বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সবার সামনে তুলে ধরলেই প্রকৃত সত্য উন্মোচিত হবে এবং সবাই সঠিক ইতিহাস জানতে পারবে। শনিবার রাতে এক অনুষ্ঠানে আগন্তুকের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এই মন্তব্য করেন।
জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন (জেডআরএফ) বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে দুই পর্বের এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
তারেক রহমান বলেন, গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি হলো মতপ্রকাশ ও অধিকার প্রয়োগ। ভোটের মাধ্যমে মানুষ তাদের মত প্রকাশ করে। রাজনৈতিক মতাদর্শের পার্থক্য থাকলেও সকলের কথা বলার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। তিনি আরও বলেন, ভোটদানের অধিকার নিশ্চিত করা গেলে গণতন্ত্র টিকে থাকবে এবং দেশ স্বৈরাচারমুক্ত হবে।
তারেক রহমান বলেন, শহীদ জিয়াউর রহমানকে তিনভাবে দেখা যায়—প্রথমত, একজন দক্ষ সৈনিক হিসেবে তিনি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি সাধারণ মানুষকে উজ্জীবিত করেছেন এবং যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য অনুপ্রাণিত করেছেন।
দ্বিতীয়ত, রাজনৈতিক নেতা হিসেবে তিনি মানুষের পাশে থেকেছেন, তাদের সমস্যা শুনেছেন এবং ১৯ দফা কর্মসূচি দিয়েছেন। জাতিকে বিভক্ত না করে তিনি সবাইকে বাংলাদেশি পরিচয়ে ঐক্যবদ্ধ করেছেন।
তৃতীয়ত, রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে তিনি অর্থনীতিকে শক্তিশালী করেছেন, বিশেষ করে প্রবাসী আয় ও গার্মেন্টস শিল্পের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার সংকট মোকাবিলা করেছেন।
অনুষ্ঠানে ডা. জুবাইদা রহমান তার শ্বশুর শহীদ জিয়াউর রহমান ও শাশুড়ি বেগম খালেদা জিয়ার স্মৃতিচারণ করেন এবং একটি কবিতা আবৃত্তি করেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, জিয়াউর রহমানই স্বাধীনতার প্রথম ঘোষক এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রথম বিদ্রোহী। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান ১ নম্বর সেক্টর কমান্ডার ছিলেন এবং পরবর্তীতে ১১ নম্বর সেক্টরে যুদ্ধ করেন।
অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে শাহবাগে শহীদ আবু সাইদ কনভেনশন সেন্টারে আলোকচিত্র প্রদর্শনী এবং শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে গল্প বলার অনুষ্ঠান হয়। মঞ্চে বরেণ্য কণ্ঠশিল্পী কনকচাঁপা ও বেবি নাজনীন জিয়াউর রহমানের স্মৃতিচারণ করেন।
দ্বিতীয় পর্বে ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান : যাঁর গল্প আমাদের আদর্শ’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন তারেক রহমান ও ডা. জুবাইদা রহমান। প্রধান আলোচক ছিলেন নজরুল ইসলাম খান।
বক্তারা বলেন, ৭৫ সালের বাকশাল গঠনের ফলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হয়েছিল, যা জিয়াউর রহমান পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন। অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, জিয়াউর রহমান সততা ও দেশপ্রেমের প্রতীক। অন্যদিকে, দেশের সম্পদ লুটপাটের কারণে বাংলাদেশ আজ দুর্নীতির কবলে পড়েছে।
অধ্যাপক হালিম খান বলেন, জিয়াউর রহমান কৃষি উন্নয়নে খাল খনন কর্মসূচি গ্রহণ করেন এবং দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্ন করেন। চিত্রনায়ক আশরাফ উদ্দিন উজ্জল বলেন, জিয়াউর রহমান শিল্পীদের সম্মান দিতেন এবং তাদের উন্নয়নে কাজ করতেন।
অনুষ্ঠানের শেষে বিএনপি নেতৃবৃন্দ এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিরা শহীদ জিয়াউর রহমানের আদর্শকে সামনে রেখে এগিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।