যুক্তরাষ্ট্রের কুখ্যাত নারী ও শিশু যৌন নির্যাতনকারী জেফরি এপস্টেইনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা ছিল দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, বিল ক্লিনটন, যুক্তরাজ্যের প্রিন্স অ্যান্ড্রুসহ খ্যাতনামা বেশ কয়েকজনের। গতকাল বুধবার প্রকাশিত মার্কিন আদালতের নথিপত্রে এ তথ্য উঠে এসেছে।
ওই মামলা হয়েছিল এপস্টেইনের প্রেমিকা জিসলেন ম্যাক্সওয়েলের বিরুদ্ধে। এপস্টেইনকে নারী নির্যাতনে সহায়তা করার দায়ে ২০২২ সালে তাঁকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। গত মাসে ওই মামলাসংশ্লিষ্ট নথিপত্র প্রকাশের অনুমতি দিয়েছেন মার্কিন আদালত। এরপর গতকাল থেকে নথিপত্রগুলো প্রকাশ করা শুরু হয়েছে।
২০০৯ সালে অপ্রাপ্তবয়স্ক এক নারীকে যৌন ব্যবসায় বাধ্য করার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয় এপস্টেইনকে। ২০১৯ সালে যৌন ব্যবসার নানা অভিযোগের বিচার চলাকালে কারাগারের আত্মহত্যা করেন তিনি।
গতকাল প্রকাশিত নথিতে খ্যাতনামা যেসব ব্যক্তির নাম এসেছে, সেগুলো আগেই বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে ও আদালতের কার্যক্রমে জানা গিয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে, পুরো নথি প্রকাশিত হলে প্রায় ২০০ জনের নাম সামনে আসতে পারে। তাঁদের মধ্যে থাকতে পারেন এপস্টেইনের বিরুদ্ধে নিপীড়নের অভিযোগ তোলা ব্যক্তি, রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীসহ অনেকেই।
প্রকাশিত নথিতে বিল ক্লিনটন ও প্রিন্স অ্যান্ড্রু ছাড়াও নাম রয়েছে প্রয়াত পপতারকা মাইকেল জ্যাকসন, বিশ্ব বিখ্যাত জাদুশিল্পী ডেভিড কপারফিল্ড ও সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নামও।
নথিতে দেখা গেছে, জোহানা এসজোবার্গ নামের এক নারী অভিযোগ করেছিলেন, ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের ম্যানহাটন এলাকায় এপস্টেইনের একটি বাসায় তাঁর ওপর যৌন নির্যাতন করেছিলেন প্রিন্স অ্যান্ড্রু। তবে ওই অভিযোগ ‘মিথ্যা’ বলে আগেই দাবি করেছিল বাকিংহাম প্যালেস। তবে নথি প্রকাশের পর নতুন করে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি তারা।
নথিতে ক্লিনটনকে নিয়েও জোহানা এসজোবার্গের বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, এপস্টেইনের ব্যক্তিগত উড়োজাহাজে ভ্রমণ করেছিলেন ক্লিনটন। চলতি শতকের শুরুর দিকে ওই উড়োজাহাজে করে মানবিক সহায়তার উদ্দেশ্যে আফ্রিকায় সফরে গিয়েছিলেন ক্লিনটন। এ সময় তিনি এপস্টেইনকে ‘পরোপকারী’ বলেও অভিহিত করেছিলেন। তবে পরে তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন ক্লিনটন।
ক্যারিবীয় অঞ্চলে এপস্টেইনের একটি ব্যক্তিগত দ্বীপে ক্লিনটনের সফর নিয়ে একটি খবরও মামলার শুনানিতে ওঠে। তবে জিসলেন ম্যাক্সওয়েলের এক আইনজীবী দাবি করেছিলেন, খবরে উল্লেখিত তারিখের মধ্যে কখনোই ওই দ্বীপে সফর করেননি ক্লিনটন।
এসজোবার্গের জবানবন্দিতে উঠে এসেছে—এপস্টেইন তাঁকে বলেছিলেন, ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সি অঙ্গরাজ্যে নিজের একটি ক্যাসিনোতে যাওয়ার পথে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন তিনি। তবে নথিতে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কোনো ‘অপকর্মের’ অভিযোগ তোলা হয়নি।