ইহুদিবাদী ইসরাইলের কর্তৃপক্ষ সিরিয়ার আকাশে আগ্রাসনের সময় তাদের একটি ড্রোন বিধ্বস্তের খবর দিয়েছে।
ইসরাইলের সংবাদপত্র “ইয়াদিওত আহারানোট” জানিয়েছে যে ইসরাইলের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র এলিশা বেন কিনন বুধবার বলেছেন, মঙ্গলবার রাতে সিরিয়ার আকাশসীমায় উড়ে যাওয়ার সময় ইসরাইলের একটি সামরিক ড্রোন সিরিয়ার একটি এলাকায় বিধ্বস্ত হয়। .তিনি এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন যে ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করা হচ্ছে। একইসঙ্গে বিধ্বস্ত ড্রোনের ধরন জানানোর বিষয়ে অস্বীকার করে তিনি দাবি করেন যে এই ড্রোন থেকে তথ্য ফাঁসের কোনো ঝুঁকি নেই।এছাড়াও, ইহুদিবাদী সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ইসরাইলি শাসকগোষ্ঠীর আরেকটি ড্রোন নামানোর ঘোষণা দিয়েছেন। এর ভিত্তিতে বলা যায় যে নতুন ড্রোনটিও গুলি করে নামানোর সম্ভাবনা বেশি। ফলে বিধ্বস্ত ড্রোনটির প্রযুক্তিগত ত্রুটির বিষয়ে ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠী যে দাবি করছে তা প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে।
সিরিয়ার ভূখণ্ডে ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠীর বারবার বিমান হামলা যা সর্বদাই দেশটিতে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি ঘটিয়েছে ফলে সিরিয়া কতদিন এ বিষয়ে ধৈর্যশীল নীতি অবলম্বন করবে তা নিয়ে সবসময়ই প্রশ্ন উঠেছে।
কয়েক মাস আগে, সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল আল-মাকদাদ ওমানি সংবাদপত্র আথির-এর সাথে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন যেটি আবার রুশ বার্তা সংস্থা স্পুটনিকে পুনঃপ্রকাশিত হয়েছিল সেখানে দামেস্ক শহর এবং এর আশপাশে ইহুদিবাদী শাসক গোষ্ঠীর সেনাবাহিনীর বারবার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা না নেয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে বলেছিলেন, ইহুদিবাদীরা কিছু যাত্রীবাহী বিমানের সুযোগের সদ্ব্যবহার করে এই প্লেনের নিচ থেকে বা উপর থেকে গুলি চালায়। এক্ষেত্রে সিরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পাল্টা জবাব দিলে যাত্রীবাহী বিমানের ক্ষতি হতে পারে এবং তখন আমাদের দোষ দেওয়া হবে যে আমরা যাত্রীবাহি বিমান ভূপাতিত করেছি। অতএব, আমরা এটি করি না এই জন্য যে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা যাতে যাত্রীবাহী বিমানের কোনো ক্ষতি করতে না পারে।
একই সাথে, তিনি উল্লেখ করেছেন যে এই আগ্রাসন সম্পর্কে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট; আমরা বলছি এবং সতর্ক করছি যে অতি শিগগিরই ইসরাইল এসব আগ্রাসনের জবাব পাবে।
সিরিয়ায় ইহুদিবাদী শাসক গোষ্ঠীর সেনাবাহিনীর অব্যাহত হামলা ও আগ্রাসনের বিরুদ্ধে অবশেষে এ অঞ্চলের প্রতিরোধকামী শক্তিগুলোর অন্যান্য সদস্যরা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। যেমন ইয়েমেনের প্রতিরোধকামী হুতি আনসারুল্লাহ আন্দোলনের নেতা সাইয়্যেদ আব্দুল মালিক আল-হুথি সিরিয়ার কর্তৃপক্ষকে বলেছেন যে তিনি আশা করেন সিরিয়ায় উপস্থিত ভাইয়েরা ইহুদিবাদী শত্রুর বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, ইহুদিবাদী শত্রুর জানা উচিত যে সিরিয়ায় যে কোনো হামলার জবাবে দখলদার ভূখণ্ডে সিরিয় ভাইয়েরা পাল্টা আঘাত হানবে। এখন মনে হচ্ছে সিরিয়া ইহুদিবাদী শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে পাল্টা জবার দেয়ার জন্য আগের চেয়ে অনেক বেশি প্রস্তুত।
প্রথমত, বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের ক্ষয়ক্ষতি এবং কয়েক লাখ মানুষের মৃত্যু সহ্য করেও সিরিয়া সফলভাবে এই ধ্বংসযজ্ঞের সংঘাত থেকে উতরে উঠেছে এবং তার স্বাধীন ও সার্বভৌম অধিকার পুনরুদ্ধার করেছে। একইসঙ্গে সিরিয় সরকার তার অভ্যন্তরীণ সংঘাতকে সেনাবাহিনী পুনর্গঠন এবং নতুন বাহিনীকে প্রশিক্ষণের সুযোগ হিসাবে ব্যবহার করেছে এবং ইরান ও রাশিয়ার সহায়তায় তার বিমান প্রতিরক্ষাকে শক্তিশালী করেছে যা প্রাক-যুদ্ধ সময়ের চেয়ে এখন ভালো অবস্থানে রয়েছে।
দ্বিতীয়ত, যারা সিরিয়ার সরকার বিরোধী বিদ্রোহী বা তাকফিরি সশস্ত্র গোষ্ঠীকে সমর্থন করেছিল তারা এখন একের পর এক তাদের অবস্থান পরিবর্তন করছে এবং তারা দামেস্কের কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে একটি সমঝোতার পন্থা গ্রহণ করেছে এবং সিরিয়ার সাথে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের চেষ্টা করছে।