স্মার্ট বাংলাদেশ
Advertisements

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও ‘স্মার্ট বাংলাদেশে’ রূপান্তর করতে দল-মত নির্বিশেষে সকল জনপ্রতিনিধিকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত করার জন্য আমি (দল-মত নির্বিশেষে) সকল জনপ্রতিনিধিকে আহ্বান জানাচ্ছি।

শেখ হাসিনা আরো বলেন, বাংলাদেশের জনসংখ্যা, অর্থনীতি ও কৃষিসহ সবকিছুই স্মার্ট হবে। তাই দেশের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নে কাজ করতে হবে।

সোমবার (৩ জুলাই) তার কার্যালয়ের শাপলা হলে তিন সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র বরিশালের আবুল খায়ের আবদুল্লাহ, খুলনার তালুকদার আবদুল খালেক ও গাজীপুরের জায়েদা খাতুনের শপথ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থী নির্বাচিত হয়ে জনপ্রতিনিধি হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে আমাদের একসাথে কাজ করতে হবে।

এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি সবার প্রধানমন্ত্রী এবং দেশের উন্নয়নমূলক কাজের ক্ষেত্রে কে তার দল থেকে নির্বাচিত হয়েছেন তা দেখেন না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এলাকা দেখে কাজ করি না। প্রতিটি নাগরিকের উন্নতির জন্য কাজ করছি।’ এই প্রসঙ্গে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি এটি সবার জন্য করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি যা কিছু করি জনগণের কল্যাণের জন্য করি।’

তিনি সকলকে নিজ এলাকার সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিতে পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনে কাজ ও সেবা করার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, আপনারা (তিন সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলর) জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে তাদের সেবা করার সুযোগ পেয়েছেন। আমি চাই, আপনারা জনগণের সেবা ও তাদের প্রত্যাশা পূরণ করবেন।

পরে সাধারণ ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত ১৫৭ জন কাউন্সিলর এবং তিন সিটি করপোরেশনের সংরক্ষিত আসনের মহিলা কাউন্সিলররাও একই স্থানে শপথ নেন। এর মধ্যে বরিশাল থেকে ৪০ জন, খুলনার ৪১ জন এবং গাজীপুর সিটির ৭৬ জন কাউন্সিলর রয়েছেন।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো: তাজুল ইসলাম কাউন্সিলরদের শপথ বাক্য পাঠ করান। শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইবরাহিম। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন এলজিআরডি ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য।

শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার বাংলাদেশকে একটি মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে গেছে এবং বিশ্ব দেশকে সম্মানের চোখে দেখে। সব প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবেলা করে বাংলাদেশ সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাবে।

২০১৩-১৪ সালের অগ্নিসহিংসতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আগামী দিনগুলোতে এমন কোনো ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি আমরা দেখতে চাই না।’ আমাদের (জনপ্রতিনিধিদের) লক্ষ্য হওয়া উচিত দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রাখা, জনজীবনে শান্তি নিশ্চিত করা এবং তাদের উন্নত জীবন দেয়া।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষ ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগকে বারবার ভোট দিয়ে ক্ষমতায় এনেছে। ২০০৯ সাল থেকে আজ পর্যন্ত বিগত সাড়ে ১৪ বছরে সরকার বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকায় দেশে গণতন্ত্র ও উন্নয়ন অব্যাহত রয়েছে।

তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ার পাশাপাশি জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশে পরিণত করেছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার পর সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান জনগণের ভোটাধিকার হরণ করেছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী জনপ্রতিনিধিদের নিজ নিজ এলাকায় জনগণের সেবা ও ইচ্ছা পূরণের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, যারা আপনাকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে, তাদের আশা পূরণ করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী নবনির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের নিজ নিজ এলাকায় যথাযথ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পানি নিষ্কাশন ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা এবং বিশুদ্ধ খাবার পানি নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।

তিনি তাদের এলাকার বাড়িঘর ও এর আশেপাশের এলাকা পরিষ্কার ও জমা পানি থেকে মুক্ত রেখে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কাজ করতে বলেন। প্রধানমন্ত্রী ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর আহ্বান জানান।

সূত্র : বাসস

Advertisements