সদ্য নিয়োগ পাওয়া বাংলাদেশি নতুন শ্রমিকদের মালয়েশিয়ায় প্রবেশের সময়সীমা শেষ হচ্ছে আগামীকাল (৩১ মে)। তারই জেরে লক্ষ্য করা গেছে, বাংলাদেশ থেকে কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে আসা হাজার হাজার শ্রমিকদের সারি। এতে দুর্ভোগ বাড়ছে কর্মী ও কোম্পানি মালিকদের। এছাড়া নিজেদের কর্মী খুঁজে পেতে পড়তে হচ্ছে ভোগান্তিতে, তেমনি দীর্ঘ সময় ধরে নতুন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে অপেক্ষা করতে হচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা।
যদিও এজেন্সিগুলো ভেবেছিলো, যেকোনো উপায়ে তাদের বেঁধেদেওয়া সময় বাড়ানো হতে পারে। সে হিসেবে সম্প্রতি ঢাকার এক নিউজে সকল আশায় গুড়ে পড়ে বালি, বাংলাদেশে নিযুক্ত মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার এইচ ই হাজনাহ মো. হাসিম ৩১ মে’র পরে এই সময় আর বাড়ানো হচ্ছে না জানালে। ফলে, দেশে আটকে থাকা হাজার হাজার শ্রমিকদের উক্ত তারিখের মধ্যে আসার ডেড লাইন থাকলেও বিপদ বাঁধে এয়ার টিকিটে। হুড়মুড় করে পাঠাতে যেয়ে এসব শ্রমিকদের ৩০ হাজারের টিকিট এখন আকাশ ছোঁয়া।
নাম না জানানোর শর্তে ট্রাভেল এন্ড ট্যুরস কোম্পনিগুলো জানিয়েছে, আজকে (৩০মে) ঢাকা টু কুয়ালালামপুরের বিমানের টিকিটের দাম ১ লাখ ৮৪ হাজারে। তবুও মিলছে না এয়ার টিকেট। সবচেয়ে লোয়েস্ট (বাজেট) ফেয়ারের এয়ার এশিয়া ও মালিন্দো (বাতিক এয়ার) জানিয়েছে এ রুটে তাদের সব সিট ফুল বুকিং। এদিকে কলিংয়ের শুরু থেকে এরই মধ্যে দেশটিতে পৌঁছেছে প্রায় সাড়ে চার লাখেরও বেশি বাংলাদেশি শ্রমিক।
এমনই অনিয়ন্ত্রিত শ্রমবাজারে নির্ধারিত সময়ে শেষ মুহূর্তে কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে হাজার হাজার কর্মীদের উপচেপড়া ভিড়। এর আগে মার্চে মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুশন ইসমাইল জানিয়েছিলেন, মে মাস পর্যন্ত নতুন বিদেশি শ্রমিকদের প্রবেশের অনুমতি দেবে দেশটির সরকার। এছাড়াও এজেন্সি ছাড়াই সরাসরি বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। গত দুই মাস আগেই মালয়েশিয়া এমন সিদ্ধান্তের কথা জানালেও শেষ সময়ে এসে কর্মী প্রেরণে তোড়জোড় শুরু করে বাংলাদেশি রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো। ফলে ঢাকা থেকে কুয়ালালামপুর আকাশপথের ব্যয় বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে, যা নেয়া হচ্ছে কর্মীদের পকেট থেকেই। তবুও পদে পদে ঠকে এসে শ্রমিকরা পড়েছে বিপদে।
এ বিষয়ে মালয়েশিয়ার আর টিভি প্রতিনিধি ও বাংলাদেশ কমিউনিটি প্রেস ক্লাবের সভাপতি, মোস্তফা ইমরান রাজু তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছে, ”এদিকে কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে হাজার হাজার বাংলাদেশি কর্মী ভাইয়েরা এসেছেন কিন্তু তাদের কোম্পানি রিসিভ করছেন না। দিনের পর দিন বিমানবন্দরেই সময় পার করতে হচ্ছে তাদের। তাদের ভাগ্যে কি আছে আল্লাহই ভালো জানেন।”
এদিকে দেশটির অনলাইন মালয় গেজেট জানিয়েছে মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগ বলেছে, স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে দৈনিক বিদেশি কর্মীদের আগমন হয় ৫শ’ থেকে ১ হাজার মধ্যে। ২২ মে থেকে আগমনের সংখ্যা আড়াই হাজারে বাড়তে শুরু করে, যা পরে ২৭ মে’তে বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার থেকে সাড়ে ৪ হাজারে। এ পরিস্থিতিতে যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত ও যানজট নিয়ন্ত্রণে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
পরিস্থিতি মোকাবেলায় অতিরিক্ত কাউন্টার খোলা হয়েছে ও ইমিগ্রেশন কর্মকর্তার সংখ্যাও বৃদ্ধি করা হয়েছে। এছাড়াও বিদেশি কর্মীদের পানি ও খাবার সরবরাহ করা হচ্ছেও বলে জানানো হয় এই বিবৃতিতে।