বিয়ের জন্য আর্থিক সক্ষমতা খুবই জরুরি
Advertisements

ইসলামি সমাজ ব্যবস্থা সক্ষম নারী-পুরুষকে অবিবাহিত অবস্থায় থাকা পছন্দ করে না। এমন সক্ষম অবিবাহিতরা কুমার-কুমারী, তালাকপ্রাপ্ত, বিপত্নীক অথবা বিধবা, যাইহোক না কেন; ইসলাম তাদেরকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করে দিতে উৎসাহিত করে। ইসলাম বিয়ে করে দেশে বৌ বা স্বামীকে রেখে চার মাসের বেশি বিদেশে অবস্থান করাকেও পছন্দ করে না। ইসলাম বিবাহ ও ডিভোর্স উভয়কেই সহজ করে। এখানে বিবাহ পূণ্যের কাজ, তবে বিবাহবিচ্ছেদেও কোন পাপ নাই। ছেলেমেয়ে শারীরিকভাবে সক্ষম হলেই অভিভাবকদের বলে তাদের বিয়ে দিয়ে দিতে। স্বামী বা স্ত্রী মারা গেলে বা তালাকপ্রাপ্ত হলে পুনরায় বিয়ে দোষের কিছু তো নয়ই, বরং নিয়তের শুদ্ধতার জন্য পূণ্য বয়ে আনে। পুরুষদের জন্য প্রয়োজনে একাধিক বিয়েও দোষের নয়।

কিন্তু বর্তমানে একদিকে খৃস্ট ও হিন্দু ধর্মের প্রভাব, অন্যদিকে আধুনিকতার নামে বিয়ে খুবই কঠিন হয়েছে, এমন কি কুমার-কুমারীদের জন্যও। প্রতিষ্ঠিত হওয়া ও উচ্চশিক্ষার নামে এখন বিয়ে হচ্ছে বিয়ের বয়স পার হওয়ার অনেক পর। অন্যদিকে, কিশোর-কিশোরীদের তাত্ত্বিকভাবে যৌন শিক্ষা দেয়া হয়, সাথে কন্ট্রাসেপটিভের ব্যবহার শিখানো হচ্ছে। বলা হচ্ছে, উভয়ের সম্মতিতে যৌনমিলন দোষের নয়। পরোক্ষভাবে তাদেরকে অবাধ যৌন-আচরণ শিক্ষা দেয়া হচ্ছে একদিকে, অন্যদিকে বলা হচ্ছে নিরাপদ যৌনমিলনে কোন সমস্যা নাই, কিন্তু বিয়ে করতে হলে আগে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে বা প্রতিষ্ঠিত হতে হবে।

সমস্যা হলো, প্রতিষ্ঠিত হওয়ার শেষ নাই, বয়সও নাই। কিন্তু বিয়ের বয়স আছে, এবং ১৬-৩০ বছর হলো মানুষের জীবনের যৌবনকে ভোগ করার সর্বশ্রেষ্ঠ সময়। যে সমাজ ব্যবস্থায় যৌনতা অবাধ, সেখানে জনগণের উপর এমন শিক্ষার মারাত্মক মানসিক বিপর্যয় সৃষ্টি করে না। কারণ অল্প বয়েসে বিয়ে না করতে পারলেও, তাদের অবদমিত যৌনতার চাপ বহন করতে হয় না, এবং বিবাহ বহির্ভূত যৌনমিলনের ফলে নৈতিকস্খলনের মানসিক যন্ত্রণাও বহন করে বেড়াতে হয় না।

কিন্তু মুসলিম সমাজে এমন শিক্ষার পরিণতি ভয়াবহ। একদিকে, সমাজে যৌনতা অবাধ না হওয়ায় এরা অবদমিত যৌনতা নিয়ে উচ্চশিক্ষা বা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পিছনে ছুটে। নৈতিক কারণে মূল যৌবন বয়সে যৌন মিলনের অভিজ্ঞতা থেকে বঞ্চিত থেকে যায়। কিন্তু যখন ৩০- ৩৫ বছর বয়স হয়ে যায়, তখন এতদিনকার অবদমিত যৌনতার ফলে বিকৃত মানসিকতার প্রভাবে, এবং অকারণে যৌবন হারানোর বেদনায় একেকজন ভিতরে ভিতরে ভয়ঙ্কর মানসিক রোগি হয়ে উঠে।

মুসলিম সমাজে পশ্চিমের রীতিনীতি অন্ধ-অনুকরণের দরুন ভয়াবহ ফল নিয়ে বেড়ে উঠছে মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত এক মুসলিম সমাজ।

লেখকঃ আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট

Advertisements