সভা-সমাবেশ বন্ধ করা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি
Advertisements

আওয়ামী লীগ সরকার ১৭ মার্চ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত সব ধরনের সভা-সমাবেশ বন্ধ করে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি কাজ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

বিএনপিনেতা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যে চেতনার কথা বলে তার সঙ্গে স্বাধীনতার কোনো সম্পর্ক নেই। সম্পর্ক নেই বলেই তো ১৭ মার্চ থেকে ২৬ মার্চ সব সভা-সমাবেশ বন্ধ করে দিয়েছে। এটাই তো মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি কাজ। স্বাধীনতা মূল কথা হচ্ছে- মানুষের অধিকার সংরক্ষণ করা। মানুষ তাঁর কথা বলবে নির্ভীক চিত্তে, এই নিশ্চিয়তা দেওয়া। কিন্তু ওরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, মানুষের নাগরিক অধিকারে বিশ্বাস করে না। তাই তারা ১৭ মার্চ থেকে ২৬ মার্চ সব কিছু বন্ধ করেছে।’

আজ বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে এক দোয়া মাহফিলে রিজভী এসব কথা বলেন। ভাষাসৈনিক ও বিএনপির সাবেক মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের ১০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘নিজের পরিবার-পরিজন, সন্তানের কথা চিন্তা না করে নিজের পাকিস্তানি কমান্ডারকে হত্যা করে যে স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন, আর সেই জিয়াউর রহমানকে তাঁরা বলছেন, ২৫, ২৬ মার্চ ব্যারিকেড দেওয়া বাঙালিদের হত্যা করেছে। এটা শুধু মিথ্যা নয়, এটা জলজ্যান্ত জঘন্য অপপ্রচার। তাদের কাছে ন্যায়নীতি ও সত্যের কোনো দাম নেই।’

বিএনপির সাবেক মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন ‘ফুলটাইম রাজনীতিবিদ’ ছিলেন উল্লেখ করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আমাদের অনেকেই আছেন পার্টটাইম রাজনীতিবিদ, পার্টটাইম ব্যবসায়ী। কিন্তু খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন ছিলেন ফুলটাইম রাজনীতিবিদ। নেতাকর্মী এবং জনগণের সঙ্গে একটা সংযোগ তৈরি হওয়ার ব্যক্তিত্ব হলেন খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন। এমনিতে মনে হবে একরোখা, নিজের নীতির প্রশ্নে অটল, আপোষ করেন না। আবার তাঁর সঙ্গে মিশলে মনে হবে, একবারে তুলতুলে নরম মনের মানুষ। এক-এগারতে দুজন সেনা অফিসার তাঁর বাসায় গিয়ে হুমকি দেন। তিনি ঠাণ্ডা মাথায় তা হজম করেন। পরদিন খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে বিএনপি গঠন করা হবে, সেখানে খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের স্বাক্ষর করতে হবে। খোন্দকার দেলোয়ার হাসপাতালে ভর্তি হলেন, হাসপাতাল থেকে তিনি উধাও হয়ে গেলেন। এই যে অসাধারণ কৌশল একজন রাজনীতিবিদের। খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন ছিলেন এই ধরনের ধ্রুপদী চরিত্রের একজন মানুষ।’

বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন এই ধরনের গুণী রাজনীতিবিদদের হারাচ্ছি। খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনকে হারালাম, ব্রিগেডিয়ার হান্নান শাহকে হারালাম, সর্বশেষ গতকাল হারালাম ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদকে। এই ধরনের মানুষ হারিয়ে আমরা কাদেরকে পাচ্ছি? আমরা পাচ্ছি পাপুলকে, খালেদকে, সম্রাটকে। এরা রাজনীতিবিদ? এই যে রাজনীতির অধপতন, এটা সরকার সৃষ্টি করেছে।’

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব আরও বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের মর্মান্তিক ঘটনা যারা ঘটিয়েছে, ঘটানোর পর যারা ক্ষমতায় ছিলেন, সবাই আওয়ামী লীগের। সেটা আওয়ামী লীগেরই সরকার। তখন বিএনপি ছিল না বা এখন যারা বিএনপি করে তাদের কেউ সে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল না।’

বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য খোন্দকার আকরব হোসেন, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, সহপ্রচার সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম প্রমুখ।

পার্সটুডে

Advertisements