ভ্যাকসিন নিয়ে সংসদে প্রধানমন্ত্রী যা বললেন
Advertisements

বিদেশ থেকে করোনভাইরাসের ভ্যাকসিন সংগ্রহের পাশাপাশি দেশে উৎপাদনেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জনিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।এ লক্ষ্যে প্রযুক্তি হস্তান্তরের বিষয়ে বিভিন্ন দেশ ও উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

বুধবার (২ জুন) জাতীয় সংসদে বেগম মনিরা সুলতানের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংসদের বৈঠকে প্রশ্নোত্তর পর্ব টেবিলে উত্থাপিত হয়।

লিখিত বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার করোনা মহামারি থেকে মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে শুরু থেকেই বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। দেশব্যাপী ও অঞ্চলভিত্তিক লকডাউন কার্যকরসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পাশাপাশি দরিদ্র মানুষকে ত্রাণ সহযোগিতা প্রদানসহ জীবিকা ও অর্থনীতি বাঁচাতে সরকার বিভিন্ন প্রণোদনামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। চিকিৎসক-নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসনসহ করোনা মোকাবিলায় ফ্রন্টলাইন যোদ্ধাদের জন্য সুরক্ষা সামগ্রী প্রদান, আর্থিক প্রণোদনা প্রদান, যথাসময়ে টেস্টিং কিট আমদানি এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে ল্যাব স্থাপনসহ করোনা পরীক্ষার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করায় ভাইরাসের বিস্তার রোধে দক্ষিণ এশিয়াসহ অনেক উন্নত দেশের চেয়ে বাংলাদেশ সক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছে।

তিনি বলেন, করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে বিশ্বের যেসব দেশ টিকাদান কার্যক্রম প্রথমদিকে শুরু করতে সক্ষম হয়, বাংলাদেশ তার অন্যতম। যথাসময়ে করোনার টিকা প্রাপ্তির বিষয়ে সরকার শুরু থেকেই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। টিকা সংগ্রহে সরকার কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপসমূহ হলো- সরকার কর্তৃক ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে সংগৃহীত এবং ভারত সরকারের কাছ থেকে উপহার হিসেবে প্রাপ্ত মোট ১ কোটি ২ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন দ্বারা করোনা টিকাদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ১৮ মে পর্যন্ত দেশের চল্লিশোর্ধ্ব ও সম্মুখসারির বিভিন্ন জনগোষ্ঠীকে মোট ৯৬ লাখ ৪১ হাজার ৩১২ ডোজ টিকা প্রদান করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত থেকে টিকা সংগ্রহের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। ভারতে করোনা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ঘটায় এপ্রিলে ভারত সরকার টিকা রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। ফলে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক বিকল্প উৎস হিসেবে চীন ও রাশিয়া থেকে টিকা সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ইতোমধ্যে চীনের সিনোফার্ম থেকে টিকা ক্রয়ের বিষয়টি মন্ত্রিসভা কমিটিতে অনুমোদন করা হয়েছে। জুন, জুলাই ও আগস্ট; প্রতিমাসে ৫০ লাখ করে টিকা চীন থেকে পাওয়া যাবে। চীন সরকারের কাছ থেকে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের পাঁচ লাখ ডোজ উপহার হিসেবে পাওয়া গেছে। এসব ভ্যাকসিন প্রদানের কাজ ২৫ মে শুরু হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডবি¬উএইচও), কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটি থেকে ২০ শতাংশ জনগোষ্ঠীর জন্য ভ্যাকসিন সংগ্রহের কাজ চলছে। ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় জরুরিভিত্তিতে ২০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন সরবরাহের জন্য কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটি বরাবর পত্র পাঠিয়েছে। ফাইজারের টিকার ১ লাখ ৬২০ ডোজ আজ (২ জুন) দেশে পৌঁছাবে বলে নিশ্চিত করেছে কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটি কর্তৃপক্ষ। সরকার রাশিয়া থেকে টিকা আমদানির জন্যেও ইতোমধ্যে আনুষঙ্গিক কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। মহামারি মোকাবিলায় পর্যাপ্ত পরিমাণে ভ্যাকসিন সংগ্রহের জন্য নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে সরকার। তারই ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন দেশ ও ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নিবিড় যোগাযাগ চলছে।

Advertisements