পাকিস্তান সরকার জানিয়েছে সেদেশে সংঘটিত অসংখ্য অপরাধযজ্ঞ ও সাধারণ মানুষ হত্যাকাণ্ডে মার্কিন সমর্থিত উগ্র তাকফিরি সন্ত্রাসীগোষ্ঠী দায়েশ ও অন্যান্য সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর ভূমিকা রয়েছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এ নিউজ টিভি চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, বেলুচিস্তান প্রদেশের হাজারা শিয়া সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে টার্গেটেড হত্যাকাণ্ডসহ নিরপরাধ মানুষের বিরুদ্ধে যেসব হামলা ও হত্যাকাণ্ড চলছে তা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থিত দায়েশ বা আইএস জঙ্গিগোষ্ঠীর সহযোগিতায় সংঘটিত হচ্ছে। পাক প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানে অবস্থিত আইএস সন্ত্রাসীদের সহযোগী অন্যান্য সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো সেদেশের শিয়া সম্প্রদায়ের মানুষের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ড পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করছে।
প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সম্প্রতি বেলুচিস্তানে সন্ত্রাসীদের হামলায় ১১ জন শিয়া মুসলমান নিহত হওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো দায়েশ বা আইএস সন্ত্রাসীদের ভিন্ন রূপ। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শিয়া মুসলমানসহ দেশের অন্যান্য জনগণের উপর আইএস সন্ত্রাসীদের হামলার পরিমাণ অনেক বেড়ে গেছে।
বাস্তবতা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবসহ রাজতন্ত্র শাসিত আরো কয়েকটি আরব দেশের সমর্থন নিয়ে আইএস জঙ্গিরা প্রথমে ইরাক ও সিরিয়ার তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করে এবং সেখানে গত ১০ বছরে ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে তারা। এরপর আইএস সন্ত্রাসীরা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য এলাকায়ও তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রম জোরদার করেছে। সন্ত্রাসীরা পাকিস্তান ও আফগানিস্তানকে উপযুক্ত জায়গা বলে মনে করছে এবং গত দু’বছরে যুক্তরাষ্ট্র ও কয়েকটি আরব দেশের সহযোগিতায় এই দুই দেশে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের আইএস জঙ্গিদের প্রতি আমেরিকার সমর্থনের অন্যতম একটি উদ্দেশ্য হচ্ছে নিরাপত্তাহীনতার অজুহাতে এ অঞ্চলে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি বজায় রাখা। দায়েশ তথা আইএস জঙ্গিরা বর্তমানে সারা বিশ্বের জন্য সংকটে পরিণত হয়েছে। ইরাক ও সিরিয়ার আইএস সন্ত্রাসীদের নির্মম হত্যাকাণ্ডে প্রমাণিত হয়েছে এটি কোন ধর্মীয় সংগঠন নয়। কারণ তারা ওই দুটি দেশে শিয়া-সুন্নি এবং এমনকি ইজাদি খ্রিস্টান সম্প্রদায়কেও রেহাই দেয়নি।
যাইহোক বর্তমানে তাদের টার্গেট পাকিস্তান এবং এদেরকে নিয়ন্ত্রণে কিংবা শিয়া সম্প্রদায়ের জান-মাল রক্ষায় ব্যর্থতার কারণে সরকার ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছে। সরকার এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলে দেশটির জনগণের প্রত্যাশা।
পার্সটুডে