আছেই। টানা হারের মানসিক অবসাদের সঙ্গে লম্বা ভ্রমণের ধকল। এরপরই শুরু কোয়ারেন্টিনের বদ্ধ পরিবেশ। একের পর এক জৈব-সুরক্ষা বলয়ে থাকা দলের সদস্যদের জন্য বেশ কঠিন। বাংলাদেশ দলের অবস্থা আসলেই কাহিল। এই পরিস্থিতিতে পড়ে গুমোট ভাব কাটাতে পাকিস্তান সিরিজেই জৈব-সুরক্ষা বলয় ভেঙে বাড়িতে ফিরেছিলেন ‘টিম ডিরেক্টর’ খালেদ মাহমুদ সুজন। এবার মুমিনুল-মুশফিকদের সঙ্গে তিনিও আছেন নিউজিল্যান্ড সফরে। সাবেক অধিনায়ক এই বিসিবি পরিচালকের চাইতে আর কে-ই-বা জানে এর কষ্ট! তাইতো সবার খোঁজখবর নিয়ে জানালেন ‘ভালো আছে ছেলেরা’।
পাকিস্তানের বিপক্ষে ঘরের মাঠের সিরিজ শেষ হওয়ার দিনই গত বুধবার গভীর রাতে নিউজিল্যান্ডের উদ্দেশে দেশ ছাড়ে বাংলাদেশ দল। লম্বা ভ্রমণ শেষে সেখানে পৌঁছানো দলটি এখন আছে সাত দিনের কোয়ারেন্টিনে। প্রথম তিন দিন রুম কোয়ারেন্টিন। কোভিড-১৯ নেগেটিভ হওয়া সাপেক্ষে এরপর কিছু সময়ের জন্য বের হওয়ার অনুমতি পাবেন ক্রিকেটাররা, করতে পারবেন জিম। সাত দিন পর দলগত অনুশীলন শুরু করতে পারবে বাংলাদেশ।
গতকাল বিসিবির পাঠানো ভিডিও বার্তায় মাহমুদ বললেন, এখন পর্যন্ত কারো কোনো সমস্যা নেই। ভালো আছেন সবাই, ‘আজকে (গতকাল) আমাদের কোয়ারেন্টিনের প্রথম দিন। সকালে ঘুম থেকে ওঠে নাস্তা করার পর দু’জন নার্স এসেছিলেন, আমাদের তাপমাত্রা মাপার জন্য। বাকি সব খোঁজ-খবর নেওয়ার জন্য। এখানে (নিউজিল্যান্ড) পৌঁছানোর পর সবাই যার যার রুমে যাই। এখনো কারো সাথে কারো দেখা হয়নি। শুধুমাত্র ভিডিও কল ছাড়া। কঠিন সময়, পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলে আসার পর পরই ছেলেরা…, কঠিন সময় যাচ্ছে।’
জেতার মধ্যে থাকলে কোয়ারেন্টিনের এসব পরিস্থিতিও হয়ত থাকত ফুরফুরে। হারের ক্লান্তির সঙ্গে সীমাবদ্ধ চলাচল মিলিয়ে সময়টা বেশ কঠিন। সুজন আশা করছেন মাঠ ও মাঠের বাইরে সবই ঠিক হয়ে যাবে। তাইতো টিম ডিরেক্টরের কণ্ঠে মিশে থাকলো কঠিন সময় থেকে বের হওয়ার আকুতিও, ‘আরও দুই-তিন দিন কষ্ট করতে হবে, তারপর আমরা গ্রæপ হিসেবে অনুশীলন করতে পারবো, জিম করতে পারবো। তারপর আস্তে আস্তে অনুশীলন শুরু করতে পারবো। আমি আশা করি, কয়েক দিনের মধ্যে সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে। এছাড়া আমরা সবাই ভালো আছি, সুস্থ আছি; দোয়া করবেন।’
মহামারীকালে দ্বিতীয়বারের মতো নিউজিল্যান্ড সফরে গেল বাংলাদেশ। গত ফেব্রæয়ারিতে তিনটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলে তারা। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পর সেটাই ছিল বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের প্রথম বিদেশ সফর।
কিউইদের বিপক্ষে এর আগে তাদের দেশে তিন সংস্করণ মিলিয়ে ৩৩ ম্যাচ খেলে একটিতেও জিততে পারেনি বাংলাদেশ। এবার খেলতে গেছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভরাডুবির পর দেশের মাটিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই সংস্করণে হোয়াইটওয়াশড হয়ে। এবার কোয়ারেন্টিন শেষে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবেন তারা। ১ জানুয়ারি মাউন্ট মঙ্গানুইতে শুরু হবে প্রথম টেস্ট। ৯ জানুয়ারি ক্রাইস্টচার্চে শুরু হবে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। নিউজিল্যান্ডে বরাবরই বাংলাদেশের বড় প্রতিপক্ষ সেখানকার কন্ডিশন। প্রচন্ড বাতাস ও তীব্র শীতে জবুথবু দল মাঠের লড়াইয়েই পিছিয়ে পড়েছে বারবার। আর এবার খেলতে হবে সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালের মতো গুরুত্বপ‚র্ণ দুই ক্রিকেটারকে ছাড়া।