গাজীপুরের শ্রীপুরে চলমান করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জীবিকা নির্বাহ ও পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে ‘সাতানি বাজারের’ ইজারা মওকুফ করে দিয়েছেন ইজারাদার সাদ্দাম হোসেন অনন্ত।
আগামী ১৭ মে পর্যন্ত খাজনা মওকুফ করার বিষয়টি ওই হাটে মাইকে প্রচার দিয়ে জানিয়ে দেন তিনি। এসময় বাজারে আসা ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মাঝে ১ হাজার মাস্ক বিতরন করেন ইজারাদার।
ব্যবসায়ী সাদ্দাম হোসেন অনন্ত উপজেলার নগরহাওলা গ্রামের মৃত বেলাল উদ্দিনের ছেলে। তিনি ওই এলাকায় গরীবের বন্ধু এবং একজন সমাজসেবক নামে পরিচিত।
জানা যায়, উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী সাতানি বাজার সপ্তাহের ২দিন জমে উঠে । ষাট থেকে নব্বই দশক থেকে প্রতি শনিবার ও মঙ্গলবার দিন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে খুচরা ও পাইকারী বিক্রেতারা টাটকা শাক-সবজি,ধান, বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ,মাংস সহ প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী বিক্রয় করেন। ওই হাটে প্রতিজন মাছ বিক্রেতা থেকে ২২০ টাকা, কাঁচা শাক-সবজি বিক্রেতার থেকে ৫০ টাকা, (হাঁস, মুরগি ও কবুতর ) বিক্রেতার থেকে ১০ টাকা করে খাজনা আদায় করা হতো । সম্প্রতি এমন ৫০০ দোকানীকে ১মাসের খাজনা আদায় বন্ধ করার সিদ্ধান্ত জানান ইজারাদার অনন্ত।
ওই হাটের একজন ব্যবসায়ী জানান, প্রতি হাটে আলু, পিঁয়াজ, রসুন ও আদা বিক্রি করি। আগে জমজমাট ব্যবসা হওয়ায় লাভের অংশ থেকে খাজনার টাকা দিতাম। এখন করোনার কারনে কয়েক ঘন্টার বেচাকেনা হয়। তাই লাভ তো দূরের কথা আসলও উঠে না। এ হাটের ইজারা মওকুফ করা হয়েছে শুনে কিছুটা বাঁচলাম ।
সবজি বিক্রেতা আবুল কালাম বলেন, গ্রামের বিভিন্ন বাড়ি ঘুরে গৃহস্থের জমি থেকে শাকসবজি সংগ্রহ করে বাজারে বাজারে বিক্রি করি। যে কয় টাকা লাভ হয় সেখান থেকে ভাড়া আর খাজনা দিয়ে পরিবারের জন্য কিছু নিতে কষ্ট হয়। তাই খাজনার টাকা মাফ করলে আমার মতো স্বল্প পুঁজির ব্যবসায়ীরা অবশ্যই উপকৃত হবে।
এ বিষয়ে বাজারের ইজারাদার সাদ্দাম হোসেন অনন্ত বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকারের ঘোষিত দেশব্যাপী লকডাউনে অনেক মাঝারি ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা হতাশায় ভুগছেন। এছাড়াও কৃষকরাও তাদের উৎপাদিত পণ্যের সঠিক দাম পাচ্ছেন না। এতে কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন। তাই খাজনার টাকা মাফ করলে ব্যবসায়ীরা কৃষকদের ন্যায্য মূল্য দেয়ার পাশাপাশি ভোক্তা পর্যায়েও এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।