বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম শিপিং কোম্পানি মার্স্কসহ দু’টি কোম্পানি ঘোষণা করেছে, তারা পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত লোহিত সাগর দিয়ে আর কোনো বাণিজ্যিক জাহাজ চালাবে না। ইয়েমেনের সেনাবাহিনীর হুমকির মুখে তারা এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হলো বলে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে।
ডেনমার্কের মার্স্কসের পাশাপাশি জার্মানির শিপিং কোম্পানি হ্যাপাগ-লয়েডও শুক্রবার রাতে একই ঘোষণা দিয়েছে।
সম্প্রতি লোহিত সাগরে ইসরাইল অভিমুখী বেশ কয়েকটি বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা চালায় ইয়েমেনের সেনাবাহিনী। তারা ঘোষণা দিয়েছে, ইসরাইলের উপকার হয় এমন কোনো অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড তারা লোহিত সাগর দিয়ে হতে দেবে না। গাজায় ইসরাইলি বর্বরতার প্রতিবাদে এ কাজ করার ঘোষণা দিয়েছে ইয়েমেন।
ডেনমার্কের শিপিং কোম্পানি মার্স্ক গতরাতে (শুক্রবার রাতে) এক বিবৃতিতে বলেছে, বৃহস্পতিবার লোহিত সাগরের বাব আল-মান্দাব প্রণালিতে তাদের একটি জাহাজে ড্রোন হামলা হয় এবং শুক্রবারও একই স্থানে একই ধরনের হামলার মুখে পড়ে তাদের আরেকটি জাহাজ। বিবৃতিতে বলা হয়, কাজেই পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত লোহিত সাগরে ওই কোম্পানির জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকবে।
এদিকে জার্মানির শিপিং কোম্পানি হ্যাপাগ-লয়েডেরও একটি জাহাজ লোহিত সাগরে সম্প্রতি ইয়েমেনের হুথি আন্দোলন সমর্থিত সেনাবাহিনীর হামলার কবলে পড়ে। কোম্পানিটি গতরাতে বলেছে, এটিও লোহিত সাগর দিয়ে আপাতত আরা কোনো জাহাজ চালাবে না।
মধ্যপ্রাচ্য সফররত মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান দাবি করেছেন, ইয়েমেনের হুথি যোদ্ধারা লোহিত সাগরে আন্তর্জাতিক মুক্ত জাহাজ চলাচলের পরিবেশ নষ্ট করছে। তবে হুথি নেতারা বলেছেন, তারা তাদের পানিসীমা অতিক্রমকারী জাহাজগুলোকে জিজ্ঞাসাবাদের বৈধ অধিকার চর্চা করছেন এবং যেসব জাহাজ তাদের আদেশ অমান্য করছে শুধুমাত্র সেসব জাহাজে হামলা চালাচ্ছেন।
আরব উপত্যকার একদিকে ইয়েমেন এবং অন্যদিকে আফ্রিকা উপকূলের জিবুতি ও ইরিত্রিয়ার মধ্যবর্তী লোহিত সাগরের বাব আল-মান্দাব প্রণালির প্রস্থ ৩২ কিলোমিটার। এই প্রণালি দিয়ে সুয়েজ খাল হয়ে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক জাহাজগুলোকে ভারত মহাসাগর থেকে ভূমধ্যসাগরে প্রবেশ করতে হয়। লোহিত সাগর ও বাব আল-মান্দাব প্রণালি এড়িয়ে চলতে চাইলে একটি জাহাজকে কয়েক গুণ বেশি পথ পাড়ি দিয়ে গোটা আফ্রিকা মহাদেশ ঘুরে ভূমধ্যসাগরে পৌঁছাতে হবে।