গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভায় একটি কারখানা কর্তৃপক্ষ গ্যাস লাইনের জন্য আরসিসি ঢালাই রাস্তা কেটে প্রায় আড়াই কোটি টাকার ক্ষতি করেছে। তবে এতে ক্ষতির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৮ লাখ টাকা। পরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও পৌরসভার প্যানেল মেয়র ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে রাস্তা কাটার কাজ প্রাথমিকভাবে বন্ধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার ২৪ আগস্ট দুপুরে পৌরসভার আনসার রোড থেকে এক্স সিরামিক্স কারখানা পর্যন্ত রাস্তা কাটার যে কাজ চলমান ছিল, সেটি বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। এর আগে ২৩ আগস্ট বিকেল থেকে এ কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে শ্রীপুর সহকারী কমিশনার ভূমি জানান, ১ ফুট প্রস্থ করে কাটার অনুমতি ছিল তাদের। পরে সেখানে নিয়ম বহির্ভূতভাবে ৩ থেকে ৪ ফুট পর্যন্ত করে রাস্তাটি কাটার কারণে প্রাথমিকভাবে কর্তনের কাজ বন্ধ করে দেই আমরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারিতে শ্রীপুর পৌরসভা থেকে রাস্তাটি কাটার জন্য অনুমোদন পায় এক্স সিরামিক্স কারখানা কর্তৃপক্ষ। ওই অনুমোদনপত্রে উল্লেখ রয়েছে রাস্তাটির আরসিসি অংশের এক ফুট প্রস্থে লম্বায় ৭ হাজার ৬৫২ বর্গমিটার পর্যন্ত কাটার অনুমোদন পায়। সেখানে ৫০০ মিটার অন্তর অন্তর মেরামত করে কাজ চলমান রাখার বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকলেও তা লঙ্ঘন করেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ।
আরো জানা যায়, ২০১৯ সালের মে মাসে শ্রীপুর পৌরসভা এবং বিএমডিএফ এর অর্থায়নে ১১ কোটি ৩৩ লাখ ২৭ হাজার ৫৭১ টাকার চুক্তিমূল্যে রাস্তাটির কাজ শুরু হয়। পরে ২০২০ সালের মার্চ মাসে সেটি শেষ হয়। সেই হিসেব অনুযায়ী যে রাস্তাটি কর্তন করা হচ্ছে, সেটি প্রতি বর্গমিটারে খরচ হয় ১০ হাজার ২১০ টাকা। এতে করে কর্তন অনুমোদিত রাস্তার ক্ষতির পরিমাণ ৭৭ লাখ ৮০ হাজার ২০ টাকা।
এক ফুট প্রস্থ করে রাস্তা কাটার অনুমতি নিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ গড়ে ৪ ফুট প্রস্থ করে রাস্তা কাটছে, যা অনুমোদনের প্রায় চারগুণ। এতে ক্ষতির পরিমাণ ও চারগুণে দাড়িয়েছে। এতে প্রায় আড়াই কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। তবে এই ক্ষতির দায় কে নেবে, এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্টভাবে বলতে পারছে না ভারপ্রাপ্ত মেয়র আমজাত হোসেন বিএ।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, পৌরসভা কর্তৃক আমরা এক ফুট প্রস্থ রাস্তা কর্তনের অনুমতি দিয়েছিলাম, তবে তারা চার ফুট কেটেছে। পরে আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। এই অতিরিক্ত ক্ষতির দায় কে নেবে? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “এটা তো পৌরসভার-ই নিতে হবে”! তবে অনুমতি পত্রে উল্লেখ রয়েছে কর্তনের সকল খরচ বহন করবে কারখানা কর্তৃপক্ষ।
এসব বিষয়ে সহকারী কমিশনার, (ভূমি) আল-মামুন বলেন, খবর পেয়ে কর্তনের কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। পৌরসভা, তিতাস ও স্থানীয়দের ডাকা হয়েছে। আলোচনা সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।